পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর থেকে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপড়েন ক্রমশ বাড়ছে। আতঙ্কে কাশ্মীর উপত্যকা। দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ না বাধে, এই আশঙ্কায় খাবার, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, জ্বালানি মজুত করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
বছরের এই সময়টা, এপ্রিল-মে মাস কাশ্মীরের পর্যটন মরসুম। আগাম বুকিং না-করলে এ সময়ে হোটেলে ঘর পাওয়া যায় না, ডাল লেকের চারপাশে ভিড়, হইচই লেগে থাকে। কিন্তু ২২ এপ্রিলের পর সব বদলে গিয়েছে। পর্যটক আসা একেবারে কমে গিয়েছে। রাস্তাঘাট ফাঁকা। যাঁরা ভিন্ রাজ্য থেকে বেড়াতে এসেছিলেন, তাঁদের কথায়, ‘‘কাশ্মীর সত্যিই খুব সুন্দর। কিন্তু নিরাপত্তা আগে।’’ তাই ফিরে গিয়েছেন তাঁরা।
গুলমার্গের একটি হোটেলের ম্যানেজার ইমতিয়াজ় আহমেদ বলেন, ‘‘মে মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত পরপর সব বুকিং ছিল। সব বাতিল হয়ে গিয়েছে। মরা বাজার। কোনও ব্যবসা নেই। রাস্তাঘাট দেখলেই বোঝা যাবে।’’ শ্রীনগরের লালচকে দোকানপাট খোলাই রয়েছে। কিন্তু বিক্রেতা নেই। লোকমুখে ছড়িয়েছে, যে কোনও সময় নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধ লাগতে পারে। রেসিডেন্সি রোডের এক দোকান মালিক আব্দুল রশিদ বলেন, ‘‘এ বার কী হবে আমরা জানি না। ফলে একটা চাপা উত্তেজনা আছেই।’’ তিনি আরও জানান, ভয়ে দোকানপাট তাড়াতাড়ি বন্ধ করে দিচ্ছেন সবাই। একমাত্র মুদির দোকানগুলোতে চাল-গম কেনার ভিড়। আর ভিড় পেট্রল পাম্পগুলোতে। রান্নার গ্যাসও মজুত করছেন অনেকে। এমনই এক জন বারামুলার বাসিন্দা গুলাম রসুল। বললেন, ‘‘যখনই ভারত-পাকিস্তান লড়াই শুরু হয়, সবচেয়ে বেশি ভুগতে হয় কাশ্মীরিদের। আমি ২৫ কেজি চাল কিনেছি।’’ শওকত আহমেদ নামে এক মুদির দোকানি বলেন, ‘‘অতীত থেকেই শিক্ষা পাওয়া।’’
জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্তা জানালেন, উপরতলা থেকে নির্দেশ, বাজারের দিকে নজর রাখা। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহ যাতে স্বাভাবিক থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)