এর আগে একাধিক হত্যার সঙ্গে জড়িত জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার নেপথ্যে থাকা গোষ্ঠী। এমনটাই বলছে তদন্তকারীদের সূত্র। গত বছর এই জম্মু-কাশ্মীরেরই গান্ডেরবালে এক হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যেও ওই জঙ্গিদের ভূমিকা ছিল বলে জানা গিয়েছে তদন্তে।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে নিহত হন ২৬ জন পর্যটক। পর দিনই ঘটনার নেপথ্যে থাকা তিন জঙ্গির হাতে আঁকা ছবি (স্কেচ) প্রকাশ্যে আনে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। কিন্তু হামলার পর আট দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত জঙ্গিদের খোঁজ মেলেনি। সেই আবহেই জানা গিয়েছে, এর আগে গান্ডেরবাল জেলায় একটি হামলার সঙ্গেও যুক্ত ছিল ওই জঙ্গিরা। ২০২৪ সালের ওই ঘটনায় ছয় শ্রমিক এবং এক ডাক্তার নিহত হন। সোনমার্গের জ়েড-মোড় সুড়ঙ্গের কাছে উদ্ধার হয়েছিল তাঁদের দেহ। সূত্রের খবর, পহেলগাঁওয়ের মতো ওই হামলাটিও পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-এ-ত্যায়বা (এলইটি)-র শাখা সংগঠন দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন:
গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, জ়েড-মোড় হামলার নেপথ্যে ছিল পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত লশকর-জঙ্গি হাশিম মুসা ওরফে সুলেমান। ২০২৪ সালের ওই হামলার পর পুরোদমে তল্লাশি অভিযান শুরু করে নিরাপত্তাবাহিনী। সে বছরের ডিসেম্বরেই সংঘর্ষ (এনকাউন্টার)-এ নিহত হয় জুনাইদ আহমেদ ভাট নামে আর এক জঙ্গি। পরে একই হামলার সঙ্গে যুক্ত আরও দুই জঙ্গিকে নিষ্ক্রিয় করা হয়। কিন্তু নিরাপত্তাবাহিনীর নাগালের বাইরেই থেকে গিয়েছিল মুসা।
২০২৪ সালের অক্টোবরে জ়েড-মোড় তথা সোনমার্গ সুড়ঙ্গের অদূরে একটি বেসরকারি নির্মাণ সংস্থার শ্রমিক শিবিরে গুলি চালায় সন্ত্রাসবাদীরা। তাতেই প্রাণ গিয়েছিল ছয় শ্রমিক এবং এক চিকিৎসকের। সুড়ঙ্গ হামলার নিহতদের মধ্যে ছিলেন বুদগামের চিকিৎসক শাহনওয়াজ, পঞ্জাবের গুরুদাসপুরের গুরমিত সিংহ, বিহারের মোহাম্মদ হানিফ, ফাহিম নাসির (নিরাপত্তা কর্মী), কলিম, মধ্যপ্রদেশের অনিল কুমার শুক্ল এবং জম্মুর শশী আব্রোল। পাশাপাশি, সংস্থার দু’টি গাড়িতে আগুনও ধরিয়ে দেয় জঙ্গিরা। ৬.৫ কিলোমিটার বিস্তৃত এই সোনমার্গ সুড়ঙ্গ শ্রীনগরকে কার্গিলের সঙ্গে সংযুক্ত করে। ৮,৫৬২ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই সুড়ঙ্গ ওই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ছিল। সে কারণেই এই হত্যাকাণ্ডের পর নড়েচড়ে বসে নিরাপত্তাবাহিনী। শুরু হয় মুসা-সহ বাকি জঙ্গিদের খোঁজ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।