Advertisement
E-Paper

মধ্যরাতে ‘অভ্যুত্থান’ সিবিআই দফতরে, কী ভাবে কী হল...

সিবিআইয়ের গৃহযুদ্ধ নিয়ে তোলপাড় গোটা দেশ

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৮ ১৩:৫১
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা রাতভর দফায় দফায় তল্লাশির পর যেভাবে দুই শীর্ষ কর্তাকে ছুটিতে পাঠিয়ে নাগেশ্বর রাওকে দায়িত্বে আনা হল, তা ‘অভ্যুত্থান’-এর মতোই। মঙ্গলবার রাত থেকেই পর পর তল্লাশিতে রুদ্ধশ্বাস নাটকের কেন্দ্র হয়ে উঠল সিবিআই দফতর।

সংস্থার অভ্যন্তরে লড়াই চলছিলই। সরকারি সিদ্ধান্তের পর তা এ বার পৌঁছে গেল শীর্ষ আদালতেও। দুই শীর্ষ কর্তাকে ছুটিতে পাঠানোর সরকারি সিদ্ধান্তের পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন সংস্থার প্রাক্তন অধিকর্তা অলোক বর্মা। সেই সংক্রান্ত শুনানি হবে শুক্রবার। এ দিন সকালে অলোক বর্মার আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ অভিযোগ আনলেন, নাগেশ্বর রাওকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আস্থানাকে বাঁচাতেই।

মঙ্গলবার গভীর রাতেই সিবিআই অধিকর্তা অলোক বর্মা এবং বিশেষ অধিকর্তা রাকেশ আস্থানার অফিস ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছিল। তল্লাশি চালানো হয় তাঁদের অফিসেও। মঙ্গলবার গভীর রাতেই সরকারি ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, নাগেশ্বর রাও এখন থেকে সিবিআই অধিকর্তার দায়িত্বভার সামলাবেন। বুধবার সকাল ৭টা নাগাদ নাগেশ্বর রাও সিবিআই সদর দফতরে।

মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে শুরু হয়েছে তল্লাশি। রাত ১টা নাগাদ দক্ষিণ দিল্লির লোদি রোডে সিবিআইয়ের সদর দফতর ঘিরে ফেলে দিল্লি পুলিশ। ১২.৪৫ মিনিট নাগাদ শুরু হয়েছিল প্রস্তুতি। ১.৪৫ মিনিট নাগাদ কর্ডন করে নিয়ে আসা হয় রাওকে। রাত ২টো নাগাদ অন্তর্বর্তী অধিকর্তা হিসাবে রাও দায়িত্ব নেন। তার পরই সিল করে দেওয়া হয় বর্মার অফিস। বর্মা ও আস্থানাকে অফিসে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাঁদের ব্যক্তিগত গাড়ি চালক ব্যবহারের সুবিধাও তুলে নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: যুদ্ধক্ষেত্র সিবিআই: ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হল বর্মা, আস্থানা দু’জনকেই​

সিল করে দেওয়া হয়েছে সিবিআইয়ের অফিস। কর্মীদের সাময়িকভাবে সকালেই ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

সিবিআইয়ের সদর দফতরের ১১তলা ও ১২ তলায় তল্লাশি শুরু হয় সকাল থেকেই। অভিযানের সময় কাউকে ভিতরে প্রবেশ করতেও দেওয়া হয়নি। বুধবার প্রাক্তন অধিকর্তা বর্মা ও আস্থানার অফিস সিল করে রাখা হয়। সকালে অন্য কর্মীরা দফতরে এলে তাঁদেরও দুপুর দু’টোর পর আসতে বলা হয়।

নাগেশ্বর রাও দায়িত্ব হাতে নিয়েই ডেপুটি ইনস্পেক্টর জেনারেল মণীশ সিন‌্হা-সহ আস্থানার গোটা টিমকে সরিয়ে দেন। তদন্তকারী অফিসার অজয় বাসিকে পোর্ট ব্লেয়ারে বদলি করে দেওয়া হয়েছে এ দিন। গত এক মাস ধরে সিবিআই শীর্ষকর্তাদের মধ্যে কার্যত গোষ্ঠী লড়াই চলছিল। ঘুষকাণ্ডে আস্থানার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। আস্থানাকে সমস্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে নোটিসও জারি করেন অলোক বর্মা।

আরও পড়ুন: #মিটু: ইন্টারনেটে বিচার নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে, বার্তা রহমানের​

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে ডিভিশন বেঞ্চে অলোক বর্মার দাখিল করা মামলাটির শুনানি হবে শুক্রবার। বুধবার প্রশান্তভূষণ ও বর্মা সকাল বেলায় পৌঁছে যান এক নম্বর আদালতে। বর্মা দাবি করেন, অন্যায় ভাবে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সূরজেওয়ালা দাবি করেন, গণতন্ত্র বলে কিছু নেই। কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে সিবিআই-এর স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে।

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সিবিআইকে- ‘বিবিআই’ বলে একটি টুইট করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বলে কটাক্ষ করেন তিনি।

কংগ্রেস মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারিও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে টুইটারে তোপ দাগেন এ দিন। তার উত্তরে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র জিভিএল নরসিংহ রাও বলেন, ‘‘রাহুল গাঁধী কদর্য রাজনীতি শুরু করেছেন।বরং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই গণতন্ত্র রক্ষার্থে সচেষ্ট।’’ সিপিএম-এর সর্বভারতীয় সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও অভিযোগ করেন, সরকারের সিদ্ধান্ত বেআইনি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল টুইট করেন, মোদী সরকার কী লুকানোর চেষ্টা করছে? রাফালে চুক্তির সঙ্গে বর্মাকে সরানোর সম্পর্ক রয়েছে বলেও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

রাষ্ট্রীয় জনতা দল নেতা, লালুপ্রসাদ যাদব পুত্র তেজস্বী যাদব কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে (সিবিআই) কটাক্ষ করে টুইট করেছেন,‘ কেজড ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন’ ও ‘কোরাপ্ট ব্রোকার্স অব ইন্ডিয়া’ বলে।

মুখ্য ভিজিল্যান্স কমিশনার কে ভি চৌধরি মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রীর কাছে বর্মা ও আস্থানার ‘বাধ্যতামূলক ছুটি’ সংক্রান্ত বিবৃতি পাঠিয়েছিলেন। সিবিআইয়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে যাতে প্রশ্ন না ওঠে, নাগেশ্বর রাওকে সেই জন্যই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে অনুমান রাজনৈতিক মহলের। তেলঙ্গানার ওয়ারাঙ্গেল জেলার বাসিন্দা নাগেশ্বর ১৯৮৬ সালের আইপিএস অফিসার।

ভোটের খবর, জোটের খবর, নোটের খবর, লুটের খবর- দেশে যা ঘটছে তার সেরা বাছাই পেতে নজর রাখুন আমাদের দেশ বিভাগে।

Supreme Court Rakesh Ashthana CBI Narendra Modi Law
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy