পঞ্চম প্রজন্মের সুখোই-৫৭ যুদ্ধবিমানের জন্য ভারতকে নিজস্ব প্রযুক্তি অবাধে ব্যবহারের ছাড়পত্র দিতে চলেছে রাশিয়া। সেই প্রস্তাবই দেওয়া হয়েছে। নয়াদিল্লি এই প্রস্তাবে ‘হ্যাঁ’ বলে দিলে আর কোনও বাধা থাকবে না। রুশ যুদ্ধবিমানের জন্য তো বটেই, আগামী দিনে যে কোনও প্রয়োজনে ভারত ব্যবহার করতে পারবে রাশিয়ার নিজস্ব প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি। তার মাধ্যমে ভারত স্বাধীন ভাবে নিজস্ব যুদ্ধবিমানও তৈরি করে ফেলতে পারে।
ডিসেম্বরে ভারতে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার ঠিক আগে নয়াদিল্লিকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক প্রস্তাবটি দিয়েছে মস্কো। এর ফলে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে মনে করা হচ্ছে। রুশ প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। রাশিয়ার সরকারি প্রতিরক্ষা সংস্থা রস্টেকের সিইও সের্গেই চেমেজ়ভ জানিয়েছেন, ভারতকে দেওয়া মস্কোর প্রস্তাবের প্রাথমিক লক্ষ্য সুখোই-৫৭ সরবরাহ করা। তবে পর্যায়ক্রমে ভারতে এই যুদ্ধবিমানের উৎপাদন স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনাও রয়েছে।
আরও পড়ুন:
এখানেই শেষ নয়, কয়েকটি রিপোর্টে দাবি, রাশিয়া তার একক ইঞ্জিন স্টিল্থ যুদ্ধবিমান সুখোই-৭৫ আগামী দিনে ভারতকে দিতে পারে। অন্তত সেই প্রস্তাব আসতে পারে নয়াদিল্লিতে। যদিও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ভারতই।
রাশিয়া যে ধরনের প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির প্রস্তাব ভারতকে দিয়েছে, তা আগে কখনও কোনও দেশ দেয়নি। পশ্চিমি দেশগুলি চট করে এই ধরনের প্রযুক্তি ভাগ করে নিতে চায় না। যদি এই প্রস্তাবে নয়াদিল্লি সায় দেয়, তবে এর মাধ্যমে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার শক্তি আগের চেয়ে অনেক বেড়ে যাবে, মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তবে এ ক্ষেত্রে রাশিয়ার প্রাপ্তি কী কী, তা-ও ভাল করে খতিয়ে দেখা দরকার।
২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে ডিসেম্বরে ভারতে আসছেন পুতিন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে তিনি শেষ বার এ দেশে এসেছিলেন। পুতিনের ভারত সফরকালে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বড় কোনও ঘোষণা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির কারণে রাশিয়া ও ভারতের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনার কারণে আমেরিকা ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারতীয় পণ্যের উপর। কিন্তু ভারত তার বাণিজ্যনীতিতে কোনও পরিবর্তন করেনি। এই পরিস্থিতিতে পুতিনের ভারত সফর আলাদা তাৎপর্য পাচ্ছে বলে মত অনেকের।