জোট গড়ার পর চেন্নাইয়ে এডিএমকে ও পিএমকে নেতৃত্ব। ছবি: পিটিআই।
প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঠিক হয়নি এখনও। আসন নিয়েও পৌঁছনো যায়নি সমঝোতায়। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেও, এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি বিজেপি বিরোধী জোট। তাদের এই দোলাচলের মধ্যে তামিলনাড়ুতে নিজেদের আখের গুছিয়ে নিল বিজেপি। আসন্ন নির্বাচনে এডিএমকে-র সঙ্গে জোট গড়ার কথা ঘোষণা হয়েছিল আগেই। এ বার পাশে পাওয়া গেল স্থানীয় পাত্তালি মাক্কাল কাচ্চি (পিএমকে)দলকেও। সম্মিলিতভাবে রাজ্যের ৩৯টি লোকসভা আসনে লড়বে তারা। এখনও পর্যন্ত বিজেপি-এডিএমকে-পিএমকে জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। মঙ্গলবার বিকেলে সেখানে পৌঁছনোর কথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়ালের। তার পরই ঘোষণা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে খবর।
১৯৮৯ সালে পিএমকে-র প্রতিষ্ঠা করেন এস রামদাস। শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির অন্তর্গত বানিয়ার সম্প্রদায়ের সংরক্ষণের দাবিতে সেই সময় আন্দোলনে নেমেছিলেন তিনি। যার জেরে তামিলনাড়ুতে বানিয়ার সম্প্রদায়ের জন্য ২০ শতাংশ সংরক্ষণ চালু হয়েছে। এই আন্দোলনই উত্তর তামিলনাড়ু, বিশেষ করে বানিয়ারদের মধ্যে পিএমকে-র জনপ্রিয়তা বাড়িয়েছে। ১৯৯৯ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত তামিলনাড়ুর মোট ভোটের ৫-১০ শতাংশ ঢোকে তাদের ঝুলিতে। ২০১৪ সালে এ হেন পিএমকে-কে সঙ্গে নিয়েই ভোটযুদ্ধে নেমেছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। তাতে সাফল্যও এসেছিল। ধর্মপুরী লোকসভা কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হন এস রামদাস পুত্র তথা পিএমকে-র যুব শাখার সভাপতি অম্বুমানি রামদাস। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় জায়গা দেওয়া হয়নি তাঁকে। সেই নিয়ে দুই দলের মধ্যে মন কষাকষি চলছিল।
বিজেপি এবং পিএমকে-র মধ্যে এই মন কষাকষির সুযোগ নিয়ে মাঠে নেমে পড়ে কংগ্রেস এবং ডিএমকে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে সময় থাকতে থাকতে তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে। কিন্তু আসন সংখ্যা নিয়ে কোনও সমঝোতায় পৌঁছতে পারেনি তারা। তাই শেষমেশ এনডিএ শিবিরের সঙ্গেই হাত মেলায় পিএমকে। আসন্ন নির্বাচনে তাদের ৭টি আসন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তামিলনাড়ুর উপ মুখ্যমন্ত্রী পনিরসেলভম। ৬টি লোকসভা আসন ও ১টি রাজ্যসভা আসন। তাতে আপত্তি করেনি পিএমকে। যার পর মঙ্গলবার সকালে চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি হোটেলে হাজির হন পিএমকে প্রতিষ্ঠাতা এস রামদাস, সাংসদ অনবুমনি রামদাস, দলের প্রবীণ নেতা জিকে মনি, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ই পালানিস্বামী এবং তাঁর ডেপুটি ও পনিরসেলভম। তাঁদের উপস্থিতিতে জোটে সিলমোহর পড়ে। জোটের সন্ধিক্ষণে চেন্নাইয়ের ওই হোটেলে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিজেপি সভাপতি অমিত শাহেরও। আসন নিয়ে দরাদরিতে নিজের মতামত জানাতে আগ্রহী ছিলেন তিনি। কিন্তু ফের যদি পিএমকে-র সঙ্গে বিরোধ বাধে, সেই আশঙ্কায় শেষ মুহূর্তে চেন্নাই যাওয়া বাতিল করেন তিনি। তাঁর বদলে মঙ্গলবার বিকেলে বিজেপির তরফে সেখানে হাজির হতে পারেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল।এডিএমকে এবং পিএমকে নেতৃত্বের সঙ্গে তিনি দ্বিতীয় দফার আলোচনায় বসবেন বলে দলীয় সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন: ‘ভারত আক্রমণ করতে পারে, আপনারা থামান’, রাষ্ট্রপুঞ্জে চিঠি পাক বিদেশমন্ত্রীর
আরও পড়ুন: পুলওয়ামার দায় অস্বীকার করে আলোচনার আহ্বান ইমরানের, সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনাতেও রাজি পাকিস্তান
লোকসভা নির্বাচন ছাড়াও, তামিলনাড়ুর আসন্ন উপনির্বাচনে এআইডিএমকে সমর্থন করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পিএমকে। সেই সঙ্গে এআইএডিএমকে-র এক সদস্য জানিয়েছেন, ‘‘শুরুতে ৯টি আসনের দাবি তুলেছিল পিএমকে। অনেক কষ্টে তা কমানো গিয়েছে। তবে কৃষ্ণগিরি, ধর্মপুরি, ভেলোর এবং শ্রীপেরমবুদুরের মতো গুরুত্বপূরর্ণ আসনগুলির দিকে নজর তাদের। অন্য দিকে দেশীয় ডিএমডিকে (মুরপক্কু দ্রাবিড় কাজগম) চেয়েছে ৫টি আসন। পুটিয়া তামিলাঙ্গমকে ১টি আসন দেওয়া হবে বলে স্থির হয়েছে। এনডিএ জোটের নেতৃত্বে থাকা বিজেপি তামিলনাড়ুতে ৭টি আসন পেতে পারে। তবে আলোচনা চলছে। প্রয়োজনে সংখ্যার রদবদল হতে পারে।’’
অন্যদিকে পিএমকে এনডিএ জোটে সামিল হওয়ায়, এই মুহূর্তে ডিএমকে, কংগ্রেস, সিপিআই, সিপিএম, এমডিএমকে, ভিসিকে এবং আইইউএমএল মিলে বিরোধী জোট গড়ে উঠছে তামিলনাড়ুতে। পিএমকে-র প্রতিদ্বন্দ্বী বিদুতালাই চিরুতাইগল কাতচি (ভিসিকে) হাত মেলাতে পারে কংগ্রেস-ডিএমকে জোটের সঙ্গে। ভিসিকে নেতা তিরুমাভালান আবার দলিত নেতা হিসাবে জনপ্রিয়।
(ভোটের খবর, জোটের খবর, নোটের খবর, লুটের খবর- দেশে যা ঘটছে তার সেরা বাছাই পেতে নজর রাখুন আমাদের দেশ বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy