কর্নাটকে কংগ্রেস সরকারে কি ভাঙন আসন্ন? উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমারের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সংঘাত আর চেপে রাখা যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবারই এক দল কংগ্রেস বিধায়ক দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। প্রত্যেকেই শিবকুমারের ঘনিষ্ঠ। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদে শিবকুমারকে দেখতে চান তাঁরা। মনে করা হচ্ছে, তা নিয়েই দিল্লিতে কংগ্রেসের হাইকমান্ডের সঙ্গে বিধায়কেরা বৈঠকে বসবেন। আবার, পদ এত সহজে ছেড়ে দিতে নারাজ সিদ্দারামাইয়াও। বৃহস্পতিবার তিনি সেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে রাজ্যের দুই শীর্ষ নেতার দড়ি টানাটানি প্রথম থেকেই অস্বস্তিতে রেখেছিল কংগ্রেসকে। ২০২৩ সালের ২০ মে কর্নাটকের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়। শিবকুমার এবং সিদ্দারামাইয়া— উভয়েই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার। শেষ পর্যন্ত উভয়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শিবকুমারকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে রাজি করিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গেরা। মুখ্যমন্ত্রী হন সেই সিদ্দারামাইয়াই। সম্প্রতি কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁর আড়াই বছর সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন:
সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করার পর কর্নাটকের রাজনীতিতে কানাঘুষো শোনা গিয়েছিল, এই পদ দুই নেতার মধ্যে ‘সমান ভাগে ভাগ’ করে দিয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। চুক্তি হয়েছে, পাঁচ বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বে প্রথম আড়াই বছর সিদ্দারামাইয়া কুর্সিতে থাকবেন। পরের আড়াই বছর পদ পাবেন শিবকুমার। দলের তরফে এ বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলা হয়নি। তবে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এই খবর রটে গিয়েছিল। সিদ্দারামাইয়ার আড়াই বছর পূর্ণ হতেই তাই পদ নিয়ে নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে।
বুধবার জল্পনা কিছুটা উস্কে দিয়েছিলেন শিবকুমার নিজে। তিনি কর্নাটকের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। সেই পদ ছাড়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘আমি এই পদ তো চির দিন ধরে রাখতে পারি না। সাড়ে পাঁচ বছর হয়ে গিয়েছে। আগামী মার্চে ছ’বছর হয়ে যাবে।’’ তবে কি পদত্যাগের কথা ভাবছেন? সে সব আর তিনি খোলসা করেননি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার এক জন মন্ত্রী এবং কয়েক জন কংগ্রেস বিধায়ক দিল্লিতে গিয়েছেন। তালিকায় রয়েছেন মন্ত্রী এন চালুভারায়াস্বামী, বিধায়ক ইকবাল হুসেন, এইচসি বালকৃষ্ণ এবং এসআর শ্রীনিবাস। শুক্রবার আরও ১২ জন বিধায়কের দিল্লিতে যাওয়ার কথা রয়েছে। রাহুল, খড়্গেদের সঙ্গে তাঁরা বৈঠক করতে পারেন।
জল্পনা অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। বৃহস্পতিবার একটি জমায়েতে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি জানান, তিনিই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকছেন। শুরু থেকেই তাঁর পদ শক্ত ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। শিবকুমারের ভাই ডিকে সুরেশ আবার রাখঢাক না করেই মুখ্যমন্ত্রীকে বার্তা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, সিদ্দারামাইয়া যে কথা দিয়েছিলেন, তা তাঁর রাখা উচিত। পিছু হটা উচিত নয়। এ বিষয়ে শিবকুমার দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ বার দলই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে, জানিয়েছেন সুরেশ।