সুপ্রিম কোর্টকে উদ্ধৃত করে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ বলার জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে ‘নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা’ করলেন রাহুল গাঁধী। তবে কংগ্রেস এই স্লোগান থেকে সরছে না বলে জানিয়েছে।
কংগ্রেস সভাপতি আজ নতুন হলফনামা জমা দিয়ে জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টকে ভুল উদ্ধৃত করার জন্য তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছেন। সুপ্রিম কোর্টকে উদ্ধৃত করাটা পুরোপুরি অনিচ্ছাকৃত ও অসাবধানতাবশত।
রাফাল-চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিশানা করে রাহুল গাঁধী ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগান তুলেছিলেন। এখন সুপ্রিম কোর্টে তাঁকে ক্ষমা চাইতে হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপি উল্লসিত। বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা আজ রাহুলকে নিশানা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে চোর বলার জন্য রাহুলকে ক্ষমা চাইতে হয়েছে বলেও কটাক্ষ করেছেন।
রাফাল-চুক্তিতে প্রকাশ্যে আসা নতুন নথিতে ফাঁস হয় যে যুদ্ধবিমান কেনার জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দর কষাকষিতে প্রধানমন্ত্রীর দফতর নাক গলিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সমান্তরাল দর কষাকষিও চালাচ্ছিল। রাহুল বরাবরই এই অভিযোগ তুলছিলেন। কেন্দ্রের আপত্তি সত্ত্বেও রাফাল-চুক্তিতে তদন্তের রায় পুনর্বিবেচনা করার আর্জিতে সুপ্রিম কোর্ট এই সব নথি খতিয়ে দেখতে রাজি হয়। তার পরেই রাহুল গাঁধী বলেছিলেন, ‘‘এখন শীর্ষ আদালতও বলে দিল চৌকিদার চোর হ্যায়।’’ এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই রাহুলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন বিজেপি সাংসদ মীনাক্ষী লেখি।
রাহুল আজ নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনার পরে মীনাক্ষী ইতালীয় গল্পকার কারলো কল্লোদির কাহিনীর পিনোকিও-র সঙ্গে তুলনা করেছেন। দুষ্টু কাঠের পুতুল পিনোকিও মিথ্যে বলতে পছন্দ করত। মিথ্যে বললেই তার কাঠের নাক একটু করে লম্বা হয়ে যেত। আজ মীনাক্ষী রাহুলকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘আপনি পালাতে পারেন, কিন্তু লুকোতে পারবেন না। রাহুল গাঁধী অবশেষে তাঁর দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। বিচার সবাইকে সমান করে দেয়। পিনোকিও-র গল্পও মনে রাখা উচিত।’’
রাহুল গাঁধী তথা কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য স্পষ্ট করে দিচ্ছেন, কংগ্রেস সভাপতি ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগান থেকে সরছেন না। সুপ্রিম কোর্টকে উদ্ধৃত করে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ বলে ভুল করেছিলেন রাহুল। কিন্তু মোদীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তোলার পিছনে কোনও ভুল নেই। রাহুলের দাবি ছিল, তিনি নিজে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগান উদ্ভাবন করেননি। ছত্তীসগঢ়ের এক সভায় তিনি চৌকিদার বলার পরে তরুণরাই ‘চোর হ্যায়’ বলে স্লোগান তুলেছিলেন। বস্তুত, আজ মধ্যপ্রদেশের জনসভাতেও ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ বলে স্লোগান তুলেছেন তিনি। রাহুল বলেছেন, ‘চৌকিদার’, জনতা আওয়াজ তুলেছে, ‘চোর হ্যায়’। এই স্লোগান এতটাই জনপ্রিয় হয়েছে যে বিজেপির সভাতেও জনতা ভুল করে ‘চৌকিদার’-এর পরে ‘চোর হ্যায়’ ধুয়ো তুলে ফেলেছে।
কোর্ট আগেই জানিয়েছিল— হয় রাহুলকে ক্ষমা চাইতে হবে, না হলে তাঁর আদালত অবমাননার বিচার হবে। সুপ্রিম কোর্টে ক্ষমা চেয়ে রাহুলের আইনজীবীরা আর্জি জানিয়েছেন, এ বার তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা খারিজ করে দেওয়া হোক। শুক্রবার এ বিষয়ে শুনানি হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy