Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
National news

বেআইনি টেলিফোন এক্সচেঞ্জ থেকে এ দেশে ‘চর’ সামলাতো আইএসআই!

ওই টেলিফোন এক্সচেঞ্জগুলির মাধ্যমে গোপনে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ভারতে গুপ্তচরবৃত্তি চালাত বলে এ দেশের সেনা গোয়েন্দা বিভাগের দাবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৭ ১৮:৪৫
Share: Save:

মোবাইল টেলিফোনে ভেসে উঠছে স্থানীয় নম্বর। কিন্তু, ফোন আসছে বিদেশ থেকে। সেনা বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ থেকে খবর পেয়ে মহারাষ্ট্রের লাতুর থেকে এমন তিনটি বেআইনি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের খোঁজ পেল পুলিশ।

ওই টেলিফোন এক্সচেঞ্জগুলির মাধ্যমে গোপনে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই ভারতে গুপ্তচরবৃত্তি চালাত বলে এ দেশের সেনা গোয়েন্দা বিভাগের দাবি। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে শঙ্কর বিরাদর এবং রবি সাবদে নামে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় কোনও পাক-যোগ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

শুক্রবার রাতে মহারাষ্ট্র এটিএস এবং টেলিকম সংস্থা যৌথ ভাবে লাতুর জেলার প্রকাশনগর, দেওনি তালুকা এবং চাকুর তালুকার থেকে এমন তিনটি বেআইনি টেলিফোন এক্সচেঞ্জে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তিনটি জায়গা থেকে সব মিলিয়ে ৯৬টি সিমকার্ড, কম্পিউটার এবং তিনটি কল ট্রান্সফারিং মেশিন বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: আইএস-র হাতে ৩৯ পণবন্দি ভারতীয় জীবিত, জানাল বিদেশমন্ত্রক

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বিদেশ থেকে কেউ ফোন করলেও যদি মোবাইলে স্থানীয় নম্বর ফুটে ওঠে, তা হলে বিদেশ থেকে কে ফোন করেছিলেন তা অতি বড় প্রয়োজনেও তদন্তকারী সংস্থা জানতে পারে না। এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই ভারতে থাকা তাদের চরেদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর গোপন তথ্য পাচার করে দেয় পাকিস্তানে। এই ক্ষেত্রেও তেমনই হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন পুলিশ গোয়েন্দারা। আর তা যদি না হয় তা হলেও এই বেআইনি ভাবে চালু থাকা টেলিকম এক্সচেঞ্জের ফলে ব্যাপক হারে দেশের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে টেলিকম সূত্রে জানানো হয়েছে।

কারণ, টেলিকমিউনিকেশন বিভাগ জানাচ্ছে, নিয়ম মতো বিদেশি মোবাইল থেকে ফোন এলে ভারতীয় কোনও মোবাইল সংস্থার ‘গেটওয়ে’ ব্যবহার করে তবে তা নির্দিষ্ট ব্যক্তির মোবাইলে পৌঁছয়। এ জন্য বিদেশি মোবাইল সংস্থা সংশ্লিষ্ট ভারতীয় সংস্থাকে মিনিটে ৫৬ পয়সা হিসাবে ভাড়াও দেয়। তার একটি অংশ কেন্দ্রীয় সরকারের ঘরে কর হিসেবে ঢোকে। আপাতদৃষ্টিতে তা খুব কম বলে মনে হলেও বছরের হিসাবে সেই অঙ্কটা বিশাল। যে হেতু কোনও মোবাইল সংস্থার গেটওয়ে ব্যবহার করা হয় না, তাই ওই কর সরকারের খাতায় ঢুকছে না। ফলে বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। শুধুমাত্র এই বেআইনি টেলিকম এক্সচেঞ্জের ফলে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে টেলিকমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে।

মহারাষ্ট্র পুলিশ সূত্রে খবর, ৬ মাস ধরে লাতুরে ওই টেলিকম এক্সচেঞ্জগুলি চলছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে দিল্লিতে একটি বেআইনি টেলিকম এক্সচেঞ্জ ধরা পড়ে। তাতে এক জন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এবং ন’জন সহকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখনই পুলিশ আরও এমন টেলিকম এক্সচেঞ্জের খোঁজ পেয়েছিল। এপ্রিলে হায়দরাবাদেও এরকমই একটা বেআইনি টেলিকম এক্সচেঞ্জ ধরা পড়েছিল। শুধু তাই নয়, সেপ্টেম্বরে বিষড়াতেও এমনই এক টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ধা পড়েছিল। তবে বিষড়ার ওই টেলিফোন এক্সচেঞ্জের সঙ্গে কোনও আইএসআই যোগ মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE