Advertisement
E-Paper

নজরে ভোট, চিন সীমান্তে যাচ্ছেন মোদী

ভোটের আগে সময় অল্পই। কিন্তু সেই অল্প সময়ের মধ্যেই ঘরোয়া রাজনৈতিক আসরে জাতীয়তাবাদের আবেগ জাগিয়ে তুলতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৮

ভোটের আগে সময় অল্পই। কিন্তু সেই অল্প সময়ের মধ্যেই ঘরোয়া রাজনৈতিক আসরে জাতীয়তাবাদের আবেগ জাগিয়ে তুলতে চাইছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর অরুণাচল সফরের (৯ ফেব্রুয়ারি) ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এমনটাই জানাচ্ছে রাজনৈতিক শিবির।

ভারতের যে রাজ্যটিকে কেন্দ্র করে চিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছে, সেখানে যাওয়া কৌশলগতভাবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে জানাচ্ছেন কূটনীতিকেরা। বিশেষত আসন্ন সফরে ওই রাজ্যে সেলা গিরিপথে একটি সুড়ঙ্গের শিলান্যাস করবেন তিনি। সাউথ ব্লক সূত্রের দাবি, এই সুড়ঙ্গ বেজিং-এর পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তির। বিষয়টি নিয়ে অদূর ভবিষ্যতে চিনের সঙ্গে স্নায়ুর যুদ্ধও শুরু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে রাজনীতিকদের মতে, এখন কূটনীতির থেকে মোদীর কাছে অনেক বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে ঘরোয়া রাজনীতি। তিনি সীমান্তে দাঁড়িয়ে কিছুটা চিন-বিরোধী জাতীয়তাবাদের হাওয়া তৈরি করলে তার চিনা প্রতিক্রিয়া কী হবে তা নিয়ে আদৌ আর চিন্তিত নন মোদী। বরং মোদীর পৌঁছানোর আগে সামরিক বাহিনীর অধীনস্থ বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (বিআরও)-এর চিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল গুরপাল সিংহ বলেছেন, ‘চিন সীমান্তমুখী ৬১টি কৌশলগত সড়ক তৈরির কাজ শেষ করে ফেলা হবে ২০২২-এর মধ্যে।’ এই সীমান্ত বলতে তিনি শুধু অরুণাচলপ্রদেশই নয়, বোঝাতে চেয়েছেন সিকিম, জম্মু-কাশ্মীর ও উত্তরাখণ্ড সীমান্তের কথাও। প্রায় আড়াই হাজার কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের কাজ বাকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

যে সুড়ঙ্গটির শিলান্যাস করবেন মোদী সেটি গিয়ে পড়ছে তাওয়াং-এ। এই টানেল তৈরি হলে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দ্রুত চিন সীমান্তে পৌঁছে যাওয়া যাবে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রীয় সূত্রে জানানো হচ্ছে, চিনের সীমান্ত পরিকাঠামোর সঙ্গে পাল্লা গিয়ে ২০২৪ সালের মধ্যে কাজ শেষ করে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

বিআরও সূত্রের খবর, ‘‘সরকারের শীর্ষতম স্তর থেকে প্রকল্পগুলির উপর নজরদারি রাখা হচ্ছে। চিনের থেকে কোনওভাবেই পিছিয়ে থাকা যাবে না সীমান্ত পরিকাঠামোয়।’’

কূটনীতিকদের দাবি, নির্বাচনের আগে ঘরোয়া রাজনীতিতে বার্তা দেওয়ার দিকটি তো রয়েছেই। পাশাপাশি বেজিং-কে স্নায়ুর যুদ্ধে কিছুটা পাল্টা চাপে রাখাটাও উদ্দেশ্য মোদী সরকারের। কারণ, ডোকলাম পর্বের পরে গত এক বছরে ভারতের শান্তির প্রয়াসে সাড়া দেয়নি বেজিং। প্রতিরক্ষা সূত্রের খবর, ভারত-চিন সীমান্তের ওপারে তিব্বতে সামরিক তৎপরতা বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে চিন। রাস্তা, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি, বিমানবন্দর – সবক্ষেত্রেই চলছে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে পরিকাঠামো তৈরির কাজ। জানা গিয়েছে, ভারত-চিন সীমান্ত থেকে ৭৫০ কিলোমিটার দূরে শিনিং-এ একটি বিশাল বিমানবন্দর তৈরি করছে বেজিং। পাশাপাশি তিব্বতের লুনৎসে, টিংরি এবং পুরাং-এ বানানো হচ্ছে তিনটি ছোট বিমানবন্দর। এই তিনটি বিমানবন্দরই ভারত সীমান্তের খুব কাছে। একই সঙ্গে গোঙ্গার বিমানবন্দরের পরিকাঠামোর খোলনলচেও বদলে ফেলছে চিন, যা সম্পূর্ণ হয়ে যাবে ২০২০ সালের মধ্যেই। এটি অসামরিক প্রকল্প হলেও প্রয়োজনে এই বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবে পিপলস লিবারেশন আর্মি বা চিনা সেনা।

সব মিলিয়ে গত কয়েক বছরে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে সীমান্ত পরিকাঠামো বদলাচ্ছে বেজিং। পরিস্থিতি বুঝে সাধ্যমতো পাল্টা ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে নয়াদিল্লিও।

Narendra Modi China Border International Affairs Politics
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy