Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ট্রেন্ডিং হতে তরজাই বড় ভরসা টুইটারে

ডিজিটাল বিপণন বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, টুইটারে একসঙ্গে অনেকজন একই বিষয়ে টুইট বা রিটুইট (শেয়ার) করলে তা ট্রেন্ডিং তালিকায় উপরের দিতে উঠতে থাকে। যাঁরা টুইট করছেন, তাঁদের ফলোয়ারের সংখ্যা যত বেশি, সেই বিষয়টি তত বেশি সংখ্যক লোকের কাছে পৌঁছতে  থাকে।

সুজিষ্ণু মাহাতো
শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:৪২
Share: Save:

কত টুইট মিললে তবে ট্রেন্ডিং হওয়া যায়...

ভোটের বাজারে যেন এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে সব পক্ষ। কারণ, সবারই লক্ষ্য ট্রেন্ডিং হওয়া। কারণ, তা হলেই নজর কাড়া যাবে নেট-দুনিয়ায়। তবে ট্রেন্ডিং হওয়ার জন্য কত সংখ্যক টুইট লাগে তা নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন ডিজিটাল বিপণন বিশেষজ্ঞরা। তার কারণ, তা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম হয়। তবে যে কোনও সময়েই কোনও তর্ক বা তরজা কোনও বিষয়কে ট্রেন্ডিং করে তুলতে সাহায্য করে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।

ডিজিটাল বিপণন বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, টুইটারে একসঙ্গে অনেকজন একই বিষয়ে টুইট বা রিটুইট (শেয়ার) করলে তা ট্রেন্ডিং তালিকায় উপরের দিতে উঠতে থাকে। যাঁরা টুইট করছেন, তাঁদের ফলোয়ারের সংখ্যা যত বেশি, সেই বিষয়টি তত বেশি সংখ্যক লোকের কাছে পৌঁছতে থাকে। ততই তার ট্রেন্ডিং হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে।

কোন বিষয়টি সবচেয়ে উপরে থাকবে তা অবশ্য নির্ভর করে একই সময়ে অন্য বিষয়গুলি নিয়ে কতজন কথা বলছেন তার উপরে। যেমন, একটি বিষয়ে ৪০০০ টুইট হলেও তা ট্রেন্ডিং তালিকায় চলে আসতে পারে যদি সেই সময় বাকি বিষয়ে তার থেকে কম সংখ্যক টুইট হয়। অন্য সময়ে হয়তো তা নাও হতে পারে।

তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় জনগণকে টুইট করতে ‘প্রলুব্ধ’ করতে সাহায্য করে তরজা। মুম্বইয়ের একটি বিপণন সংস্থার কর্ণধার দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, ‘‘গতবারের আমেরিকার ভোট বা ভারতের ভোট, দেখা যাচ্ছে অন্য পক্ষের সমালোচনা করাটাই সোশ্যাল মিডিয়ার পছন্দ। তাই সেই ধরনের হ্যাশট্যাগ তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তর্ক তৈরি করে রাজনৈতিক দল বা তাদের সহযোগী বিপণন সংস্থাগুলো।’’

এই তর্ক তৈরিরই ছবি দেখা যাচ্ছে হালের টুইট-যুদ্ধে। ভোটের আগে একপক্ষ কোনও একটি হ্যাশট্যাগ তৈরি করে টুইট করতে শুরু করলেই অন্য পক্ষ পাল্টা হ্যাশট্যাগ তৈরি করে তাকে আক্রমণ করছে। বৃহস্পতিবারই কংগ্রেস সমর্থকদের টুইট-স্রোতে #রাহুলগাঁধীওয়েনাড ট্রেন্ডিং হতে শুরু করতেই বিজেপি সমর্থকেরা আসরে নামেন #অ্যান্টিমিডলক্লাসকংগ্রেস নিয়ে। টুইটের এমন তরজা যাচ্ছে রোজই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের শিক্ষক পার্থপ্রতিম বসুর মতে, এই রাজনৈতিক তরজার সংস্কৃতি সোশ্যাল মিডিয়ার যুগেই সৃষ্টি হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘এখন কেউ তথ্য-পরিসংখ্যান নিয়ে সমালোচনা করার সময় দিতে চান না। তার থেকে ব্যঙ্গ করা, আক্রমণ করাটা অনেক সহজ বলে বেশির ভাগই সেটাই করছেন।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

গাঁটের কড়ি খরচ করেও অবশ্য টুইটারে ট্রেন্ডিং তালিকায় আসা যায় অন্য সোশ্যাল মিডিয়ার মতোই। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ প্রিয়া গুপ্তে জানাচ্ছেন, নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্দিষ্ট জনগণের কাছে পৌঁছনো যায়। একে বলে প্রোমোটেড কনটেন্ট। নতুন পণ্য বাজারে আনার সময় এই কৌশল নেয় নানা ব্র্যান্ড।

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য জানাচ্ছেন, ট্রেন্ডিং তালিকায় সেক্ষেত্রে ‘প্রোমোটেড’ শব্দের উল্লেখ থাকে বলে রাজনৈতিক দলগুলি এই কৌশল তেমন নেয় না। বরং তাদের নেতা বা কর্মীরাই টুইট করে কোনও বিষয়কে ট্রেন্ডিং করে তোলেন, যাতে আমজনতার কাছে মনে হয় এই তর্ক ‘স্বাভাবিক’। তবে আসলে সেই তর্কও ‘নির্মিত’। আমজনতাকে নিজেদের বিষয়ে, নিজেদের দলে তরজায় টানতেই এই কৌশল নেয় দলগুলি।

সোশ্যাল মিডিয়ার তৈরি করা তর্ক অনেকক্ষেত্রেই ‘নির্মিত’ বা ‘কৃত্রিম’ হলেও সে জন্য রাজনৈতিক দলগুলিকে দুষতে রাজি নন ইন্টারনেটে ভুয়ো খবর ধরার বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক প্রতীক সিন্‌হা। তাঁর কথায়, ‘‘টুইটারের মধ্যেই যদি এই ফাঁক থাকে তা হলে

তো তাকে রাজনৈতিক দলগুলি ব্যবহার করবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Trendy Conflict Twitter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE