Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
OBC

ওবিসি সংরক্ষণের অর্ধেক সুবিধাই ভোগ করে ৪০টি সম্প্রদায়, অনেকে সুযোগই পান না, দাবি রিপোর্টে

বিপুল সংখ্যক স্বতন্ত্র গোষ্ঠী-সম্প্রদায়ের মধ্যে মাত্র ১০টি গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ই মোট সংরক্ষণের ২৫ শতাংশ সুবিধা পায়। এর পর ৩৮টি গোষ্ঠী সুবিধা পায় আরও ২৫ শতাংশ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০২০ ১৬:১২
Share: Save:

আদার ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস বা ওবিসি-দের জন্য চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে রয়েছে ২৭ শতাংশ সংরক্ষণ। সারা দেশে এই সংরক্ষণের আওতায় পড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার সম্প্রদায়। কিন্তু সম্প্রতি সরকারের গঠিত একটি কমিশনের পাওয়া তথ্যে উঠে এসেছে, মোট ওবিসি সংরক্ষণের ৫০ শতাংশই ভোগ করে মাত্র ৪০টি সম্প্রদায়ের মানুষ। যা মোট নথিভুক্ত সম্প্রদায়ের ১ শতাংশেরও কম। ২০ শতাংশ সম্প্রদায় সংরক্ষণের কোনও সুযোগই পান না। বহু সম্প্রদায় খুব সামান্য সুবিধা নিতে পারেন। ওই কমিশন এখনও রিপোর্ট পেশ করেনি। ফলে সুপারিশও এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে কমিশনের সদস্যদের সূত্রে খবর, সমতা আনতে ওবিসি-দের মধ্যে সাব ক্যাটেগরি বা উপ-বিভাগ তৈরি করে সংরক্ষণের সুপারিশ করতে পারেন তাঁরা।

ওবিসি-দের সংরক্ষণ থাকলেও অনেকে নানা জটিলতায় তার সুযোগ নিতে পারেন না বলে সংশ্লিষ্ট নানা মহল থেকে অভিযোগ ছিলই। আবার কোনও কোনও সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতিও স্পষ্ট নয়। এই সব সমস্যার কারণে ওবিসিদের মধ্যে সাব ক্যাটেগরি বা উপ বিভাগ তৈরি করে সংরক্ষণের নির্দিষ্ট গাইডলাইন তৈরির প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য হয়ে ওঠে। সেই ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতেই ২০১৭ সালের অক্টোবরে একটি কমিশন গঠন করে কেন্দ্র। নেতৃত্বে রয়েছেন দিল্লি হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জি রোহিনী। ১২ সপ্তাহের মধ্যে কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তথ্য সংগ্রহ ও রিপোর্ট তৈরি সম্পূর্ণ না হওয়ায় কমিটির মেয়াদ বেড়েই চলেছে। গত ২৪ জুন ফের ৬ মাসের মেয়াদ বৃদ্ধি হয়েছে। তবে কমিশনের সদস্যদের সূত্রে খবর, শীঘ্রই তাঁরা পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করবেন এবং তাঁদের সুপারিশ জানাবেন সরকারকে।

২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ওবিসিদের সংরক্ষণ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে ওই প্যানেল। পরে ২০১৮ সালের তথ্যও তাতে যুক্ত হয়। একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সেই রিপোর্ট হাতে পেয়েছে বলে দাবি করে জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে আইআইটি-তে প্রায় ১৩ হাজার, আইআইএম-এ প্রায় ৩ হাজার এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০ হাজারেরও বেশি ওবিসি সম্প্রদায়ের পড়ুয়া কোটা বা সংরক্ষণের সুবিধা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। কেন্দ্রীয় ওবিসি তালিকায় রয়েছে মোট ২৬৩৩টি সম্প্রদায় বা গোষ্ঠী। এই গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের মধ্যে আবার অনেক উপ-গোষ্ঠী বা উপ সম্প্রদায় রয়েছে। সেগুলি আলাদা করলে সেই সংখ্যাটা দাঁড়ায় ৫ হাজার থেকে ৬ হাজারের মধ্যে।

আরও পড়ুন: ‘কোণঠাসা’ পায়লট দিল্লিতে, রাজস্থান নিয়ে দুশ্চিন্তায় কংগ্রেস হাইকম্যান্ড

তথ্য বিশ্লেষণ করে কমিটি দেখেছে, এই বিপুল সংখ্যক স্বতন্ত্র গোষ্ঠী-সম্প্রদায়ের মধ্যে মাত্র ১০টি গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ই মোট সংরক্ষণের ২৫ শতাংশ সুবিধা পায়। এর পর ৩৮টি গোষ্ঠী সুবিধা পায় আরও ২৫ শতাংশ। কমিশনের বিশ্লেষণে আরও দাবি, ৯৮৩টি স্বতন্ত্র গোষ্ঠী (মোট ওবিসি সম্প্রদায়ের প্রায় ২০ শতাংশ) সংরক্ষণের কোনও সুবিধাই নিতে পারে না। ২.৬৮ শতাংশ সংরক্ষণের সুবিধা পান ৯৯৪টি গোষ্ঠী বা সম্প্রদায়ের মানুষজন।

অর্থাৎ ওবিসি সম্প্রদায়ের জন্য চাকরি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে যে ২৭ শতাংশ সংরক্ষণের বন্দোবস্ত রয়েছে, তার মধ্যেও যে অসাম্য রয়েছে, তা এই কমিশনের বিশ্লেষণেও কার্যত স্পষ্ট। তাই বিচারপতি রোহিনী কমিশনও সেই সাম্য দূর করতে ওবিসির মধ্যেই উপ-বিভাগ তৈরির সুপারিশ করবে বলে জানা গিয়েছে।

আরও পডু়ন: এ বার করোনা পজিটিভ ঐশ্বর্যা এবং আরাধ্যাও

কমিশনের সদস্য জে কে বাজাজ জাতীয় ওই সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘ওবিসি-দের সংরক্ষণে যে অসাম্য রয়েছে, তাতে উপ-বিভাগ তৈরি করাটা জরুরি ও অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।’’ যাঁরা সংরক্ষণের খুব কম সুযোগ পান বা কিছুই নিতে পারেন না, তাঁদের জন্য আলাদা করে ব্যবস্থা করা দরকার বলেও মনে করেন তিনি। তবে কোন পদ্ধতিতে উপ-বিভাগ তৈরির সুপারিশ করা হবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে চাননি জে কে বাজাজ। অন্য দিকে কমিশনের প্রধান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জি রোহিনী বলেন, এখনও বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখে এবং একাধিক বিকল্প নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে তার পর সুপারিশ তৈরি করা হবে।

মণ্ডল কমিশনের সুপারিশে প্রথমে ১৯৯২ সালে সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে ওবিসি-দের জন্য ২৭ শতাংশ সংরক্ষণ চালু হয়। তার পর ২০০৬ সালে শিক্ষাক্ষেত্রেও একই ভাবে সংরক্ষণ চালু করে কেন্দ্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

OBC Reservation Quota
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE