Advertisement
E-Paper

গিয়াছে সে দিন! ‘বেকার’ এখন বাম নেতারা

 ‘সে একখানা দিন ছিল বটে’— কাচের গ্লাস ভর্তি লাল চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলছিলেন কমরেড।

প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৯

‘সে একখানা দিন ছিল বটে’— কাচের গ্লাস ভর্তি লাল চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলছিলেন কমরেড।

এ কে গোপালন ভবনের ঘরে ঘরে ট্রে-তে করে লাল চা ঘুরছে। পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ জমেছিল ভাল। সালটা ২০০৪। দিল্লিতে ইউপিএ-সরকার ক্ষমতায় এসেছে। বাইরে থেকে বামেদের সমর্থন। তৈরি হচ্ছে ‘কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম’ বা অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি। কমিউনিস্ট নেতারা তার খসড়া বানাচ্ছেন। হরকিষেণ সিংহ সুরজিৎ, এ বি বর্ধনদের সঙ্গে ঘনঘন বৈঠক হচ্ছে প্রণব মুখোপাধ্যায়, পি চিদম্বরমদের। কাগজ-কলম নিয়ে বসে পড়ছেন সীতারাম ইয়েচুরি, ডি রাজা, প্রকাশ কারাটরা।

১৫ বছর পরে আরও একটি লোকসভা ভোট। কিন্তু বাম নেতাদের হাতে বিশেষ কাজ নেই। বিরোধী জোট দানা বাঁধছে না। তাই বিরোধী জোটের কর্মসূচি তৈরির জন্য সিপিএমের তাত্ত্বিক নেতাদের ডাকও পড়ছে না। পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে হলেও মেধার পুঁজি বা ‘ইন্টেলেকচুয়াল ক্যাপিটাল’ তাঁদের জিম্মায় বলে বাম নেতাদের বড় গর্ব। কিন্তু সে ‘পুঁজি’-র সুফল বিলি করার সুযোগই নেই।

এমন নিন্দে শুনে চটে যান সিপিএম নেতা। তাঁর আস্ফালন, আমরা ভোটের আগে কোনও রকম জোটেরই বিরুদ্ধে। এমনকি রাহুল গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, শরদ পওয়াররা বিরোধী জোট গড়ে ‘কমন মিনিমাম প্রোগ্রাম’ বা অভিন্ন কর্মসূচির কথা বললেও সিপিএম নেতারা তাঁর বিরুদ্ধে ছিলেন।

সংসদের অ্যানেক্স ভবনে বিরোধীদের বৈঠকে ইয়েচুরি বুঝিয়েছিলেন, ভোটের আগে রাজ্যে রাজ্যে যেমন জোট হচ্ছে, হোক।

জাতীয় স্তরে বিরোধীদের জোট গড়ে লাভ নেই। তা হলে যাঁরা জোটে আসবেন না, তাঁরা ভোটের পরে দুই শিবিরের সঙ্গেই দর কষাকষি করতে পারবেন। যেমন, নবীন পট্টনায়কের বিজু জনতা দল। কে চন্দ্রশেখর রাও-এর তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি বা জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস। এঁরা এখন এনডিএ শিবিরের কাছে যাচ্ছেন না। আবার কংগ্রেস ও অন্য আঞ্চলিক দলগুলির জোটের ধারেকাছেও ঘেঁষছেন না। ভোটের পরে এনডিএ বা কংগ্রেস, কেউই ‘ম্যাজিক নম্বর’-এ পৌঁছতে না পারলে, দুই শিবিরের কাছেই তাঁদের ‘দর’ বেড়ে যাবে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

যুক্তফ্রন্ট থেকে ইউপিএ— নানা জোটের অভিজ্ঞতা পকেটে পুরে সিপিএম নেতারা বলছেন, ভোটের পরেই জোট হবে। বিরোধী জোটের সরকার এলে, তখনই অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি তৈরি হবে। যেমনটা হয়েছিল ২০০৪-এ।

কিন্তু ভোটের পরে বাম নেতাদের ‘দর’ কেমন উঠবে? এ কে গোপালন ভবন জানে, বাজারদর নির্ভর করে কত জন সাংসদ জিতে আসছেন, তার উপরে। বিজেপির হাতে থাকা ত্রিপুরায় এ বার আশা কম। বাংলায় টেনেটুনে খান দুয়েক। আর বাকি ভরসা কেরল। কিন্তু সেখানেও এ বার আসন কমার আশঙ্কা। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু থেকে একজন করে জিতিয়ে আনতে পারলেই অনেক।

লাল চায়ের গ্লাসে তাই সংশয়ও ভেসে ওঠে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পর সত্যিই বিরোধী জোট সরকারের কর্মসূচি তৈরি করতে হলে, তার খসড়া তৈরিতে মেধা-তত্ত্বের ঝুলি নিয়ে বসে থাকা কমিউনিস্ট নেতাদের ডাক পড়বে তো!

CPM Communist Part of India CPIM Politics Lok Sabha Election 2019
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy