গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত কেরল। তার জেরে বন্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে রাজ্যের উত্তরাংশের জেলাগুলিতে। বহু মানুষকে বাড়ি থেকে সরিয়ে ত্রাণশিবিরে রাখা হয়েছে। ভারতীয় মৌসম ভবন (আইএমডি) শনিবার জানিয়েছে, শনিবারও বৃষ্টি চলবে কেরলের সব জেলায়। উত্তরের জেলাগুলিতে ৩ জুন, আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ঝড়বৃষ্টির কারণে বন্দে ভারত-সহ চারটি ট্রেন দেরিতে চলছে। ভিঝিনজামে হারিয়ে যাওয়া মৎস্যজীবীদের এখনও খোঁজ চলছে।
দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু এ দেশে সবার আগে প্রবেশ করে কেরলে। চলতি বছর, সময়ের আট দিন আগে, গত শনিবার কেরলে বর্ষা প্রবেশ করেছে। তার পর থেকেই চলছে লাগাতার বৃষ্টি। তার জেরে ফুলেফেঁপে উঠেছে নদী এবং শাখানদী। তার ফলে নিচু অংশ ডুবে গিয়েছে জলে। মধুবাহিনী নদী প্লাবিত হয়ে ভাসিয়েছে কাসারগোড় জেলার রাস্তাঘাট। জলের নীচে বহু বাড়িঘর। বাড়ির একতলা ছেড়ে বাসিন্দারা দোতলায় গিয়ে থাকছেন। একতলা বাড়ির বাসিন্দাদের অনেকে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।
কোঝিকোড়, কান্নুর জেলাতেও একই অবস্থা। কান্নুরের পায়ানুরে অনেক বাড়ির সামনেই বাঁধা রয়েছে ডিঙি। তাতে চেপেই যাতায়াত করছেন স্থানীয়েরা। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে এক বৃদ্ধ জানিয়েছেন, জলস্তর না নামলে তাঁদেরও ত্রাণশিবিরে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। দক্ষিণের জেলাগুলিতেও ত্রাণশিবির চালু করেছে প্রশাসন। সেখানে বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলী বাহিনীর সদস্য়েরা। প্রশাসনেরই সূত্র বলছে, কোট্টায়াম জেলায় ৪৬টি শিবির চালু করা হয়েছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন ১,১৩৬ জন। আলাপুঝায় ২৬টি শিবির খোলা হয়েছে। সেখানে থাকছেন ৮৫১ জন। শুক্রবার রাতে এই আলাপুঝায় ঝড়বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়েছে ১৯টি ঘর। অন্য দিকে, ভিঝিনজামে ঝড়বৃষ্টির মধ্যে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন নয় জন মৎস্যজীবী। দু’দিন পেরিয়ে গেলেও তাঁদের খোঁজ মেলেনি।
আরও পড়ুন:
কেরলের তিরুঅনন্তপুরম, কোল্লাম, পথনমথিট্টা, আলাপুঝা, কোট্টায়াম, ইদুক্কি, এর্নাকুলাম, ত্রিশূর, মালাপ্পুরম, কোঝিকোড়, কান্নুরে ঝড়বৃষ্টির জন্য কমলা সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন। কোনও কোনও জেলায় বৃষ্টির সঙ্গে ৫০ কিলোমিটার গতিতে ঝড় হতে পারে। কেরলের বাকি জেলায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।