মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনাকে উপেক্ষা করেই বামেদের সঙ্গে জোট ধরে রাখার পক্ষে এ বারে সায় দিলেন খোদ সনিয়া গাঁধীও।
ভোটের ফল প্রকাশের পর মমতা বলেছিলেন, সিপিএমের সঙ্গে জোট করে জাতীয় রাজনীতিতে ভুল করেছে কংগ্রেস। কিন্তু বাংলায় জোট ক্ষমতায় আসতে না পারলেও রাহুল গাঁধী আগেই দলের রাজ্য নেতাদের জানিয়ে দিয়েছিলেন, জোট করে কোনও ভুল হয়নি। বরং আরও আগে এই সিদ্ধান্ত নিলে ভাল ফল হত। জোট গড়ার সময় কংগ্রেস শিবিরে এমন জল্পনা ছিল, রাহুল জোটে সায় দিলেও সনিয়ার তেমন মত ছিল না। কিন্তু আজ সেই সনিয়াই জোট ধরে রাখার পক্ষে মত দিলেন।
বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর আজ সকালে দশ জনপথে গিয়ে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেন আব্দুল মান্নান। সেখানে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ফলাফল নিয়ে সবিস্তার আলোচনা করেন কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে। ভোট হয়ে যাওয়ার পরেও যে ভাবে তৃণমূলের সন্ত্রাস চলছে, তার বিবরণও দেন তিনি। জোটবদ্ধ ভাবে না থাকলে এখন অস্তিত্বের সঙ্কট হতে চলেছে, সেটিও জানান সনিয়াকে। মান্নানের দাবি, কংগ্রেস সভানেত্রী জোট রাখার বিষয়টি প্রদেশ নেতৃত্বের উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন। জোট যে রাখতে হবে, সে বিষয়ে তাঁরও কোনও দ্বিমত নেই। সিপিএমকে ছেড়ে মমতার সঙ্গে ভবিষ্যতে জোট গড়ার কোনও কথাও তিনি বলেননি।
সনিয়াকে তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলের সঙ্গে জোট হলে বরং ভোটের পর বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিয়ে যেতেন মমতা। কংগ্রেসকে শেষ করাই তাঁর লক্ষ্য। নির্বাচন কমিশন যে পুলিশ অফিসারদের সরিয়ে দিয়েছিল, তাঁদের আবার ফেরত নিয়ে আসা হয়েছে। এখন তাঁরাই বদলা নিচ্ছেন। ভোট একটি ভয়ের পরিবেশে হয়েছে। তা ছাড়া তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যেও একটি সমঝোতা হয়েছে। যে কারণে খড়্গপুরে জ্ঞানসিংহ সোহনপাল হেরেছেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও ঠিক একই কথা রাহুল গাঁধীকে জানিয়ে এসেছিলেন।
বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর দেখা হলেও এখনও পর্যন্ত মমতার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি মান্নানের। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী দলনেতা হিসেবে তাঁর ভূমিকা নিয়ে সনিয়ার পরামর্শ চান মান্নান। সনিয়া তাঁকে বলেন, ‘‘সংসদ ও বিধানসভা গণতন্ত্রের মন্দির। কোনও ভাবে যেন এর মর্যাদাহানি না হয়।’’ তবে বিরোধী দলনেতা বাছাই হয়ে গেলেও উপনেতা, চিফ হুইপ, সচিব ও কোষাধ্যক্ষ কে হবেন, তার মীমাংসা হয়নি। সনিয়া সেটি প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরীর সঙ্গে বসেই স্থির করে নিতে বলেন। কিন্তু দলের মধ্যে কোন্দলের কথা মাথায় রেখে ৪৪ জনের মধ্যে বাছাইয়ের কাজটি এআইসিসি-কেই করতে বলেন তিনি। দলের ভারপ্রাপ্ত নেতা সি পি যোশীর সঙ্গে আলোচনার আশ্বাস দেন সনিয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy