চাকরি নিয়ে প্রশ্নের মুখে ফের প্রভিডেন্ট ফান্ডের পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করল নরেন্দ্র মোদী সরকার।
মোদী সরকারের দাবি, জানুয়ারি মাসে দেশে ৮.৯৬ লক্ষ নতুন চাকরি হয়েছে। যা গত ১৭ মাসে সর্বোচ্চ। গত ১৭ মাসে মোট ৭৬.৪৮ লক্ষ চাকরি তৈরি হয়েছে। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, এটা শুধুই সংগঠিত ক্ষেত্রের হিসেব। অসংগঠিত ক্ষেত্র ধরলে নতুন চাকরির সংখ্যা আরও বেশি হবে। কিন্তু প্রভিডেন্ট ফান্ডের খাতায় নতুন কত জনের নাম উঠল, তা নতুন চাকরির সঠিক পরিসংখ্যান কি না, তা নিয়ে অর্থনীতিবিদদের মধ্যেই প্রশ্ন রয়েছে। কারণ কোনও সংস্থা অসংগঠিত ক্ষেত্র থেকে সংগঠিত ক্ষেত্রে এলে সেই সংস্থার কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের খাতায় নাম ওঠে। জিএসটি চালুর পরে অনেক সংস্থা নথিভুক্ত হয়েছে। তাদের কর্মীদের নামও প্রভিডেন্ট ফান্ডের খাতায় উঠেছে। ফলে সবটাই যে নতুন চাকরি, তা বলা যায় না।
সরকারি সূত্রের পাল্টা দাবি, ২০১৯-এর জানুয়ারিতে প্রভিডেন্ট ফান্ডের খাতায় নতুন ২.৪৪ লক্ষ কর্মীর বয়স ২২ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে। ১৮ থেকে ২১ বছর বয়সির সংখ্যা ২.২৪ লক্ষ। ফলে এরা যে নতুন চাকরি পেয়েছেন, তা এক প্রকার নিশ্চিত।
ক্ষমতায় আসার আগে নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, বছরে ১ কোটি চাকরি হবে। কিন্তু মোদী জমানায় বহু মানুষ চাকরি খুইয়েছেন বলেও অভিযোগ। জানুয়ারিতে ফাঁস হওয়া এনএসএসও-র সমীক্ষা রিপোর্টে ছিল, নোট বাতিলের পরে, ২০১৭-১৮-তে বেকারত্ব ৪৫ বছরের সর্বোচ্চ হারে পৌঁছয়। ওই রিপোর্ট এখনও প্রকাশ করেনি সরকার। একই সমীক্ষা বলছে, দেশে পুরুষ কর্মীর সংখ্যাও কমে গিয়েছে। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৮-য় এক কোটি মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী তা নিয়ে প্রায় রোজই মোদী সরকারকে নিশানা করছেন।
কিন্তু আজ ইপিএফও (এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজ়েশন)-এর পরিসংখ্যান দেখিয়ে সরকারের দাবি, এক বছরে নতুন চাকরির সংখ্যা ১৩১ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৮-র জানুয়ারিতে ৩.৮৭ লক্ষ নতুন চাকরি হয়েছিল। ২০১৭-র সেপ্টেম্বর থেকে ইপিএফও নতুন বেতনভুক কর্মীর সংখ্যা প্রকাশ করা শুরু করেছে।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অবশ্য দেখা গিয়েছে, প্রথমে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে পরে ইপিএফও নিজেই তা কমিয়ে ফেলেছে। প্রথমে ইপিএফও ডিসেম্বরে ৭.১৬ লক্ষ চাকরি হয়েছিল বলে দাবি করেছিল। পরে নিজেই তা কমিয়ে ৭.০৩ লক্ষ করে ফেলে। ১৬ মাসে মোট চাকরির সংখ্যা ৭২.৩২ লক্ষ
থেকে কমিয়ে ৬৭.৫২ লক্ষ করা হয়।