ভারতীয় সেনা আধিকারিক কর্নেল সোফিয়া কুরেশির প্রসঙ্গে কুমন্তব্যের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করল মধ্যপ্রদেশ পুলিশ। তিন সদস্যের সিটে রয়েছেন ইনস্পেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ প্রমোদ বর্মা, ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল কল্যাণ চক্রবর্তী এবং পুলিশ সুপার বাহিনী সিংহ।
‘অপারেশন সিঁদুর’ পরবর্তী সময়ে কর্নেল সোফিয়ার প্রসঙ্গে কুমন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিজয় শাহের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও চলছে। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তের জন্য পুলিশকে একটি সিট গঠনের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, মঙ্গলবার সকাল ১০টার মধ্যে সিট গঠন করতে হবে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর সোমবার রাতেই সিট গঠন করে ফেলে মধ্যপ্রদেশ পুলিশ। আদালতের নির্দেশের পরই মধ্যপ্রদেশ পুলিশের ডিজি কৈলাস মাকওয়ানা সিট গঠনের নির্দেশিকা জারি করেন। সিনিয়র আইপিএস আধিকারিক প্রমোদ বর্তমানে সাগর রেঞ্জে আইজি পদে কর্মরত। আইপিএস কল্যাণ বর্তমানে ভোপালে ডিআইজি পদে রয়েছেন। আইপিএস বাহিনী মধ্যপ্রদেশের দিনদোরি জেলার পুলিশ সুপার হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।
ভারতীয় সেনার সামরিক যোগাযোগ ও ইলেকট্রনিক্স অভিযান সহায়ক শাখা সিগন্যাল কোরের অন্যতম শীর্ষ আধিকারিক ৩৫ বছরের সোফিয়া। ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে পর পর কয়েক দিন ভারতীয় সেনা ও বিদেশ মন্ত্রক যৌথ ভাবে সাংবাদিক বৈঠক করেছিল। প্রত্যেক বৈঠকেই বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর পাশে উপস্থিত ছিলেন কর্নেল সোফিয়া এবং বায়ুসেনার উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি কর্নেল সোফিয়াকে ‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’ বলেছিলেন মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী। ওই কুমন্তব্যের জন্য গত সোমবারের শুনানিতেও সুপ্রিম কোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়েন বিজেপি নেতা। ওই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক ছড়ানোর পর ক্ষমা চেয়েছিলেন মন্ত্রী। তবে আদালত তা গ্রহণ করেনি। মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রীকে সোমবার সুপ্রিম কোর্ট কড়া ভাষায় বলেছে, “কুমিরের কান্না কাঁদবেন না।” মন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার ধরনকেও আন্তরিক বলে মনে করছে না আদালত। কর্নেল সোফিয়ার প্রসঙ্গে ওই মন্তব্যের জন্য মন্ত্রীর বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, মধ্যপ্রদেশ সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে আদালত।
একই সঙ্গে পুলিশের কাছেও তদন্তের অবস্থা জানতে চেয়েছে আদালত। পুলিশকে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, ওই বিশেষ তদন্তকারী দলে এক মহিলা অফিসার-সহ তিন জন আইপিএস পদমর্যাদার পুলিশ থাকবেন। সিটকে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে ২৮ মে-র মধ্যে।