E-Paper

রাজ্যসভায় কেজরীকে চাইছেন মমতা

বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর উদাহরণও কেজরীর সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। ২০১২ সালে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে হারের পর রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিঁকিয়ে রাখতে মায়াবতী ২০১৩-র মার্চে রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছিলেন। দিল্লি থেকেই তিনি লখনউয়ের রাজনীতি করেছেন।

অগ্নি রায়

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৫ ০৭:৩২
(বাঁ দিকে) অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

(বাঁ দিকে) অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান, বিজেপি-বিরোধী রাজনীতিকে সংসদে শক্তিশালী করতে দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা আম আদমি পার্টি (আপ)-র আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরীওয়াল রাজ্যসভায় যান। দিল্লির রাজনৈতিক সূত্র বলছে, বিষয়টি নিয়ে মমতা এমন পরামর্শই দিয়েছেন কেজরীওয়ালকে। এ কথাও বলেছেন, সক্রিয় ভাবে রাজনীতিতে এবং মানুষের সামনে থাকতে হলে বিধানসভা অথবা সংসদের সদস্য হওয়া প্রয়োজন। নচেৎ ঠিক ভাবে মানুষের সঙ্গে যুক্ত বিষয়গুলি তোলা যাবে না। সূত্রের খবর, আপ আহ্বায়ক এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন এমন নয়। তবে রাজ্যসভায় যাওয়ার সম্ভাবনাকে খুবই ইতিবাচক ভাবে খতিয়ে দেখছেন তিনি। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, তাঁর রাজ্যসভায় যাওয়া এবং না যাওয়ার সম্ভাবনা যথাক্রমে ৭০ এবং ৩০ শতাংশ।

রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, এসপি-র অখিলেশ যাদব, আরজেডি-র তেজস্বী যাদব, জেএমএমের হেমন্ত সোরেন, শিবসেনা (ইউবিটি)-র উদ্ধব ঠাকরের মতো নেতারাও এ ব্যাপারে মমতার মতেরই সমর্থক। এঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। আগের প্রজন্মের রাজনীতিক (বেশির ভাগেরই) এবং রাজনৈতিক লড়াইয়ের প্রেক্ষাপট থাকার কারণে অখিলেশ, তেজস্বী, হেমন্তরা মমতাকে প্রকাশ্যে বিরোধী জোটের মুখ হিসেবে দেখার দাবিও তুলেছেন। বিরোধী জোটের মধ্যে কংগ্রেসের সমান্তরাল ভাবে আঞ্চলিক দলগুলির একটি ‘জিঞ্জার’ গোষ্ঠীর উপস্থিতি প্রায় ‘ইন্ডিয়া’ জোটের জন্মলগ্ন থেকেই। তৃণমূলের হিসেব, কেজরীওয়ালের মতো হেভিওয়েট নেতা সংসদে গেলে বিরোধী জোটের উপকার হবে।

বিএসপি নেত্রী মায়াবতীর উদাহরণও কেজরীর সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। ২০১২ সালে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে হারের পর রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিঁকিয়ে রাখতে মায়াবতী ২০১৩-র মার্চে রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছিলেন। দিল্লি থেকেই তিনি লখনউয়ের রাজনীতি করেছেন।

এটা ঘটনা, কেজরীওয়ালের সঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর সম্পর্ক দীর্ঘ দিন ধরেই ঘনিষ্ঠ। বিভিন্ন রাজনৈতিক পরামর্শও তিনি তৃণমূল নেত্রীর থেকে নেন। আবগারি দুর্নীতি মামলায় কেজরীওয়াল গ্রেফতার হওয়ার পর, গত বছর দিল্লিতে এসেই তাঁর বাড়ি গিয়েছিলেন মমতা।

পঞ্জাবের পশ্চিম লুধিয়ানা আসনটির উপনির্বাচনে রাজ্যসভার সাংসদ (সদ্য প্রাক্তন) সঞ্জীব অরোরার জয়ের পরই কেজরীওয়ালের সংসদে যাওয়ার প্রশ্ন উঠছে। গতকাল সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন অরোরা। কেজরীওয়ালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কিছুটা হালকা চালে প্রথমে বলেছেন, সাংসদ হবেন না। কিন্তু তার পরেই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জানিয়েছেন, রাজ্যসভায় কে যাবেন তা দলের রাজনীতি বিষয়ক কমিটি ঠিক করবে। দিল্লিতে ক্ষমতা হারানোর পর রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখতে তাঁর সংসদে যাওয়া উচিত, এটা মনে করছে ওই কমিটিও। তা ছাড়া, আপ রাজনীতিতে কেজরীওয়ালের কথাই শেষ কথা। তাঁর দলের কমিটি কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে তাঁর ঘাড়ে চাপিয়ে দিল, বিষয়টি আদৌ এমন নয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Arvind Kejriwal Aam Aadmi Party Mamata Banerjee Rajya Sabha

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy