Advertisement
E-Paper

নাগরিকত্ব প্রমাণে কোনও জটিল নথি দিতে হবে না, সবটাই সরল, বলল কেন্দ্র

এনআরসি নিয়ে বিভ্রান্তি কাটাতে টুইটে নানা প্রশ্নের জবাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেরচাপে পড়েই এনআরসি নিয়ে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিতে এগিয়ে আসতে বাধ্য হল অমিত শাহের মন্ত্রক।

সিএএ এবং এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।—ছবি পিটিআই।

সিএএ এবং এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।—ছবি পিটিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৯ ২২:৩৫
Share
Save

এনআরসি কী ও কেন, এই প্রশ্নে উত্তাল গোটা দেশ। প্রতিবাদ-আন্দোলনের মাত্রা এমনটাই দাঁড়িয়েছে, যা বিজেপি এবং কেন্দ্রের কল্পনার মধ্যেও ছিল না। চাপে পড়েই এনআরসি নিয়ে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দিতে এগিয়ে আসতে বাধ্য হল অমিত শাহের মন্ত্রক। এনআরসি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যা বলল,

প্রশ্ন: সিএএ এবং এনআরসি-র বিষয়ে ভারতীয় মুসলমানদের দুশ্চিন্তার কোনও কারণ রয়েছে কি?

উত্তর: যে কোনও ধর্মাবলম্বী ভারতীয় নাগরিকেরই সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই।

প্রশ্ন: এনআরসি কি কোনও বিশেষ ধর্মাবলম্বী মানুষের প্রতি প্রযোজ্য?

উত্তর: না, কোনও ধর্মের সঙ্গে এনআরসি-র কোনও লেনদেন নেই। এনআরসি ভারতের সমস্ত নাগরিকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এটি একটি নাগরিক রেজিস্টার, যেখানে প্রত্যেকের নামই নথিভুক্ত হওয়ার কথা।

প্রশ্ন: ধর্মীয় কারণে কি কারও নাম এনআরসি থেকে বাদ পড়তে পারে?

উত্তর: না। এনআরসি-র সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। এনআরসি যখন প্রয়োগ হবে, তখন তা ধর্মের ভিত্তিতে হবে না, তা ধর্মের নিরিখে প্রযোজ্যও হবে না। কোনও বিশেষ ধর্মের মানুষ বলে কারওকে এনআরসি থেকে বাদ দেওয়াও হবে না।

প্রশ্ন: এনআরসি প্রয়োগের সময় আমাদের কি ভারতীয়ত্বের প্রমাণ দাখিল করতে হবে?

উত্তর: প্রথমেই জেনে রাখা ভাল, জাতীয় স্তরে এনআরসি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ঘোষিত হয়নি। এটি যদি প্রযুক্ত হয়, তা হলে কারওকে ভারতীয়ত্বের প্রমাণ দাখিল করতে বলা হবে, এমনও নয়। এনআরসি হল নাগরিক রেজিস্টারে নাম নথিভুক্ত করার এক স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। যে ভাবে আমরা আধার কার্ড, ভোটার তালিকায় নিজেদের পরিচয়পত্র দাখিল করে নাম নথিভুক্ত করেছি, একই ভাবে একই প্রকারের নথি দাখিল করে এনআরসি-র ক্ষেত্রেও নাম নথিভুক্ত করতে হবে।

আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব প্রমাণে শুধু জন্মস্থান বা তারিখের নথি চাই, জানাল কেন্দ্র

প্রশ্ন: এনআরসি কি সিএএ-র অংশ?

উত্তর: না, সিএএ একটি পৃথক আইন এবং এনআরসি একটি পৃথক প্রক্রিয়া। সংসদে পাশ হওয়ার পরে সিএএ সারা দেশে প্রযোজ্য হয়েছে, যেখানে এনআরসি-র নিয়ম ও কার্যপ্রণালী এখনও পর্যন্ত স্থির হয়নি। আসমে যে এনআরসি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আদেশক্রমে এবং ‘অসম চুক্তি’-র আদেশে।

প্রশ্ন: নাগরিকত্ব নির্ধারিত হবে কী ভাবে? এই নির্ধারণ প্রক্রিয়া কি সরকারের হাতেই থাকবে?

উত্তর: কোনও ব্যক্তির নাগরিকত্ব ২০০৯ সালের নাগরিকত্ব নিয়মাবলির দ্বারা নির্ধারিত হয়। এই নিয়মাবলি ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের ভিত্তিতে রচিত। এই নিয়মাবলি প্রত্যকের সামনেই প্রকাশ্য রাখা হয়েছে। মূলত পাঁচটি প্রক্রিয়ায় কোনও ব্যক্তি ভারতের নাগরিক হতে পারেন—

১) জন্মের ভিত্তিতে প্রাপ্ত নাগরিকত্ব

২) উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত নাগরিকত্ব

৩) রেজিস্ট্রেশনের দ্বারা প্রাপ্ত নাগরিকত্ব

৪) রাষ্ট্র দ্বারা প্রদত্ত নাগরিকত্ব

৫) কোনও সংস্থার মাধ্যমে প্রাপ্ত নাগরিকত্ব

আরও পড়ুন: হানিট্র্যাপে পড়ে পাকিস্তানের চরবৃত্তি, সাত ভারতীয় নৌসেনা গ্রেফতার

প্রশ্ন: ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য কি আমাদের পিতা-মাতার জন্মপঞ্জির বিশদ পেশ করতে হবে?

উত্তর: এ ক্ষেত্রে নিজের জন্মপঞ্জিই যথেষ্ট। অর্থাৎ, জন্মতারিখ, জন্মমাস, বছর ও জন্মস্থানের বিশদ দাখিল করতে হবে। যদি কারোর এই বিশদ না থেকে থাকে তা হলে তাঁর পিতা-মাতার জন্মপঞ্জির বিশদ পেশ করতে হতে পারে। কিন্তু পিতা-মাতার জন্মপঞ্জি দাখিল করা বাধ্যতামূলক নয়। ঠিক কী কী নথি এমন ক্ষেত্রে আবশ্যিক, তা এখনও পর্যন্ত নির্ধারিত হয়নি। সম্ভবত ভোটার কার্ড, পাসপোর্ট, আধার, লাইসেন্স, সরকার কর্তৃক প্রদত্ত বাড়ি অথবা অন্য সম্পত্তির দলিল গ্রাহ্য করা হবে। এই তালিকায় এমন কোনও নথি থাকবে না, যাতে কোনও ভারতীয় নাগরিককে অহেতুক বিড়ম্বনার মধ্যে পড়তে হয়।

প্রশ্ন: এতে কি আমাদের ১৯৭১ সালের আগেকার অস্তিত্ব সংক্রান্ত কোনও প্রমাণ দিতে হবে?

উত্তর: না। প্রাক-১৯৭১ কোনও নথি এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন নেই। কারওকে নিজের বা পিতা-মাতার জন্মের শংসাপত্র বা ওই জাতীয় নথি পেশ করতে হবে না। এটি কেবলমাত্র অসমের এনআরসি-র জন্য প্রযোজ্য, যা ‘অসম অ্যাকর্ড’ এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারা নির্ধারিত। দেশের বাকি অংশের জন্য এনআরসি প্রক্রিয়া ২০০৩ সালের নাগরিকত্বের নিয়মাবলি (রেজিস্ট্রেশন অব সিটিজেনস এবং জাতীয় পরিচয়পত্র বিলি)-র সাপেক্ষে নির্ধারিত এক স্বতন্ত্র প্রক্রিয়া।

প্রশ্ন: নাগরিক পরিচয় প্রমাণ যদি এতটাই সহজ একটি প্রক্রিয়া হয়ে থাকে, তা হলে কেন অসমের ১৯ লক্ষ মানুষ এনআরসি থেকে বাদ পড়ছেন?

উত্তর: অনুপ্রবেশ অসমের এক পুরনো সমস্যা। আরও সঠিক ভাবে বললে, ১৯৮৫ সালে রাজীব গাঁধীর প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিতকরণের জন্য একটি আন্দোলন ঘটে। তা থেকেই এনআরসি প্রস্তুতের একটি চুক্তি হয়, যার ঊর্ধ্বতম সময়সীমা ছিল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ।

প্রশ্ন: এনআরসি-র সময়ে কি এমন কোনও পুরনো নথি পেশ করতে বলা হবে, যা জোগাড় করা দুরূহ?

উত্তর: তেমন কোনও কথা নেই। পরিচয়পত্র হিসেবে সাধারণ নথিই যথেষ্ট। জাতীয় স্তরে এনআরসি ঘোষিত হলে এর জন্য প্রয়োজনীয় নিয়মাবলি এমন ভাবেই প্রস্তুত করা হবে যাতে কেউ বিপদে না পড়েন। নাগরিকদের বিড়ম্বনায় ফেলার কোনও উদ্দেশ্য সরকারের নেই।

প্রশ্ন: অক্ষর পরিচয়হীন কোনও ব্যক্তির যদি প্রয়োজনীয় নথি না থাকে, এমন ক্ষেত্রে কী হবে?

উত্তর: এমন ক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকরা সাক্ষী হিসেবে কারওকে উপস্থিত করার জন্য বলতে পারেন। ওই ব্যক্তির প্রতিবেশী বা সম্প্রদায়ের সাক্ষ্যও গ্রাহ্য হবে। এমন ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়াই অনুসৃত হবে। কোনও ভারতীয় নাগরিককে বিড়ম্বনায় ফেলা হবে না।

প্রশ্ন: এ দেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ গৃহহীন, দরিদ্র এবং শিক্ষার আলো থেকে দূরে আছেন। তাঁদের অনেকের কোনও পরিচয়পত্রও নেই। তাঁদের কী হবে?

উত্তর: এমন ধারণা করা ভুল যে তাঁরা এনআরসি থেকে বাদ পড়বেন। তাঁরা প্রত্যেকেই সরকারের কোনও না কোনও কল্যাণকর প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। সেই প্রকল্পের নথির ভিত্তিতেই তাঁদের পরিচিতি বিবেচ্য হবে।

প্রশ্ন: রূপান্তরকামী, নিরীশ্বরবাদী, আদিবাসী, দলিত, নারী ও ভূমিহীন ব্যক্তিদের যদি প্রয়োজনীয় নথি না থাকে, তাঁরা কি এনআরসি থেকে বাদ পড়বেন?

উত্তর: না, এনআরসি প্রযোজ্য হলে এমন মানুষের কোনও সমস্যা হবে না।

Ministry of Home Affairs NRC CAA Citizenship Amendment Act Assam Twitter কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে আপনার সাবস্ক্রিপশন আপনাআপনি রিনিউ হয়ে যাবে

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।