দুশ্চিন্তায় আছেন? মুক্তি দিতে সোনার আংটি গিলে পালাল ‘সাধু’

আপনি কি চিন্তায় আছেন? কষ্টে আছেন? তা হলে আপনার হাতের সোনার আংটিই হতে পারে কষ্ট লাঘবের একমাত্র উপায়। এমনটা বলেই বোকা বানিয়ে সোনার আংটি নিয়ে উধাও দুই সাধু!

ঘটনাটি ঘটেছে পুণেতে। ভাইপোকে নিতে রাস্তায় অপেক্ষা করছিলেন অরুণ দাতির। ফুটপাথে দাঁড়িয়েছিলেন। অনেক ক্ষণ পরও ভাইপো না ফেরায় চিন্তা বাড়তে থাকল অরুণবাবুর! কেন এত দেরি হচ্ছে?

ফুটপাতে দাঁড়িয়ে মাথা নীচু করে এ সব কথাই চিন্তা করছিলেন এক মনে। এমন সময় সাধুর বেশে দুই ব্যক্তি তাঁর সামনে এসে হাজির। অরুণবাবু মুখ তুলে দুই সাধুকে দেখে একটু চমকে যান। কিছু বলতে যাবেন, কিন্তু তার আগেই ওই দুই ব্যক্তি ভিক্ষা চাইলেন অরুণবাবুর কাছে। কিন্তু ভিক্ষা নেওয়ার পরও সেখান থেকে চলে না গিয়ে অরুণবাবুর সঙ্গে আলাপ জমাতে শুরু করে দু’জন।

আরও পড়ুন: চার-পাঁচ মাস ধরে যৌন নির্যাতন নাবালিকাকে, গ্রেফতার স্বঘোষিত সাধু

কোথায় থাকেন? কী করেন? এখানে কেন দাঁড়িয়ে— শুরুটা এই ভাবেই হয়েছিল। অরুণবাবু কখনও সিরডি গিয়েছেন কি না সেটাও জানতে চায়। এক বার নয়, তিন তিন বার সেখানে গিয়েছিলেন এ কথা জানানোর পর তাঁর হাতে একটা সাঁই বাবার ছবি লাগানো কয়েন গুঁজে দেয় তাদের মধ্যে এক জন। এর পর অরুণবাবুকে তারা বলে, “আপনি খুব চিন্তায় আছেন।” এই কথা শুনে চমকে উঠলেন অরুণবাবু। সত্যিই ভাইপোকে নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তিনি।

সাধুবেশী লোকগুলো অরুণবাবুর মুখ দেখে বুঝতে পারেন ঠিক জায়গায় তিরটা মেরেছেন। এ বার শুধু শিকারকে বাগে আনার পালা! অরুণবাবুর হাতে চকচক করছিল মোটা সোনার আংটিটি। সেটা হাতানোই উদ্দেশ্য ছিল তাদের। ঝট করে তাদের মধ্যে এক জন আংটিটা চাইলেন। অরুণবাবুকে বোঝানো শুরু হল, এই আংটি দিয়েই তাঁর কষ্ট, চিন্তা দূর করা সম্ভব।

আরও পড়ুন: সাত বছর ধর্ষণ সয়ে ছুরির কোপ সাধুর যৌনাঙ্গে

এর পর ঝোলার ভিতর থেকে ধাতুর একটি হাত বের করে তার মধ্যে আংটিটা রাখতে বলে এক ‘সাধু’। ভ্যাবাচাকা খেয়ে যান অরুণবাবু। তাঁর দাবি, “হঠাত্ দেখি আমার আঙুল থেকে আংটিটা ওই ধাতব হাতের মধ্যে চলে গিয়েছে। কী ভাবে গেল বুঝতেই পারলাম না! এর পরেই টপ করে আংটিটা মুখে পুরে নেয় ‘সাধু’দের এক জন। বিড়বিড় করে কিছু একটা উচ্চারণ করে। তার পর দ্বিতীয় জন আমাকে বলে, ‘বাবা তোমার সব দুঃখ গিলে নিয়েছে। তুমি কষ্ট থেকে মুক্তি পাবে।’

আরও পড়ুন: দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রকে যৌন হেনস্থা, সাসপেন্ড স্কুলের অধ্যক্ষা

তত্ক্ষণাত্ অরুণবাবু আংটিটা ফেরত চান। কিন্তু সাধু মুখ খুলে দেখায়, সেখআনে আংটি নেই। অরুণবাবু জানান, অসহায়ের মতো লাগছিল তখন। সুযোগ পেয়েই লোক দুটো সেখান থেকে চম্পট দেয়। এই ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যেই অরুণবাবুর ভাইপো ফিরে আসে। তাঁকে নিয়ে পুলিশের কাছে যান অরুণবাবু।। অভিযোগ দায়ের করেন বুন্দ গার্ডেন থানায়। পুলিশ ওই দুই সাধুর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে। এমন ঘটনা নাকি বেশ কয়েক জনের সঙ্গেও হয়েছে। সেই ঘটনার সঙ্গে অরুণবাবুর ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।