Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
parental status

বিবাহবিচ্ছেদ হলেও সন্তানের কাছে পিতা-মাতার সম্পর্ক বদলায় না, জানাল আদালত

বিচারপতি জানিয়েছেন, মহিলা এবং আবেদনকারীর মধ্যে সম্পর্ক যতই তিক্ত হোক না কেন, তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটলেও তা শিশুর পিতা হিসাবে তাঁর পরিচয় বদলে দিতে পারে না।

Marriage Dissolution Doesn\\\'t Efface Status Of Child\\\'s Parents: Says Delhi High Court

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৪:২৩
Share: Save:

বিয়ে না টিকতেই পারে, তবে তাতে সন্তানের উপর বাবা-মার অধিকার খর্ব হয় না। বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে গেলেও তার উপর কোনও প্রভাব পড়ে না। একটি মামলার শুনানিতে এমনটাই জানাল দিল্লি হাই কোর্ট।

বিবাহবিচ্ছেদের পরেও স্কুলে ভর্তির ফর্মে পুত্রের পিতার জায়গায় তাঁরই নাম রাখার আর্জি নিয়ে এক ব্যক্তি আদালতের দ্বারস্থ হন। তিনি জানান, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী ফের বিয়ে করেছেন। কিন্তু, ছেলের স্কুলে ভর্তির ফর্মে মায়ের নামের জায়গায় নিজের নাম রাখলেও বাবার নামের জায়গায় দ্বিতীয় স্বামীর নাম রেখেছেন মহিলা। এ ব্যাপারে আদালত জানিয়েছে, আবেদনকারী যখন জীবিত, তখন ছেলের স্কুলে ভর্তির ফর্মে বাবার নাম মুছে ফেলে মায়ের দ্বিতীয় স্বামীর নাম দেওয়ার কোনও যুক্তি নেই। মা হিসাবে তাঁর নিজের নাম ছেলের স্কুলের রেকর্ডে রাখার অধিকার রয়েছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সন্তানের পিতা হিসাবে নথিতে আবেদনকারীর নাম রাখার অধিকার কেড়ে নিতে পারেন তিনি।

২০০৬ সালের মার্চ মাসে জন্ম হয় শিশুটির। ২০১২ সালে প্রথম স্কুলে ভর্তি হয়েছিল। ২০১৬ সালের মার্চ পর্যন্ত দু’টি স্কুলে পড়াশোনা করেছিল সে। সেই দু’টি জায়গাতেই ছেলেটির পিতা হিসাবে যাবতীয় নথিতে মামলাকারীর নাম নথিভুক্ত করা ছিল।

এর মধ্যেই ২০১৫ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয়ে যায় দম্পতির। আবেদনকারীর অভিযোগ, ২০১৬ সালের পর যে যে স্কুলে ভর্তি হয় শিশুটি, সেগুলির রেকর্ডে তাঁর নাম নেই। বদলে, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর দ্বিতীয় স্বামীর নাম শিশুটির অভিভাবক হিসাবে রয়েছে।

পাল্টা হলফনামায় মহিলা জানান, আবেদনকারী শিশুটির জন্মদাতা পিতা হলেও তাঁদের সম্পর্ক এতটাই তিক্ত ছিল যে তিনি চান না, আবেদনকারীর নাম তাঁর নাবালক পুত্রের সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত থাকুক। তিনি জানান, তাঁর বর্তমান স্বামী শিশুটিকে তাঁর নিজের পুত্র হিসাবে গ্রহণ করেছেন এবং পিতার স্নেহেই তাকে মানুষ করছেন তিনি।

সে কথা শোনার পর আদালত জানিয়েছে, এটা স্পষ্ট যে আইনের বদলে আবেগ দ্বারাই পরিচালিত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর যুক্তি খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি বলেছেন, ‘‘মহিলা এবং আবেদনকারীর মধ্যে সম্পর্ক যতই তিক্ত হোক না কেন, তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটলেও তা শিশুর পিতা হিসাবে তাঁর পরিচয় বদলে দিতে পারে না।’’

হাই কোর্ট আরও জানিয়েছে, বিবাহবিচ্ছেদ উল্লিখিত বিবাহের ফলে জন্ম নেওয়া সন্তানের ‘পেরেন্টাল স্ট্যাটাস’-এর উপর প্রভাব ফেলে না। বিচারপতি সি হরি শঙ্কর সাফ জানিয়েছেন, শিশুটির বাবা হিসাবে স্কুল রেকর্ডে তাঁর নাম রাখার জন্য আবেদনকারীর আর্জি প্রত্যাখ্যান করা যাবে না।

এর পরেই আদালত নির্দেশ দিয়েছে, শিশুটির স্কুলের নথিতে মায়ের নামের পাশাপাশি বাবার নাম হিসাবে মামলাকারীর নামও রাখতে হবে। সমস্ত নথিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছে দিল্লি হাই কোর্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE