দিল্লিতে এক সময়ে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। সেই যুবক নীরজ সিংহই এখন ৪০০ কোটির মালিক। বলা ভাল, তিনি এখন শিল্পপতি নীরজ সিংহ। এ বারের বিহারের বিধানসভা নির্বাচনে জন সুরাজ পার্টির (জেএসপি) প্রধান তথা ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (যিনি পিকে নামেই বেশি পরিচিতি) দলের প্রার্থী হয়েছেন। শওহর বিধানসভা আসন থেকে তিনি ভোটে লড়বেন।
বিহারের শওহর জেলার মথুরাপুর গ্রামে জন্ম নীরজের। দশম শ্রেণি পাশ করার পর পরিবারকে সাহায্য করতে কাজের খোঁজে নামেন। কিন্তু তাঁর বয়স এতই কম ছিল যে, কেউ কাজ দিতে চাইছিলেন না। কোথাও কাজ না পেয়ে গ্রামে পেট্রল, ডিজেল বিক্রি করা শুরু করেন। তিন বছর সেই কাজ করার পর গ্রাম ছেড়ে দিল্লিতে ভাল কাজের খোঁজে পাড়ি দেন। সেখানে এক জায়গায় নিরাপত্তারক্ষীর কাজ শুরু করেন। এক বছর নিরাপত্তারক্ষার কাজ করার পর দিল্লি থেকে মহারাষ্ট্রের পুণেতে চলে যান নীরজ। সেখানে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ শুরু করেন সামান্য বেতনে। কয়েক বছর সেখানে কাজ করার পর ২০১০ সালে ব্যবসা শুরু করেন।
আরও পড়ুন:
প্রথমে ইমারতি দ্রব্য এবং সরঞ্জামের ব্যবসা শুরু করেন। তার পর সেই ব্যবসাকে আড়েবহরে আরও বৃদ্ধি করেন। ইমারতি দ্রব্য বিক্রির পাশাপাশি জমি-বাড়ির ব্যবসায় নামেন। তার পর একটি পেট্রল পাম্প খোলেন। বর্তমানে তাঁর সংস্থার আয় ৪০০ কোটি। ২০০০ কর্মী তাঁর ব্যবসা এবং সংস্থার সঙ্গে জড়িত। নীরজ জানিয়েছেন, একটা সাইকেলের জন্য প্রতিবেশীর কাছে ছুটতে হত। কখনও পেতেন, কখনও আবার খালি হাতে ফিরতে হত। কিন্তু এখন তাঁর নিজের বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে। দুই পুত্র, মা-বাবা এবং স্ত্রীকে নিয়ে সংসার নীরজের। কাজের পাশাপাশি নীরজ কিন্তু পড়াশোনাও চালিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। যে হেতু নিজে দারিদ্র দেখেই বড় হয়েছেন, তা-ই এখন ৪০০ কোটির মালিক হয়েও নিজের শিকড়কে ভুলে যাননি বলে দাবি নীরজের ঘনিষ্ঠদের। সমাজসেবামূলক কাজ করেন। দুঃস্থ কন্যাদের বিয়ে দেওয়া,বিনামূল্যের স্বাস্থ্যশিবিরের আয়োজন করেন। ভোটের প্রার্থী হয়ে নীরজ বলেন, ‘‘সত্যিকারের রাজনীতি মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে। বিহারে অনেক সম্ভাবনা আছে। শুধু ইচ্ছাটাই দরকার।’’