Advertisement
E-Paper

বিজয়ন-মন্ত্রে মন্ত্রীদের পাত পাড়তে এক রাত

লোকে বলে, মুখে তাঁর হাসি নেই! ভি এস অচ্যুতানন্দনকে নিয়ে প্রশ্ন হোক বা আরএসএসের দৌরাত্ম্য, দলের রাজ্য সম্পাদক হিসাবে তিনি উত্তর দিয়ে এসেছেন একই রকম ভাবলেশহীন মুখে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে সেই পিনারাই বিজয়ন এ বার উদ্যোগী হয়েছেন মন্ত্রিসভার সতীর্থদের একটু হেসে-খেলে সময় কাটানোর সুযোগ করে দিতে!

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৫
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

লোকে বলে, মুখে তাঁর হাসি নেই! ভি এস অচ্যুতানন্দনকে নিয়ে প্রশ্ন হোক বা আরএসএসের দৌরাত্ম্য, দলের রাজ্য সম্পাদক হিসাবে তিনি উত্তর দিয়ে এসেছেন একই রকম ভাবলেশহীন মুখে। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে সেই পিনারাই বিজয়ন এ বার উদ্যোগী হয়েছেন মন্ত্রিসভার সতীর্থদের একটু হেসে-খেলে সময় কাটানোর সুযোগ করে দিতে!

মুখ্যমন্ত্রীর উৎসাহে কেরলের এলডিএফ মন্ত্রিসভায় চালু হতে যাচ্ছে এক ধরনের অভিনব উদ্যোগ। প্রতি সপ্তাহের একটা দিন মন্ত্রিসভার এক এক জন সদস্য তাঁর বাড়িতে আপ্যায়ন করবেন বাকি সতীর্থদের। আড্ডা সহযোগে নৈশভোজে যোগ দিতে পারবেন মন্ত্রীদের গোটা পরিবার। তবে কোনও আমলা বা নিরাপত্তা আধিকারিকের ঠাঁই হবে না এই ঘরোয়া আসরে।
মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন মন্ত্রিসভায় তাঁর সহকর্মীদের জানিয়েছেন, অগস্ট থেকে তিনি এই রেওয়াজ শুরু করতে চান। ‘আপনি আচরি ধর্মে’র নীতি মেনে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীই তাঁর সরকারি বাসভবনে প্রথম নৈশ-আড্ডা বসাবেন। তার পরে প্রতি সপ্তাহে পালা পড়বে এক এক জন মন্ত্রীর। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ফি বুধবার এই আসরের আয়োজন থাকবে এবং সেখানেই ঠিক হয়ে যাবে, পরের বুধবার রাতের আয়োজক কে।

বিজয়ন দলে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, ‘‘এটা একেবারেই ঘরোয়া একটা ব্যবস্থা। মন্ত্রিসভার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক আরও ভাল করতে এই ব্যবস্থা কাজে আসবে।’’ বিজয়নের দল সিপিএমের নেতারা বলছেন, কোনও রাজ্যেই এখন এমন প্রথা চালু নেই। পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন ‘টিম ওয়ার্ক’-এ বিশ্বাস রেখে জেলায় প্রশাসনিক সফরে মন্ত্রীদের সঙ্গে নিয়ে যান, আমলাদের সফর করানো হয় দল বেঁধে বাসে চাপিয়ে। কিন্তু বিজয়ন তার চেয়েও এক ধাপ এগোচ্ছেন। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি এবং বিজয়ন মন্ত্রিসভার এক সদস্যের কথায়, ‘‘অনেক বিষয় থাকে, যেগুলো হয়তো মন্ত্রিসভার বৈঠকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পেশ করার আগে নিজেদের মধ্যে কথা বলে রাখলে ভাল হয়। সেই কাজ করার জন্য এই আসর আদর্শ হবে। কাজের চাপ সামলাতেও সুবিধা হবে।’’

সরকারে থাকলে সরকারি দফতর এবং দলীয় কার্যালয়ে গুচ্ছ বৈঠক— এই রুটিনের বাইরে সিপিএম নেতাদের তেমন কোনও পরিচিতি নেই। সেখানে কর্পোরেট জগতের ‘স্ট্রেস বাস্টার মন্ত্র’ মেনে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী যা করতে চলেছেন, তা অভিনব বৈকি!
দলের এক পলিটব্যুরো সদস্য অবশ্য বলছেন, ‘‘মালয়ালিদের মধ্যে এমনিতেই সামাজিক বন্ধন খুব বেশি। সেটা ওঁদের সুবিধা। পশ্চিমবঙ্গ, কেরল বা ত্রিপুরায় কোনও বাম সরকার আগে এই জিনিস করেনি। তবে দলের মধ্যে ‘মিট দ্য ফ্যামিলি’ কর্মসূচি আমরা নিয়েছিলাম।’’ ওই নেতার ব্যাখ্যায়, কোনও এলাকায় স্থানীয় কোনও কর্মীর বাড়িতে বাকিদের ডেকে নিয়ে কোনও নেতার সেখানে যাওয়ার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছিল। জনসংযোগ বাড়ানো এবং নিজেদের ভুল-ভ্রান্তির আত্মসমীক্ষা এই বাড়ি-বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল। তবে সময়ের সঙ্গে তাতেও জং ধরেছে!

লাভালিন কেলেঙ্কারিতে আপাতত ছাড়প্রাপ্ত বিজয়ন তাঁর নতুন ইনিংসে নতুন করেই ভাবতে চাইছেন সব। দলের মধ্যেই কেউ কেউ অবশ্য বাঁকা চোখে দেখতে ছাড়ছেন না! তাঁরা বলছেন, ভি এস মন্ত্রিসভায় নেই। বাড়িতে খাওয়ার টেবিলে আহ্লাদ করার এর চেয়ে বড় উপলক্ষ আর কী হতে পারে!

dinner invitation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy