ছবি: পিটিআই।
ঠিক পনেরো বছর আগের কথা। ভোট শেষ। ফলের অপেক্ষা। চার দিকে বিজেপির ঢালাও প্রচার— ‘ভারত উদয়’, ‘ইন্ডিয়া শাইনিং’। দিকে দিকে বিজেপি নেতারা বার্তা দিচ্ছেন, আবার ফিরছে অটল বিহারী বাজপেয়ীর সরকার।
ফল প্রকাশের এক দিন আগে দশ জনপথে হঠাৎই ঢুকতে দেখা গেল শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীকে। পরের দিন ভোটের ফল বেরোতেই দেখা গেল, বিজেপি নয়, ক্ষমতায় ফিরেছে কংগ্রেসের সরকার। প্রধানমন্ত্রী হলেন মনমোহন সিংহ।
সে বার ফল প্রকাশের পরেই দিল্লির অলিন্দে একটি আলোচনা মুখে মুখে ঘুরতে লাগল। বড় শিল্পপতিরা কি আগেভাগেই হাওয়া বুঝতে পারেন? ২০০৪-এ বিজেপির ‘ভারত উদয়’ যখন প্রচারে ঢেকে দিয়েছিল সব কিছু, তখন কি মুকেশ অম্বানীর মতো শিল্পপতিরা বুঝে গিয়েছিলেন যে, সরকারে আসছে কংগ্রেস? সে কারণেই কি ফল প্রকাশের এক দিন আগে দশ জনপথে গিয়ে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি?
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ বারে চার দফার ভোট শেষ। দিল্লির অলিন্দে দেড় দশক আগের সেই আলোচনা ফিরে এসেছে। যখন ক’দিন আগে সেই মুকেশ অম্বানী খোলাখুলি সমর্থন করলেন মুম্বই দক্ষিণ কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী মিলিন্দ দেওরাকে। গতবারও মিলিন্দ প্রার্থী হয়েছিলেন, কিন্তু এ বারের মতো মুকেশ তাঁকে সমর্থন করেননি। দিল্লি থেকে মুম্বই, রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা— এ বারেও কি হাওয়া বুঝে কংগ্রেসকে সমর্থন করছেন এই শিল্পপতি?
যে আলোচনা মুখে মুখে ঘুরছে, সেটিই খোলাখুলি বলেছেন রাজ ঠাকরে। তিনি বলেন, ‘‘মুকেশ অম্বানীর মতো বড় শিল্পপতি স্পষ্ট বোঝেন, হাওয়া কোন দিকে। তিনি যখন কংগ্রেসের প্রার্থীকে সমর্থন করছেন, তার অর্থ, বিজেপি আর সরকারে আসছে না।’’ এই জল্পনায় সদ্য গত কালই ইন্ধন দিয়েছেন আরও বেশ কয়েক জন শিল্পপতি।
মুম্বইয়ে গত কালই ভোট হয়েছে। সেখানে শিল্পপতিরা ভোট দিয়ে বলেছেন, জোট সরকারেও কোনও ক্ষতি নেই। শিল্পপতি সজ্জন জিন্দল বলেন, ‘‘এর আগেও কেন্দ্রে জোট সরকার এসেছে এবং ভাল প্রশাসন চালিয়েছে। ফলে আমি চিন্তিত নই।’’ মহীন্দ্রা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান আনন্দ মহীন্দ্রা, গোদরেজ গোষ্ঠীর কর্ণধার আদি গোদরেজের মতো শিল্পপতিরও দাবি, ক্ষমতায় যারাই আসুক না কেন, সরকার যেন স্থায়ী ও মজবুত হয়। জোট সরকার হলেও সমস্যা নেই।
গত বারের মতো মোদীর পক্ষে যে হাওয়া নেই, সেটি বিজেপি নেতারাও কবুল করছেন। কিন্তু তাঁদের মতে, যদি শিল্পপতিদের সমর্থনের মাপকাঠিতেই হাওয়া-বিচার হয়, তা হলে খোদ মুম্বইয়ে নরেন্দ্র মোদীর জনসভায় মুকেশ অম্বানীর পুত্র অনন্তের উপস্থিতিকে কী বলবেন? প্রধানমন্ত্রীর জনসভার প্রথম সারিতে বসেছিলেন তিনি। আর সাফ বলেছেন, মোদীর কথা শুনতে এবং দেশকে সমর্থন করতেই তিনি সভায় গিয়েছেন। এই ঘটনাটি ঘটেছে মিলিন্দকে মুকেশের সমর্থন ঘোষণার পরে। বিজেপির এক নেতা বললেন, ‘‘সে ক্ষেত্রে তো বলতে হয়, হাওয়া ফের মোদীর পক্ষে ঘুরতে শুরু করেছে। অপেক্ষা করুন আর ২৩ দিন। ফের মোদী সরকারই হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy