Advertisement
E-Paper

আপাতত অভিযান বন্ধ রাখুন, আত্মসমর্পণের জন্য সময় দিন! সরকারের উদ্দেশে চিঠি লিখে আবেদন মাওবাদী নেতৃত্বের

গত সপ্তাহেই অন্ধ্রপ্রদেশে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষনেতা মাডবী হিডমা নিহত হন। গত কয়েক মাসে মাওবাদীদের আত্মসমর্পণের ঢল নেমেছে বিভিন্ন প্রভাবিত রাজ্যে। একই সঙ্গে চলছে মাওবাদীদমন অভিযানও। এরই মধ্যে আত্মসমর্পণের জন্য সরকারের কাছে সময় চাইলেন মাওবাদীরা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:১২
জঙ্গলের মধ্যে মাওবাদী সংগঠনের সশস্ত্র সদস্য।

জঙ্গলের মধ্যে মাওবাদী সংগঠনের সশস্ত্র সদস্য। — ফাইল চিত্র।

আত্মসমর্পণের সুযোগ করে দিতে আপাতত মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান স্থগিত রাখা হোক। প্রভাবিত তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের উদ্দেশে এমনটাই আর্জি জানালেন মাওবাদী নেতৃত্ব। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাওবাদীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযান বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা।

আগামী বছরের ৩১ মার্চের মধ্যে দেশ থেকে মাওবাদ নির্মূল করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত কয়েক মাসে মাওবাদী প্রভাবিত এলাকাগুলিতে আত্মসমর্পণের ঢল নেমেছে। একই সঙ্গে চলছে যৌথ বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানও। গত সপ্তাহেই অন্ধ্রপ্রদেশে নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মাওবাদীদের অন্যতম শীর্ষনেতা মাডবী হিডমা নিহত হন। তার কয়েক দিন পরেই মাওবাদী নেতৃত্বের এই আর্জি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।

মাওবাদীদের মহারাষ্ট্র-মধ্যপ্রদেশ-ছত্তীসগঢ় স্পেশ্যাল জ়োনাল কমিটির নেতৃত্ব এই চিঠিটি লিখেছেন গত ২২ নভেম্বর। হিডমা নিহত হওয়ার ঠিক তিন দিন পরেই। সোমবার সেই চিঠি প্রকাশ্যে আসে। তাতে সই রয়েছে স্পেশ্যাল জ়োনাল কমিটির মুখপাত্র অনন্তের। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাই এবং মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদবের কাছে তাঁদের আর্জি, আত্মসমর্পণের প্রক্রিয়া আরও সহজ করার জন্য আপাতত ওই তিন রাজ্যে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান বন্ধ রাখা হোক। ‘অস্ত্র সংগ্রাম’ অস্থায়ী ভাবে স্থগিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।

শুধু সোনুই নন, সাম্প্রতিক সময়ে মাওবাদীদের বেশ কয়েক জন শীর্ষনেতা আত্মসমর্পণ করেছেন। গত মাসের শেষে দিকে মাওবাদীদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পুল্লুরি প্রসাদ রাও আত্মসমর্পণ করেন হায়দরাবাদে। তেলঙ্গানার ওই ঘটনার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন অনন্ত। তিনি লিখেছেন,“এমএমসি (মহারাষ্ট্র-মধ্যপ্রদেশ-ছত্তীসগঢ় স্পেশ্যাল জ়োনাল কমিটি)-র সদস্যেরা অস্ত্রসমর্পণ করে সরকারি পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় যোগ দিতে চাই। তবে তিন রাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ করছি, আমাদের একটু সময় দেওয়া হোক।’ মাওবাদী নেতার দাবি, তাঁরা ‘গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতা’য় বিশ্বাস করেন। তাই সংগঠনের প্রতিটি শাখার অন্যদের সঙ্গে পরামর্শ করা বাধ্যতামূলক। সেই কারণেই আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় চেয়েছেন অনন্ত। তিনি লিখেছেন, “ঐক্যবদ্ধ ভাবে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছোতে কিছুটা সময় লাগবে। অন্য সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে তাঁদের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমাদের সময় দরকার।’’

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ইতিমধ্যে দেশ থেকে মাওবাদকে নির্মূল করার জন্য সময়সীমা জানিয়ে দিয়েছেন। ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে এ বিষয়ে বার বার স্মরণ করিয়ে দেন। এ অবস্থায় মাওবাদী নেতা অনন্তের দাবি, তাঁরা যে সময়টুকু চাইছেন, তা শাহের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যেই রয়েছে। এই সময়টুকু তিন রাজ্যের সরকারকে ‘সংযম দেখানো’ এবং নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযান স্থগিত রাখার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি এ-ও লিখেছেন, আগামী ২ ডিসেম্বর মাওবাদীরা ‘পিপল্‌স লিবারেশন গেরিলা আর্মি’ সপ্তাহ পালন করবে না। নিজেদের এই বার্তার বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দাবি অনন্তের। এই সময় চাওয়ার নেপথ্যে কোনও ‘গোপন উদ্দেশ্য’ নেই বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন ওই মাওবাদী নেতা।

Maoist Chhattisgarh Maharashtra Madhya Pradesh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy