ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুরে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হল মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষ নেতা সোধি কান্নার। তাঁর মাথার দাম ছিল আট লক্ষ টাকা। গত শুক্রবার বিজাপুরের জঙ্গলে অভিযান চালিয়েছিল যৌথবাহিনী। ওই অভিযানেই নিহত হন তিনি। প্রাথমিক ভাবে নিহত মাওবাদীর পরিচয় জানা যায়নি। সোমবার পুলিশ তাঁর পরিচয় প্রকাশ্যে এনেছে।
মাওবাদীদের সশস্ত্র শাখা ‘পিপল্স লিবারেশন গেরিলা আর্মি’র (পিএলজিএ) একটি ব্যাটালিয়নের ডেপুটি কমান্ডার ছিলেন সোধি। তেলঙ্গানায় একাধিক মাওবাদী কার্যকলাপে যুক্ত ছিলেন তিনি। গত শুক্রবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বিজাপুরের জাতীয় উদ্যানে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। বাহিনীর কাছে খবর ছিল, ওই জঙ্গলে মাওবাদীদের তেলঙ্গানা রাজ্য কমিটি, জাতীয় উদ্যান কমিটি এবং পিএলজিএ-র একটি ব্যাটেলিয়নের নেতারা লুকিয়ে রয়েছেন। ওই অভিযানে গুলির লড়াইশেষে সোধির দেহ উদ্ধার করে যৌথবাহিনী। সেই সঙ্গে বেশ কিছু অস্ত্রও উদ্ধার হয়। একটি রাইফেল, একে-৪৭-এর ম্যাগাজ়িন এবং প্রচুর বিস্ফোরক পাওয়া যায় জঙ্গল থেকে।
বস্তুত, গত দেড় বছরে ছত্তীসগঢ়ের বস্তার অঞ্চলে দৃশ্যত কোণঠাসা হয়ে পড়েছে মাওবাদীরা। সোমবার বস্তারের আইজি পি সুন্দররাজ জানিয়েছেন, গত ১৮ মাসে এই এলাকা থেকে অন্তত ৪১৫ জন মাওবাদীর দেহ উদ্ধার হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন একাধিক শীর্ষ মাওবাদী নেতাও। যেমন মাওবাদী পলিটব্যুরো সদস্য রামচন্দ্র রেড্ডি ওরফে চলপতি, সাধারণ সম্পাদক নাম্বালা কেশব রাও ওরফে বাসবরাজু ওরফে গগন্না, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নরসিংহচলম ওরফে সুধাকর, চৈতন্য বেঙ্কট রবি ওরফে অরুণা-সহ একাধিক নেতা-নেত্রী সাম্প্রতিক সময়ে যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন:
তবে এর মধ্যেও মাওবাদীরা নিজেদের কার্যকলাপ এবং গ্রামবাসীদের ভয় দেখানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গত সপ্তাহে ‘পুলিশের চর’ সন্দেহে বিজাপুরের উসুর থানা এলাকায় এক যুবককে কুপিয়ে খুন করেছে মাওবাদীরা। পাঁচ জন সশস্ত্র মাওবাদী রাতে বাড়িতে ঢুকে টেনে-হিঁচড়ে বার করে ওই গ্রামবাসীকে কুপিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। তার আগে নিহতকে ‘পুলিশের চর’ বলে ঘোষণা করে তারা। গত মাসেও বিজাপুরের অন্য একটি গ্রামে একই ‘অভিযোগে’ তিনজনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছিল মাওবাদীদের সশস্ত্র শাখা পিএলজিএ।