Advertisement
E-Paper

বন্‌ধে ভাঙচুর বিক্ষোভ, চড়া আঁচ মহারাষ্ট্রে

মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার রাজ্যের দলিতদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, এই অভিযোগ তুলে আজ বন্‌ধ ডেকেছিলেন ভারিপা বহুজন সহাসঙ্ঘের নেতা প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৪
প্রতিবাদ: ঠাণে স্টেশনে দলিত বিক্ষোভ। বুধবার। ছবি: পিটিআই।

প্রতিবাদ: ঠাণে স্টেশনে দলিত বিক্ষোভ। বুধবার। ছবি: পিটিআই।

দলিতদের ডাকা বন্‌ধকে কেন্দ্র করে আজও সারাদিন উত্তপ্ত থাকল বাণিজ্যনগরী মুম্বই-সহ মহারাষ্ট্রের বড় একটা অংশ। অবরোধ-বিক্ষোভে আজ সকাল থেকেই থমকে ছিল মুম্বই ও তার শহরতলির জীবনরেখা লোকাল ট্রেন। পুণে, ঠাণে, মুম্বইয়ের রাস্তায় পাথর পড়েছে বাসে। প্রাণভয়ে রাজ্যের বেশির ভাগ মানুষই আজ কাজে বেরোননি। যাঁরা বেরিয়েছেন, ভুগেছেন। বিকেলের দিকে বন্‌ধ তুলে নেন বি আর অম্বেডকরের নাতি, দলিত নেতা প্রকাশ অম্বেডকর।

মহারাষ্ট্রের বিজেপি সরকার রাজ্যের দলিতদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, এই অভিযোগ তুলে আজ বন্‌ধ ডেকেছিলেন ভারিপা বহুজন সহাসঙ্ঘের নেতা প্রকাশ। বন্‌ধ সমর্থকেরা আজ সকাল থকেই মুম্বই শহরতলির চেম্বুর, ঘাটকোপার, কামরাজ নগর, ভিক্রোলী, ডিন্দোশী, কান্দিভলী যোগেশ্বরী, কলানগর, মাহিমের মতো এলাকায় কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছেন বলে পুলিশের অভিযোগ। তাঁরা ওয়েস্টার্ন এক্সপ্রেসওয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করতে গেলে পুলিশ সকলকে হঠিয়ে দেয়। কুর্লা, গৌভন্ডী, মানখুর্দে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রেললাইন অবরুদ্ধ করে রাখেন দলিতরা। পানভেল, বেলাপুর, ভাসীর মতো অঞ্চলেও ভুগতে হয় নিত্যযাত্রীদের। বহু জায়গাতেই দেখা গিয়েছে, রেললাইন ধরে হাঁটছেন কাজে বেরোনো অসংখ্য মানুষ।

ভুগেছেন দূরপাল্লার ট্রেন যাত্রীরাও। বড়দিনের ছুটি কাটিয়ে পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে আজই মুম্বই থেকে ট্রেনে ওঠার কথা ছিল কলকাতার রেশমার। দুপুর থেকে একাধিক বার অ্যাপ ক্যাব বুক করেও স্টেশনে পৌঁছতে পারেননি তিনি। যত ক্ষণে বন্‌ধ উঠেছে, তত ক্ষণে তাঁর ট্রেন ছেড়ে দেওয়ার সময় হয়ে গিয়েছিল। আগামী রবিবারের আগে আর কোনও ট্রেনের টিকিট পাবেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মুম্বই ও তার আশপাশে আজ মোট ১৩টি ‘বেস্ট’ বাসে ভাঙচুর চলেছে। আজ কাজ করেননি মুম্বইয়ের ডাব্বাওয়ালারা। রাস্তায় নামেনি অধিকাংশ স্কুল বাসও। সরকারি স্কুল বন্ধ না থাকলেও অনেকেই আজ তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাননি। বন্ধ ছিল বহু অফিস, দোকানও। যেগুলি খুলেছে, তাতে হাজিরার সংখ্যা ছিল বেশ কম। বন্‌ধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে টেলিভিশন আর ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতেও। বহু চ্যানেলই আজ বাধ্য হয়েছে তাদের সিরিয়ালের শ্যুটিং বন্ধ রাখতে। বেশ কিছু ফিল্মের প্রচার সংক্রান্ত কাজও আজ বাতিল করতে বাধ্য হন প্রযোজকেরা।

তবে আজকের বন্‌ধকে সম্পূর্ণ ‘শান্তিপূর্ণ’ দাবি করে বিকেল সাড়ে চারটের দিকে তা তুলে নেন প্রকাশ অম্বেডকর। পুলিশ যে সব বন্‌ধ সমর্থককে আটক বা গ্রেফতার করেছে, তার সমালোচনা করেন তিনি। উল্টে তাঁর প্রশ্ন, সোমবারের অশান্তির মূলে থাকা দুই হিন্দুত্ববাদী নেতাকে কেন গ্রেফতার করছে না পুলিশ?

বছর পঁচাশির শম্ভাজি ভিডে আর ৫৬ বছরের মিলিন্দ একবোটে। অশান্তির নেপথ্যে এই দুই হিন্দু নেতার ভূমিকা রয়েছে বলে অভিযোগ। দিল্লিতে আজ কংগ্রেসও বলে, ভিড়ের সংগঠন ‘শিব প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্তান’ আর একবোটের ‘হিন্দু একতা মঞ্চ’ই হিংসা উস্কে দিয়েছিল সে দিন। অতীতেও এরা এমন হাঙ্গামা করেছে। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের প্রচারে নরেন্দ্র মোদী শম্ভাজির গ্রামে গিয়ে তাঁর পা ছুঁয়ে প্রণাম করেছেন, তাঁর নির্দেশেই তিনি কাজ করেন বলেও সে সময় দাবি করেছিলেন মোদী। শম্ভাজি-একবোটে উভয়েরই বিজেপি-আরএসএসের সঙ্গে ওঠাবসা। যদিও অরুণ জেটলি দিল্লিতে বলেছেন, ‘‘ভিমা-কোরেগাঁওতে দলিত সভায় উপস্থিত নেতাদের বক্তব্যেই পরিস্থিতি বিগড়েছে।’’ নাম না করে জিগ্নেশ মেবাণী, উমর খালিদদের দুষেছেন তিনি। আরএসএস অবশ্য দায় ঝেড়েছে। মনমোহন বৈদ্য দোষীদের শাস্তির দাবি তুলে শান্তি রক্ষার আবেদন জানিয়েছেন।

Maharastra Dalit Narendra Modi মহারাষ্ট্র দলিত
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy