Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Ladakh

ফের বৈঠক, চিনা ফৌজ সরানোর দাবি ভারতের

প্যাংগং সন্নিহিত পাঁচ থেকে আট নম্বর ফিঙ্গার (গিরিশিখর) পর্যন্ত ভারত যেন আগের মতোই টহল দিতে পারে, এটাকে আবশ্যিক শর্ত হিসাবে তুলে ধরেছে দিল্লি।

পূর্ব লাদাখে মোতায়েন ভারতীয় সেনার ট্যাঙ্কার। —ফাইল চিত্র

পূর্ব লাদাখে মোতায়েন ভারতীয় সেনার ট্যাঙ্কার। —ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৩৯
Share: Save:

ঠিক কুড়ি দিন পরে আজ লাদাখের ভারতীয় ভূখণ্ড চুশুলে সামরিক স্তরে আলোচনায় বসল ভারত-চিন। সূত্রের খবর, ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে চিনা ফৌজের সম্পূর্ণ পিছু হটার দাবি জানিয়েছে ভারত। পিছু হটার জন্য একটি পরিকল্পনার খসড়াও দেওয়া হয়েছে চিনা সেনার হাতে। প্রথমে গালওয়ান এলাকার ভূখণ্ড, তার পর প্যাংগং হ্রদের উত্তর ভাগ এবং সব শেষে বর্তমান সংঘর্ষবিন্দু অর্থাৎ হ্রদের দক্ষিণ ভাগ থেকে লাল ফৌজ সরানোর দাবি জানানো হয়েছে।

এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে সামরিক স্তরে সাত বার বৈঠক হল। প্রতিরক্ষা সূত্রের দাবি, গত ২২ সেপ্টেম্বরের বৈঠকেও এই পরিকল্পনা নিয়েই বেজিং-এর সঙ্গে কথা হয়েছিল। এটাই ভারতের বরাবরের অবস্থান। ভারত এপ্রিলের আগে যে সব পোস্টে টহল দিতে পারত সেই এলাকাগুলি ফেরত না পেলে সীমান্ত সংক্রান্ত কোনও আলোচনাই যে ফলপ্রসূ হবে না সে কথা আজ ভারতের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। প্যাংগং সন্নিহিত পাঁচ থেকে আট নম্বর ফিঙ্গার (গিরিশিখর) পর্যন্ত ভারত যেন আগের মতোই টহল দিতে পারে, এটাকে আবশ্যিক শর্ত হিসাবে তুলে ধরেছে দিল্লি।

সেনা সূত্রের মতে, এ ছাড়া ডেপসাং এলাকায় চিনা সেনার উপস্থিতির কারণে দৌলত–বেগ ওল্ডি রোডে ভারতীয় সেনার টহল দিতে যে সমস্যা হচ্ছে, তা নিয়েও আজ কথা হয়েছে। অন্য দিকে চিনের বক্তব্য, সেনা সরানোর প্রক্রিয়াটি তখনই শুরু হবে, যখন ভারতও প্যাংগং হ্রদের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে নিজেদের সেনা পিছোবে। ভারত স্বাভাবিক ভাবেই এই শর্তে সম্মত নয়। আজ ‘বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন’-এর তৈরি ৪৪টি সেতু উদ্বোধনের সময়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ফের বলেন, ‘‘পাকিস্তান ও চিন মিলে সীমান্ত সমস্যা তৈরির চেষ্টা করছে। এই দুই দেশের সঙ্গে আমাদের ৭ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত আছে।’’

আরও পড়ুন: এফআইআর নিয়ে নাটক, আদালতে প্রশ্ন, ‘আপনার মেয়ে হলে পারতেন’

গত ছ’টি আলোচনার মতোই এ দিনের বৈঠকেও সীমান্তে সেনা কমানোর বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও দু’পক্ষই নিশ্চিত, আসন্ন শীতে লাদাখ সীমান্তের সমস্যা মিটছে না। তাই দু’পক্ষই লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যথাসম্ভব প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছে। সীমান্তের কাছে আধুনিক অস্ত্র, সরঞ্জাম, ব্যারাক, সৌরশক্তির ব্যবস্থাসম্পন্ন তাঁবু, চিকিৎসা সরঞ্জাম নিয়ে আসছেন চিনা সামরিক নেতৃত্ব। বার্তা স্পষ্ট। সেই মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারতও। এ দিনের বৈঠকের পরেও বিশেষজ্ঞদের মতে, কূটনৈতিক এবং সামরিক আলোচনা নিজের গতিতে চলবে। কিন্তু আপাতত ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে লালফৌজকে সরানো সহজ হবে না। সিয়াচেনের মতোই ভারত-চিন সীমান্তে একটি নতুন সংঘর্ষবিন্দুর জন্ম হল কি না—এত আলোচনার পরেও এই প্রশ্নটি কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE