Advertisement
E-Paper

সম্ভাবনাই নেই, কেসিআর-এর তৃতীয় ফ্রন্টের জল্পনায় জল ঢাললেন স্ট্যালিন

সাংবাদিকদের স্ট্যালিন বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না, এই ধরনের (তৃতীয় ফ্রন্ট) কোনও সম্ভাবনা আছে। তবে, ২৩ মে ভোটের ফল ঘোষণার পরই এই সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৯ ১৪:৪৪
বৈঠকের আগে কে চন্দ্রশেখর রাও এবং এম কে স্ট্যালিন। ছবি: পিটিআই

বৈঠকের আগে কে চন্দ্রশেখর রাও এবং এম কে স্ট্যালিন। ছবি: পিটিআই

কলকাতায় এসে কার্যত কল্কে পাননি। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টায় মায়াবতী থেকে অখিলেশ, ওমর আবদুল্লা কিংবা তেজস্বী যাদব, কেউই তেমন গুরুত্ব দেননি। শেষ পর্যন্ত দক্ষিণী আবেগে ভর করে নতুন করে পালে হাওয়া লাগাতে গিয়েও কার্যত হতাশই হলেন কেসিআর। অবিজেপি-অকংগ্রেস আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে তৃতীয় ফ্রন্টের সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিলেন এম কে স্ট্যালিন। ‘তৃতীয় ফ্রন্টের কোনও সম্ভাবনাই দেখছি না’— কেসিআর-এর সঙ্গে বৈঠকের পর জানিয়ে দিলেন ডিএমকে সুপ্রিমো। কেসিআর-এর সঙ্গে বৈঠক নেহাতই সৌজন্যমূলক বলেও কার্যত ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছেন স্ট্যালিন।

ভোটের আগে তাঁর তৃতীয় ফ্রন্টের আহ্বানে তেমন কারও সাড়া মেলেনি। ভোট শেষ পর্যায়ের দিকে আসতে এবং গণনার দিন এগিয়ে আসতেই ফের ময়দানে নামেন তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির (টিআরএস) প্রধান কেসিআর। তবে এ বার তার সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন দক্ষিণী ভাবাবেগ। ১৯৯৬ সালে যেমন কর্নাটকের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়া প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, সেই ইতিহাস টেনে এনে দক্ষিণী রাজ্যের দলগুলিকে এই তৃতীয় ফ্রন্টের দিকে টানার চেষ্টা করেছিলেন। কয়েক দিন আগেই কেরলের বাম মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু পিনারাই সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে কার্যত এড়িয়ে গিয়েছিলেন।

সেই দক্ষিণী সূত্রেই স্ট্যালিনের সঙ্গে বৈঠক কেসিআর-এর। সোমবার বৈঠকের পর কেসিআর বিশেষ কিছু বলেননি। মঙ্গলবার মুখ খুললেন স্ট্যালিন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তৃতীয় ফ্রন্টের সম্ভবনা তিনি দেখছেন না। এ দিন চেন্নাই বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের স্ট্যালিন বলেন, ‘‘আমার মনে হয় না, এই ধরনের (তৃতীয় ফ্রন্ট) কোনও সম্ভাবনা আছে। তবে, ২৩ মে ভোটের ফল ঘোষণার পরই এই সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’

এ বারও তামিলনাড়ুতে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট এবং আসন ভাগাভাগি করে ভোটে লড়ছে ইউপিএ জোটের শরিক ডিএমকে। সম্ভবত স্ট্যালিনই ইউপিএ জোটের একমাত্র নেতা, যিনি খোলাখুলি ঘোষণা করেছেন, রাহুল গাঁধীই প্রধানমন্ত্রী হবেন। একাধিক বার রাহুলের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন তিনি। এ দিন সেই বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে স্ট্যালিন বলেছেন, ‘‘আমাদের দলের নেতারাও মনে করেন রাহুল গাঁধীরই প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত।’’ কেসিআর-এর প্রস্তাবে সাড়া দেওয়ার বদলে বরং তাঁকেই ইউপিএ-তে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বলেও এ দিন জানিয়েছেন স্ট্যালিন।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর ছবি বিকৃত করে পোস্ট, বিজেপি নেত্রীকে ক্ষমা চাইতে বলে জামিন দিল সুপ্রিম কোর্ট

আরও পডু়ন: ঘাটালের ভোট মিটতেই ভারতীকে ভবানী ভবনে ডেকে সিআইডি জেরা

এর আগেও স্ট্যালিন-কেসিআর বৈঠক নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। স্ট্যালিনের অনুমতি না নিয়েই বৈঠকের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেন কেসিআর। স্ট্যালিনও প্রকাশ্যেই সেই কথা জানিয়ে দেন। তা হলে সোমবার কী ভাবে বৈঠক হল? ডিএমকে সুপ্রিমো এটাকে বৈঠক বলতেই নারাজ। তার মতে এটা সৌজন্য সাক্ষাৎকার, যেখানে রাজনীতির আলোচনাই হয়নি। তিনি বলেছেন, ‘‘উনি (কেসিআর)তামিলনাড়ুতে একাধিক মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলেন। তার ফাঁকেই আমার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলেন। সেটাই হয়েছে। এটা নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎকার। এর বেশি কিছু নয়।’’

দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধী ইউনাইটেড ফ্রন্ট গঠনের তোড়জোড় চললেও টিআরএস সুপ্রিমো কেসিআর তাতে শামিল হননি। উল্টে তিনি কংগ্রেস এবং বিজেপিকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু ভোটের আগে কার্যত হালে পানি পাননি। কলকাতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করলেও মমতা তাঁকে কোনও আশ্বাস দেননি। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর সঙ্গে বৈঠক করলেও এ বার কংগ্রেস-জেডিইউ জোট করে ভোটে লড়ছে। প্রতিবেশী তথা এক সময় একসঙ্গে থাকা অন্ধ্রপ্রদেশের বিরোধী দল ওয়াইএসআর কংগ্রেসের নেতা জগনমোহন রেড্ডি তাঁর সঙ্গে রয়েছেন বলে কেসিআর দাবি করলেও জগনমোহন সে কথা কখনও স্বীকার করেননি। শেষ অস্ত্র হিসেবে দক্ষিণী ভাবাবেগ উস্কে দেন কেসিআর। কিন্তু তাতেও তৃতীয় ফ্রন্ট তথা কেসিআর-কে আশ্বাস দেয়নি তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনও দল।

কেন? রাজনৈতিক শিবিরের পর্যবেক্ষণ, কেসিআর-এর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই সন্দিহান অধিকাংশ রাজনৈতিক দল। বিশেষত তলে তলে তিনি মোদী ঘনিষ্ঠ বলেও অনেকে মনে করেন। এমনকি, ভোটপর্বের আগে যখন তৃতীয় ফ্রন্টের প্রস্তাব নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন, তার পরের দিনই দিল্লিতে গিয়ে মোদীকে উপহার দিয়েছেন। সংবাদ মাধ্যমে হাসি হাসি মুখে ফোটো তুলেছেন। কয়েক মাস আগে তেলঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁতের অভিযোগ তুলেছিল কংগ্রেস এবং অন্ধ্রের শাসক দল তেলুগু দেশম পার্ট। এ হেন কেসিআর-এর প্রস্তাবে সায় দেওয়ার আগে সাবধানী সব পক্ষই। ফলে দক্ষিণী আবেগের ধুয়ো তোলার পরেও তাঁকে কার্যত কেউ পাত্তা দিচ্ছেন না বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

Lok Sabha Election 2019 KCR TRS M K Stalin Third Front
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy