Advertisement
০৪ মে ২০২৪

মোদীর সঙ্গে ১৯ মুখ্যমন্ত্রী, শপথে স্বপ্ন নজরকাড়া

প্রফুল্ল মহন্ত পেরেছিলেন। তবে অসমে তার আগে আসু-র বছরছয়েকের টানা আন্দোলন ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেরেছিলেন। তবে তার আগে বাংলায় কংগ্রেস ভেঙে বেরিয়ে ১৩ বছরের দীর্ঘ লড়়াই ছিল।

সহমর্মিতা: ত্রিপুরার প্রয়াত প্রাক্তন মন্ত্রী খগেন্দ্র জমাতিয়ার ছেলেকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব। ছবি: পিটিআই।

সহমর্মিতা: ত্রিপুরার প্রয়াত প্রাক্তন মন্ত্রী খগেন্দ্র জমাতিয়ার ছেলেকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব। ছবি: পিটিআই।

সন্দীপন চক্রবর্তী
আগরতলা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৮ ০৩:৪৬
Share: Save:

এন টি রাম রাও পেরেছিলেন। তবে তেলুগু ছবির তারকা হিসেবে সাবেক অন্ধ্র্প্রদেশে তাঁর বিপুল ভক্ত ছিল।

প্রফুল্ল মহন্ত পেরেছিলেন। তবে অসমে তার আগে আসু-র বছরছয়েকের টানা আন্দোলন ছিল।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেরেছিলেন। তবে তার আগে বাংলায় কংগ্রেস ভেঙে বেরিয়ে ১৩ বছরের দীর্ঘ লড়়াই ছিল।

অরবিন্দ কেজরীবাল পেরেছিলেন। তবে তার আগে দিল্লিতে অণ্ণা হজারেদের আন্দোলন জনতার নজর টেনেছিল।

বিপ্লব কুমার দেব পেরেছেন। কিন্তু তাঁর দলের নেতৃত্বই মানছেন, তার আগে ত্রিপুরায় না ছিল আন্দোলন, না ছিল লম্বা পথ পাড়়ি দিয়ে আসার ইতিহাস!

শূন্য থেকে শিখরে ওঠার পথে বাকিদের কৃতিত্ব ছাপিয়ে যাওয়ার কাহিনি এ বার গোটা দেশে ছড়়িয়ে দিতে চাইছে বিজেপি। এবং তাদের ত্রিপুরা বিজয়ের কাহিনির আরও বড়় তাৎপর্য— এই প্রথম বিজেপি হারাতে পারল সিপিএমকে! যা কি না তাদের কাছে বৃহত্তম মতাদর্শগত বিজয়। এই জয়ের অন্যতম কারিগর এবং বিজেপি-র পর্যবেক্ষক সুনীল দেওধরের কথায়, ‘‘অল্প সময়ে সংগঠন গড়়ে আর মানুষকে বোঝাতে পেরে ত্রিপুরায় যা অর্জন করেছি, এখন ২৫ বছরের আগে হাতছাড়া হতে দেব না!’’

আরও পড়ুন: শক্ত ঘাঁটি উপজাতীয় এলাকাও দূরে ঠেলল সিপিএমকে

রাজ্যপাল তথাগত রায়ের কাছে ইস্তফাপত্র দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার।

এই অবিশ্বাস্য এবং মতাদর্শগত বিজয়ের উদযাপনেও এ বার চোখ ধাঁধিয়ে দিতে চাইছে বিজেপি! পরিকল্পনা হচ্ছে, নতুন মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বিজেপি-শাসিত ১৯টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে আগরতলায় হাজির করার! এবং সঙ্গে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর সময় বুঝেই ঠিক হবে শপথ অনুষ্ঠানের দিনক্ষণ। কোনও কালে কোনও রাজ্যে কোনও মন্ত্রিসভার শপথে কেউ দেখেনি— এমন ছবি ত্রিপুরার মাটি থেকে গোটা দেশে ছড়়িয়ে দিতে চায় বিজেপি।

মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার দৌড়়ে স্বভাবতই অনেক এগিয়ে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি বিপ্লব। তাঁর নেতৃত্বেই বিজেপি এবং আইপিএফটি-র প্রতিনিধিদলের কাল, সোমবার রাজ্যপাল তথাগত রায়ের কাছে গিয়ে সরকার গড়়ার দাবি জানানোর কথা। পর দিন, মঙ্গলবার রাজ্যে এসে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে নিতিন গডকড়়ী ও জুয়েল ওঁরাও দলের নবনির্বাচিত বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। বিধায়কদের বেছে দেওয়া নেতার নাম দিল্লি নিয়ে গিয়ে গড়কড়়ীরা পেশ করবেন সংসদীয় বোর্ডের কাছে। তারাই মুখ্যমন্ত্রীর নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করবে।

বিজেপি শিবিরের অন্দরের খবর, জোটের সাফল্যের পরে আইপিএফটি সভাপতি এন সি দেববর্মা উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার। আবার পরিষদীয় রাজনীতিতে অভিজ্ঞতার নিরিখে কংগ্রেস থেকে আসা সুদীপ রায় বর্মণ ও রতনলাল নাথেরও উপ-মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন আছে। পাঁচ বছর আগে কংগ্রেসের প্রায় ৪২% ভোট এ বার নেমে এসেছে ১.৮%-এ! আর বিজেপি ১.৫% থেকে বেড়়ে হয়েছে ৪৩%। অর্থাৎ কংগ্রেসের পুরো ভোটটাই সুদীপেরা শুষে নিয়ে এসেছেন বিজেপি-র ঘরে! তবে আরএসএসের সবুজ সঙ্কেত না থাকায় তাঁদের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়়ার সম্ভাবনা কম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE