E-Paper

বেআইনি অস্ত্র ফেরতের সময়সীমা বাড়ালেন ভল্লা

বেআইনি অস্ত্র ফেরত দেওয়ার পর্ব চলার মধ্যেই, পূর্ব ইম্ফলের কংবা মারু মন্দির লক্ষ করে পার্শ্ববর্তী পাহাড় থেকে সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিরা গুলি চালিয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০২৫ ০৯:১১
ইম্ফলের মণিপুর রাইফেলস ঘাঁটিতে জমা পড়া বিপুল অস্ত্রশস্ত্র।

ইম্ফলের মণিপুর রাইফেলস ঘাঁটিতে জমা পড়া বিপুল অস্ত্রশস্ত্র। ছবি: পিটিআই

মণিপুরে লুট হওয়া ও মজুত রাখা বেআইনি অস্ত্র ফেরত দেওয়ার সময়সীমা আরও এক সপ্তাহ বাড়ালেন রাজ্যপাল অজয়কুমার ভল্লা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগামিকাল মণিপুরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন। সেই বৈঠকে রাজ্যপাল ভল্লা ছাড়াও হাজির থাকবেন মণিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিংহ, মুখ্যসচিব পি কে সিংহ, ডিজিপি রাজীব সিংহ ও বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা।

বেআইনি অস্ত্র ফেরত দেওয়ার পর্ব চলার মধ্যেই, পূর্ব ইম্ফলের কংবা মারু মন্দির লক্ষ করে পার্শ্ববর্তী পাহাড় থেকে সন্দেহভাজন কুকি জঙ্গিরা গুলি চালিয়েছে। পুলিশ জানায়, কাংবা মারু মন্দিরে শুক্রবার মেইতেইদের একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেই সময়ে পাশের কুকি অধ্যুষিত কাংপোকপি জেলার ওয়াকান পাহাড় থেকে প্রায় ১০ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। তবে গুলিতে কেউ হতাহত হয়নি। ঘটনার পরেই যৌথ বাহিনী ওই পাহাড়ে তল্লাশি চালিয়ে গুলিচালনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করে। গুলি চলার প্রতিবাদে আশেপাশের গ্রামগুলির ক্ষুব্ধ স্থানীয় মানুষ রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়।

রাষ্ট্রপতি শাসনাধীন মণিপুরের রাজ্যপাল ভল্লা লুণ্ঠিত ও অবৈধ অস্ত্র এবং গোলাবারুদ ফেরত দেওয়ার জন্য প্রদত্ত সময় আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়েছেন। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, উপত্যকা এবং পাহাড়, দু’তরফের বাসিন্দাদের অনুরোধের ভিত্তিতেই এই সময়সীমা ৬ মার্চ বিকেল ৪টে পর্যন্ত বাড়ানো হল। ভল্লা বলেন, “শান্তি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, আমাদের যুবসমাজের ভবিষ্যৎ রক্ষা এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার এটাই শেষ সুযোগ। যাদের কাছে এখনও লুট করা বা অবৈধ অস্ত্র আছে, তাদের সকলকে আমরা আবারও অনুরোধ করছি, তারা যেন এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেগুলো পুলিশকে জমা দেয়। তা হলে তাদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
সময় পার হলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হবে।”

পুলিশ জানায়, ২০ ফেব্রুয়ারি রাজ্যপাল প্রথম বার অস্ত্র ফেরানোর আবেদন করার পর থেকে ২৭শে ফেব্রুয়ারি রাত পর্যন্ত ৬১০টিরও বেশি অস্ত্র জমা পড়েছে, যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, কামান, মর্টার, রকেট লঞ্চার। গত কাল ইম্ফলের মণিপুর রাইফেলস ঘাঁটিতে ২৪৬টি অস্ত্র জমা দিয়েছিল মেইতেই আরাম্বাই টেঙ্গল বাহিনী। পাশাপাশি বিভিন্ন জেলায় মেইতেইরা আরও ১০৯টি বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিয়েছে।

আরাম্বাই টেঙ্গলের নেতারা অস্ত্র সমর্পণের পরে জানায়, কুকিদের জন্য পৃথক প্রশাসন কোনও ভাবেই হবে না। রাজ্যের অখণ্ডতা রক্ষার শর্ত সরকার মেনে নেওয়ার পরেই তারা অস্ত্র জমা দিতে রাজি হয়েছে। রাজ্যে এনআরসি চালু করা, মায়ানমারের দুই পারে অবাধ যাতায়াত বন্ধ করা, অবৈধ বহিরাগতদের চিহ্নিত ও বহিষ্কার করা এবং আফিম চাষ সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করার দাবিও রাজ্যপালকে জমা দিয়েছে তারা। যদি অস্ত্র ফেরানোর পরেও কুকিরা আক্রমণ করে ও মেইতেইদের ক্ষতি হয়, তবে আরাম্বাইরা ফের অস্ত্র হাতে তুলে নেবে। নেতাদের দাবি, রাজ্যপাল আরাম্বাইদের বিরুদ্ধে কোনও আইনি ব্যবস্থা না নেওয়ার আশ্বাস দেন ও জানান, তারা নিজেদের উর্দিতে ঘুরতে পারেন। যদিও কুকিরা বলেছে, রাজ্যপাল এ ভাবে এক পক্ষের দাবিতে সম্মতি জানিয়ে কুকিদের প্রতি অবিচার করেছেন। কুকিদের পৃথক প্রশাসন না দিলে রাজ্যে শান্তি ফেরা সম্ভব নয়। তারা আর কখনও মেইতেইদের অধীনে থাকবে না।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Manipur Ajay Kumar Bhalla

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy