Advertisement
E-Paper

আমার স্বামীকে যখন মারছিল, তখন কোথায় ছিল পুলিশ? প্রশ্ন মরিয়মের

মরিয়মদের বাড়ির সামনে মোতায়েন হয়েছে পুলিশ। গোটা গ্রামই কার্যত ছয়লাপ পুলিশে। কান্না জড়ানো গলায় মরিয়মের আক্ষেপ, ‘‘এখন পুলিশ এসে কী লাভ? আমার স্বামীকে যখন ওরা মারছিল, তখন কোথায় ছিল পুলিশ?’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৭ ০৩:৫৯
নজরদারি: রামগড়ের মনুয়া গ্রামে মোতায়েন বিশাল পুলিশবাহিনী। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।

নজরদারি: রামগড়ের মনুয়া গ্রামে মোতায়েন বিশাল পুলিশবাহিনী। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র।

সাদা চাদরে ঢাকা নিথর দেহটার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়েছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের মরিয়ম খাতুন। মাঝেমধ্যেই ডুকরে উঠছেন। মরিয়মদের বাড়ির সামনে মোতায়েন হয়েছে পুলিশ। গোটা গ্রামই কার্যত ছয়লাপ পুলিশে। কান্না জড়ানো গলায় মরিয়মের আক্ষেপ, ‘‘এখন পুলিশ এসে কী লাভ? আমার স্বামীকে যখন ওরা মারছিল, তখন কোথায় ছিল পুলিশ?’’

এই প্রশ্নটা শুধু রামগড়ের আলিমুদ্দিনের স্ত্রী মরিয়মের একার নয়, এই প্রশ্নটাই ঘুরছে মনুয়া গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যেও। গ্রামের চারদিকে পুলিশি মোতায়েন দেখে মনে হয় গ্রামে কোনও ভিআইপি আসছেন। গ্রামেরই এক বাসিন্দা বাবলু হোসেন প্রশ্ন তোলেন, ‘‘আলিমকে তো কোনও নির্জন জায়গায় মারা হয়নি। ভরদুপুরে রাস্তার উপরে মারা হয়েছে। কয়েক পা এগোলেই বাজারটাঁড় মোড়। সেখান থেকে পুলিশ আসতে এত সময় লাগল?’’

খাপরার চালের দু’কামরার বাড়িতে স্ত্রী মরিয়াম ও ছয় ছেলেমেয়েকে নিয়ে ছিল আলিমুদ্দিনের সংসার। সংসারের রোজগেরে বলতে তিনিই ছিলেন। তাঁর বছর দশেকের ছেলে শাহবাজ বুঝতে পারছে এই নৃশংস ঘটনার কথা। তার কথায়, ‘‘বাবা বলল দুপুরে বাড়ি এসে খাবে। অপেক্ষায় ছিলাম। বাবা আর ফিরলই না!’’

কাঁচে ঢাকা গাড়িতে আলিমুদ্দিনের দেহ যখন ফিরল তখন মাঝরাত। আলিমুদ্দিনের দেহ গ্রামে ঢোকার আগেই গ্রাম ঘিরে ফেলেছিল পুলিশ। আজ বিকেলে তাঁর দেহ কবর দেওয়ার পরেও গ্রামের পুলিশি পাহারা ওঠেনি। আলিমুদ্দিনের পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ঠিকা শ্রমিক থেকে শুরু করে সংসার চালানোর জন্য যখন যা কাজ পেতেন, তাই করতেন তিনি। মরিয়মের দাবি, ‘‘আমার স্বামী কখনও মাংস কেনাবেচার ব্যবসা করেননি। ওঁর গাড়িতে মাংস কী ভাবে এল বুঝতে পারছি না!’’

আরও পড়ুন: নতুন চশমায় সড়গড় হতেও তো দিন দু’য়েক সময় লাগে: মোদী

ছয় সন্তানকে নিয়ে এখন সংসার চালানোই মরিয়মের কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। তাঁর কথায়, ‘‘খুব হিসেবি ছিলেন আমার স্বামী। ছোটখাটো কাজ করেও আস্তে আস্তে টাকা জমিয়ে একটা পুরনো মারুতি ভ্যান কিনেছিলেন। গাড়িটা থাকলেও ব্যবসার কাজে লাগানো যেত। সেটাও তো ওরা পুড়িয়ে দিল।’’

এ দিকে, রামগড়ের ঘটনার ১৩ জন অভিযুক্তদের মধ্যে এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস বলেন, ‘‘রামগড়ের ঘটনার দ্রুত তদন্তের জন্য চারটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে সিআইডি-রও একটি দল রয়েছে। ফার্স্ট ট্রাক কোর্টের মাধ্যমে ধৃতদের বিচার হবে।’’

রাজ্য পুলিশের ডিজি ডি কে পাণ্ডে জানান, দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, গিরিডির উসমান আনসারির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে।

Ramgarh Alimuddin Lynching Jharkhand আলিমুদ্দিন ঝাড়খণ্ড
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy