সরকারি স্কুলে শ্রেণিকক্ষ নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ২০০০ কোটি টাকা। অভিযোগ, সেই বিপুল পরিমাণ টাকা নয়ছয় করেছেন আম আদমি পার্টির দুই নেতা। ওই মামলার তদন্তে বুধবার সকালে বর্ষীয়ান আপ নেতা মণীশ সিসৌদিয়া ও সত্যেন্দ্র জৈনকে তলব করল দিল্লি পুলিশের দুর্নীতি দমন শাখা (এসিবি)। চলতি সপ্তাহেই হাজিরা দিতে হবে দু’জনকে।
গত ৩০ এপ্রিল দুই নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। দিল্লির প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সিসৌদিয়া আপ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। অন্য দিকে, আপ-প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নির্মাণকাজ পরিচালনাকারী সরকারি সংস্থা পিডব্লিউডি (পূর্ত বিভাগ)-এর দায়িত্বে ছিলেন সত্যেন্দ্র। এই দফতরের হাতেই ছিল সরকারি ভবন নির্মাণের ভার। তদন্তে নেমে দুই নেতাকেই তলব করেছে এসিবি। সত্যেন্দ্রকে ৬ জুন এবং সিসৌদিয়াকে ৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
তদন্তকারীদের অভিযোগ, আপ মসনদে থাকাকালীন ১২,০০০-এরও বেশি শ্রেণিকক্ষ এবং স্কুল ভবন নির্মাণে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছিল। এসিবির অভিযোগ, এই প্রকল্পের অধীনে দিল্লি জুড়ে প্রায় ১২,৭৪৮টি শ্রেণিকক্ষ এবং স্কুল ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু আর্থিক অনিয়ম, হিসাব- বহির্ভূত ভাবে অত্যধিক খরচ ইত্যাদি নানা বিষয় ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে। সব মিলিয়ে আনুমানিক ২০০০ কোটি টাকা নয়ছয় করা হয় বলে দাবি এসিবির। দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ৩৪ জন ঠিকাদার স্কুল ভবন নির্মাণের বরাত পেয়েছিলেন, তাঁরা সকলেই আপের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। অথচ সময়মতো কাজ শেষ হয়নি। শেষমেশ দেখা যায়, বাজেটের অনেক গুণ ছাপিয়ে গিয়েছে খরচ। সম্প্রতি কিছু বিজেপি নেতা অভিযোগ করেন, শ্রেণিকক্ষ নির্মাণে দুর্নীতির কারণে প্রায় পাঁচ গুণ বেড়ে গিয়েছিল খরচ। অথচ ব্যয় ৩২৬ কোটি টাকা বাড়লেও নতুন করে দরপত্র (টেন্ডার) ডাকা হয়নি। আরও অভিযোগ, নির্মাণকাজে আধা-স্থায়ী কাঠামো (এসপিএস) ব্যবহৃত হয়েছিল, যার গড় আয়ু ৩০ বছর। অথচ খাতায়কলমে খরচ দেখানো হয়েছিল রিইনফোর্সড সিমেন্ট কংক্রিট (আরসিসি) কাঠামোর সমান! এর পরেই তদন্তে নামে এসিবি।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, এর আগে আবগারি দুর্নীতি মামলাতেও নাম জড়িয়েছিল সিসৌদিয়ার। সত্যেন্দ্রের বিরুদ্ধেও বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। এ বার ২,০০০ কোটি টাকার শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ কেলেঙ্কারিতেও অভিযুক্ত হলেন এই দুই আপ নেতা। শুধু তা-ই নয়, অজ্ঞাতপরিচয় এক সরকারি আধিকারিক এবং এক ঠিকাদারও এই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ।