বাংলাদেশে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘স্বৈরাচারের প্রথম পাতা মেলার আগেই’ তাকে শনাক্ত করার কথা। অন্য দিকে, ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার প্রাপ্ত রিপোর্ট (ধর্মীয় সংখ্যালঘু এবং নাস্তিক ভাবধারার মানুষের) বলছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশের স্থানে স্থানে সাম্প্রদায়িক অশান্তি এবং সংখ্যালঘুর উপর নিপীড়ন ধারাবাহিক ভাবে হয়েই চলেছে। এর ফলে মৃত্যু, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, গুরুতর আহত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।
ওই রিপোর্টের বক্তব্য, গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশ পুলিশ ফোর্স (বিপিএফ)-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ৪ থেকে ২৪ অগস্ট, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর ১৭৬৯টি হামলা ও সম্পত্তিভাঙচুরের ঘটনার অভিযোগ তারা খতিয়ে দেখেছে। এই অভিযোগ এসেছে সে দেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে। তবে ‘খতিয়ে দেখার’ পর পুলিশের বক্তব্য, এই অভিযোগগুলির ১২৩৪টি ঘটনাই ঘটেছে নাকি ‘রাজনৈতিক কারণে’। এর মধ্যে মাত্র ২০টিকে ধর্মীয় সংঘাত বলে চিহ্নিত করেছিলবাংলাদেশ পুলিশ।
রিপোর্টে প্রকাশ, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের বিভিন্ন পরিসংখ্যান পাওয়া গিয়েছে গত অগস্টের পর থেকে। বাংলাদেশের আইন ও সালিশি কেন্দ্র গত বছর ৯০৬টি এই ধরনের ঘটনার অভিযোগ এনেছে। চলতি বছরের প্রথম দু’মাসে ওই সংখ্যা ২৭টি। আবার বাংলাদেশ বৌদ্ধ হিন্দু খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের হিসেবে গত বছরের অগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ধর্মীয় সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে ২১৮৪টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। আর এই বছরের প্রথম দু’মাসে সংখ্যাটি ৬২।
প্রসঙ্গত ঢাকার খিলক্ষেতের দুর্গা মন্দিরে সম্প্রতি ভাঙচুরের ঘটনা নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতি। বাংলাদেশ দুর্গাপুজা উদ্যাপন পরিষদ এবং বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ঢাকার এই ঘটনা এবং লালমণিরহাটের কয়েকটি এলাকায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার কথা তুলে সরকারের পদক্ষেপের দাবি করেছে। কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতও। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ সকল সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ধর্মীয় উপাসনালয়ের সুরক্ষাও সেই প্রতিশ্রুতির অংশ। বাংলাদেশ সহনশীলতা ওঅন্তর্ভুক্তিমূলক ঐতিহ্য বজায় রেখেছে। যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিক স্বাধীন ভাবে বসবাস করতে পারে’।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)