E-Paper

উচ্চ-নিম্ন কোর্টে প্রভু ও দাসের সম্পর্ক: হাই কোর্ট

হাই কোর্টের বিচারপতিদের জন্য জেলা জজেরা খাবারদাবার নিয়ে স্টেশনে অপেক্ষা করেছেন, এমন কয়েকটি উদাহরণ দিয়েছেন বিচারপতি শ্রীধরন। নির্দেশে তিনি আরও বলেছেন, যখন নিম্ন আদালতের বিচারকেরা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রিতে নিযুক্ত হন তখন তাঁদের বসার জায়গাও দেওয়া হয় না।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৫ ০৭:৪৬

—প্রতীকী চিত্র।

উচ্চ ও নিম্ন আদালতের মধ্যে সম্পর্ক এখন সামন্ততান্ত্রিক প্রভু ও দাসের মতো বলে মন্তব্য করল মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট। বিশেষ আদালতের বরখাস্ত হওয়াএক বিচারকের মামলায় দেওয়া নির্দেশে এই মন্তব্য করেছেন মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্টের বিচারপতি অতুল শ্রীধরন।

বিচারপতি শ্রীধরনের মতে, ‘‘হাই কোর্টের বিচারপতিদের যখন নিম্ন আদালতের বিচারকেরা সম্বোধন করেন তখন নিম্ন আদালতের বিচারকেরাই একমাত্র অমেরুদণ্ডী স্তন্যপায়ী প্রাণী।’’

হাই কোর্টের বিচারপতিদের জন্য জেলা জজেরা খাবারদাবার নিয়ে স্টেশনে অপেক্ষা করেছেন, এমন কয়েকটি উদাহরণ দিয়েছেন বিচারপতি শ্রীধরন। নির্দেশে তিনি আরও বলেছেন, যখন নিম্ন আদালতের বিচারকেরা হাই কোর্টের রেজিস্ট্রিতে নিযুক্ত হন তখন তাঁদের বসার জায়গাও দেওয়া হয় না। বসতে দিলেও তাঁরা কুণ্ঠিত হন। এই অসামঞ্জস্যের জন্যই জেলা আদালত সবসময়েই হাই কোর্টকে না চটানোর মনোভাব নিয়ে কাজ করে।

বিচারপতি শ্রীধরনের মতে, এর ফলে বিচার ব্যবস্থার মূল ভিত্তিই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই তাই নিম্ন আদালতে জামিন হয় না। উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই দোষী সাব্যস্ত হন অভিযুক্ত। উচ্চ আদালতের ভয়ে নিম্ন আদালতের বিচারকেরা অভিযুক্তকে মামলা থেকে রেহাই দিতেও চান না।

বিচারপতি শ্রীধরনের মতে, ‘‘জাতপাতের মতোই মধ্যপ্রদেশে বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থা। হাই কোর্ট হল সাবর্ণ। বাকিরা শূদ্র।’’

বিচারপতি শ্রীধরনের মতে, কোনও রাজ্যে আইনের শাসন থাকার অর্থ হাই কোর্টের স্বাধীনতা নয়। কারণ, বেশিরভাগ নাগরিকই হাই কোর্টে যেতে পারেন না। জেলা আদালতের নির্ভয়ে কাজ করা প্রয়োজন।

তবে হাই কোর্টের এমন মন্তব্যে বিস্মিত প্রাক্তন বিচারপতি ও আইনজীবীদের একাংশ। বম্বে ও কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘নিম্ন আদালতের উপরে হাই কোর্টের নিয়ন্ত্রণের অধিকার সংবিধানসম্মত। সেটা সামন্ততান্ত্রিক প্রভু ও দাসের সম্পর্ক নয়।’’

আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতার মতে, ‘‘আইনি পেশায় বিচার বিভাগের সব স্তরকেই সম্মান করা রীতি। সেখানে এমন মন্তব্য বিস্ময়কর।’’ এই মন্তব্যের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পদক্ষেপ করা উচিত বলে মনে করেন মিজ়োরামের এজি বিশ্বজিৎ দেব।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Madhya Pradesh High Court Madhya Pradesh High Court Lower Court

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy