এক মন্তব্য, বার্তা অনেক।
শুধু এ দেশের বিরোধীরাই নন, আন্তর্জাতিক মহলেও তাঁর ভাবমূর্তি মুসলিম-বিরোধী হিসেবেই। তা বদলে দিতে সক্রিয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একটি মার্কিন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে তাঁর মন্তব্য, “ভারতের মুসলিমরা ভারতের জন্য বাঁচেন, ভারতের জন্য মরেন। ভারতের খারাপ তাঁরা চাইবেন না।”
সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছিল সাম্প্রতিক উপনির্বাচনের ফল প্রকাশের আগে। সেখানে তাঁর বক্তব্য জানার পরে অনেকেই বলছেন, উপনির্বাচনে দল ও সঙ্ঘ নেতৃত্ব হিন্দুত্বের লাইনে প্রচার করলেও তিনি যে সে পথে হাঁটেননি, তা বুঝিয়েছেন মোদী। বরং এ দেশের মুসলিম জনসমাজকে কাছে টানতে চেয়ে মোদী তাঁদের দেশপ্রেমেরও প্রশংসা করেছেন।
মোদীর এই সাক্ষাৎকারের অংশ প্রকাশ্যে আসায় এম জে আকবরের মতো সংখ্যালঘু মুখপাত্রকে দিয়ে বিজেপি বোঝানোর চেষ্টা করে, মার্কিন সফরের আগে আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বার্তা দিয়েছেন মোদী। সম্প্রতি আল-কায়দা বা আইএসআইএস-এর মতো জঙ্গিদল ভারত থেকেও যুবকদের নিয়োগ করছে। যা নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি চিন্তিত। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি সংগঠনগুলিকে কড়া বার্তা দিলেন। বিজেপি বলছে, মোদী এক ঢিলে তিন পাখি মারতে চেয়েছেন। আন্তর্জাতিক মহলের পাশাপাশি তিনি বার্তা দিয়েছেন দল এবং সঙ্ঘকেও।
কী ভাবে? এক, নিজেকে মুসলিম-বিরোধী নন বলে তুলে ধরলেন মোদী। গোধরা-কাণ্ডের পর যে আমেরিকা তাঁর ভিসা আটকে রেখেছিল, আজ সে দেশে সফরের আগে বিশ্বের কাছেই ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাইলেন তিনি।
দুই, সঙ্ঘের চাপেই সাম্প্রতিক উপনির্বাচনে যোগী আদিত্যনাথের মতো কট্টর হিন্দু মুখকে সামনে রেখে ভোটে গিয়েছে বিজেপি। যা নিয়ে দলের অন্দরেই প্রবল বিতর্ক। বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী এর বিরোধিতা করেছেন। মোদী-পন্থীদের বক্তব্য, মোদী ওই সাক্ষাৎকারে বুঝিয়ে দিয়েছেন, দলের এই অবস্থানের সঙ্গে তিনি আদৌ একমত ছিলেন না।
এবং তিন, দলের অবস্থান দেখে সাক্ষী মহারাজ হোন বা মেনকা গাঁধী দলের নেতা-মন্ত্রীরাও সম্প্রতি মুসলিম-বিরোধী মন্তব্য করছিলেন। দলের পক্ষ থেকে এ ধরনের মন্তব্যেও লাগাম কষতে চাইলেন মোদী।
যদিও মোদীর এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ বলেন, “প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, তাতে আপত্তির জায়গা নেই। কিন্তু প্রশ্ন, এই বোধোদয় এত দিনে কেন? তা হলে কি মার্কিন সফরের আগে বিশ্বকে জানাতে হল, তিনি কতটা উদার?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy