এ বার বিদায়। ‘‘অব বিদা..।’’ ভোপালে মধ্যপ্রদেশের নতুন মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদবের শপথ গ্রহণের কিছুক্ষণ আগে এই ভাবেই নিজের বিদায়-বার্তা জানিয়ে গেলেন রাজ্যের চার বারের মুখ্যমন্ত্রী, সদ্যপ্রাক্তন শিবরাজ চৌহান। রাজনৈতিক শিবিরে যিনি ‘মামা’ বলেই খ্যাত।
‘‘অব বিদা, জস কি তস রখ দেনি চাদরিয়া...’’, বলেছেন শিবরাজ। অর্থাৎ, যেখানে যেমন ছিল তেমন করেই রেখে আমি চললাম! তার একটু পরেই সকাল সাড়ে ১১টায় ভোপালের মতিলাল নেহরু স্টেডিয়ামে শপথ নিলেন মোহন। নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডা, যোগী আদিত্যনাথরা ছিলেন সকলেই। মধ্যপ্রদেশে বিপুল জয়ের পরেও শিবরাজকে না ফিরিয়ে নতুন মুখ বেছে নিয়েছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই জয়ের মরসুমেও বিদায়ের সুর লেগে রইল ভোপালের বাতাসে। শিবরাজ কি তবে এ বার জাতীয় রাজনীতিতে নতুন ভূমিকায় দেখা দেবেন? গুঞ্জন চলছিল ক’দিন ধরে তা নিয়েই। শিবরাজ নিজে অবশ্য তেমন ইঙ্গিত দেননি। বরং গত কালই রীতিমতো অভিমানী স্বরে বলে গিয়েছেন, ‘‘আমি দিল্লি যাব না। নিজের জন্য কিছু চাইতে যাওয়ার বদলে মরণ ভাল!’’ তবে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কোনও রকম অনাস্থা দেখাননি তিনি। বরং বলেছেন, মোহনের নেতৃত্বে মধ্যপ্রদেশ উন্নয়ন, জনকল্যাণ এবং সমৃদ্ধির নতুন শিখর স্পর্শ করবে বলেই তাঁর বিশ্বাস। মোহনের দুই উপমুখ্যমন্ত্রীও আজ শপথ নেন।
৫৮ বছর বয়সি ওবিসি নেতা মোহন শপথ গ্রহণের পরে উজ্জয়িনীর মহাকাল মন্দিরে পুজো দেন। মোহন উজ্জয়িনীরই বাসিন্দা, সেখানকারই বিধায়ক। স্থানীয় বিশ্বাস মতে, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর আর উজ্জয়িনীতে রাত্রিবাস করা হবে না। কারণ, মহাকাল ছাড়া অন্য কোনও ‘রাজা’ উজ্জয়িনীতে রাত্রিবাসের অধিকার নেই। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পরে মোহন তাঁর প্রথম নির্দেশটি জারি করেছেন, প্রকাশ্য স্থানে এবং ধর্মস্থানে বিধি ভেঙে লাউডস্পিকার আর ডিজে বাজানো চলবে না।
ভোপালের শপথ-পর্ব মেটার পরে বিকেলে রায়পুরে সায়েন্স কলেজের মাঠে ছিল ছত্তীসগঢ়ের চতুর্থ মুখ্যমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠান। মোদী-শাহ-নড্ডার সঙ্গে ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও। বিষ্ণুদেও সাইয়ের সঙ্গে শপথ নেন দু’জন উপমুখ্যমন্ত্রী। আগামী কাল বিষ্ণুদেব রাজ্য মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠক করবেন। ৫৯ বছর বয়সি এই জনজাতি নেতা এর আগে কেন্দ্রে মন্ত্রী ছিলেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতির দায়িত্বও সামলেছেন। ২০২১ সালে একটি গোষ্ঠী সংঘর্ষের মামলায় তিনি গ্রেফতার হন। পরে জামিন পান।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)