বালেশ্বরে কলেজছাত্রীর মৃত্যু ঘিরে উত্তপ্ত ওড়িশা। বুধবার সকালে বিধানসভার সামনে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বহু মানুষ। পরিস্থিতি ক্রমে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দিতে বিধানসভার সামনে বিশাল পুলিশবাহিনী পৌঁছোয়। ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বিক্ষুব্ধেরা। বাধা দেয় পুলিশ। তার পরই পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় তাঁদের। বিক্ষুব্ধ জনতাকে হটাতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। ব্যবহার করা হয় জলকামানও।
অন্য দিকে, বালেশ্বরে বুধবার আট ঘণ্টার জন্য বন্ধ ডেকেছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দল (বিজেডি)। ভুবনেশ্বরে সচিবালয় লোকসেবা ভবনের সামনে বিজেডির কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখাতে পারেন, এই আশঙ্কায় নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছে বিজেডি। শুধু তা-ই নয়, এই ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তেরও দাবি জোরালো হতে শুরু করেছে রাজ্যে।
বুধবার সকাল থেকেই বালেশ্বরের পথে নেমেছেন বিজেডির কর্মী-সমর্থকেরা। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বন্ধ ডেকেছে বিজেডি। জেলার রাস্তায় রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। কোথাও টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বিজেডির কর্মীরা। আর এই বন্ধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে বালেশ্বরে। দোকান, বাজার, অফিস বন্ধ। রাস্তায় যান চলাচলও থমকে গিয়েছে। নবীনের দলের হুঁশিয়ারি, যদি সরকার এই ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ না করে, তা হলে বিক্ষোভের আঁচ রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জুলাই কলেজের ভিতরেই গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন এক ছাত্রী। তাঁর অভিযোগ ছিল, বিএডের বিভাগীয় প্রধান কুপ্রস্তাব দিচ্ছিলেন। সেই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাঁকে নানা ভাবে হেনস্থা করছিলেন। মানসিক ভাবে তিনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষকে বার বার জানালেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ। তদন্ত করে কলেজের অভ্যন্তরীণ কমিটি জানিয়ে দেয়, এই ঘটনায় কাউকে দোষী পাওয়া যায়নি। কলেজের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষের ঘরের সামনে আত্মঘাতী হন কলেজছাত্রী। এই ঘটনার পর অভিযুক্ত অধ্যাপক এবং অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।