অন্ধ্রপ্রদেশের আলুরি সীতারামরাজু জেলায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হলেন মাওবাদীদের শীর্ষনেতা মাডবী হিডমা। মঙ্গলবার সকালে অন্ধ্রপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ় এবং তেলঙ্গানা— এই তিন রাজ্যের সীমানায় থাকা মারেদুমিলির জঙ্গলে মাওবাদী শীর্ষনেতার উপস্থিতির খবর পেয়েই তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ এবং নিরাপত্তাবাহিনী। মাওবাদীদের দলটিকে ঘিরে ফেলে অভিযান চালায় বাহিনী। দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলির লড়াই শুরু হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই সংঘর্ষে হিডমা-সহ ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। গুলির লড়াই এখনও জারি বলে সূত্রের খবর।
অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশের ডিজি হরিশকুমার গুপ্ত জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে মাওবাদীদের সঙ্গে গুলির লড়াই শুরু হয়। দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ে মাওবাদীদের শীর্ষনেতা হিডমা-সহ ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। মাওবাদীদের ধরতে অভিযান চলছে। দীর্ঘ দিন ধরেই হিডমার খোঁজ চলছিল। অবশেষে মঙ্গলবার তাঁর নাগাল পায় বাহিনী। সূত্রের খবর, মৃতদের মধ্যে হিডমার স্ত্রী রাজে ওরফে রাজাক্কাও রয়েছেন। হিডমার মাথার দাম ছিল ৫০ লক্ষ টাকা। ২৬টিরও বেশি হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পিপল্স লিবারেশন গেরিলা আর্মির ১ নম্বর ব্যাটেলিয়নের প্রধান এই হিডমা। তার বয়স ৪০ বছর মতো। ছত্তীসগঢ়ের সুকমা জেলার জনজাতি অধ্যুষিত পুবর্তী গ্রামের বাসিন্দা তিনি। নব্বইয়ের দশকে যোগ দেন মাওবাদীদের সঙ্গে। মাওবাদী ব্যাটেলিয়নের প্রধান হিসাবে মহিলা-সহ প্রায় ১৮০ থেকে ২৫০ জনের দলকে নেতৃত্ব দিতেন তিনি। মাওবাদীদের দণ্ডকারণ্য বিশেষ আঞ্চলিক কমিটিরও সদস্যও ছিলেন হিডমা। গোয়েন্দাদের দাবি, সিপিআই (মাওবাদী) দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সব থেকে তরুণ সদস্য এই হিডমা। তবে তার সাম্প্রতিক কালের কোনও ছবিই নাকি পাওয়া যায় না। ভীম মাণ্ডবী খুনের মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। ২০১০ সালে দন্তেওয়াড়ায় সিআরপিএফের কনভয়ে হামলার নেতৃত্বে ছিলেন হিডমা। সেই হামলায় ৭৬ জন আধাসেনার মৃত্যু হয়েছিল। ২০১৩ সালে ঝিরাম ঘাঁটিতে হামলা চালান মাওবাদীরা। সেই হামলারও নেতৃত্বে ছিলেন হিডমা। সেই হামলায় কংগ্রেসের কয়েক জন শীর্ষনেতা-সহ ২৭ জন নিহত হয়েছিলেন। এ ছাড়াও ২০২১ সালে সুকমা-বিজাপুরে যে মাওবাদী হামলা হয়, তাতেও মূল ভূমিকা ছিল হিডমার। সেই হামলায় নিরাপত্তাবাহিনীর ২২ জওয়ানের মৃত্যু হয়েছিল।