Advertisement
E-Paper

ভেঙে পড়া বিমানের আগুনে ২৫ শতাংশ পুড়ে যান নিজেও, আট মাসের শিশুকে কী ভাবে আগলেছিলেন মা?

মনীষার মুখ ও হাতের ২৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। ধ্যানেশেরও মুখ, দুই বাহু, বুক এবং পেটের ৩৬ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। দু’জনকেই দ্রুত কেডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ধ্যানেশকে ভর্তি করানো হয় নিবিড় পরিচর্যা বিভাগে (পিআইসিইউ)। ত্বকের ক্ষত সারাতে মায়ের চামড়া দিয়ে গ্রাফ্‌টিংও করা হয়।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৫ ১৭:১৪
অহমদাবাদে দুর্ঘটনার পরের দৃশ্য।

অহমদাবাদে দুর্ঘটনার পরের দৃশ্য। — ফাইল চিত্র।

১২ জুন। এমনই এক দুপুরে আট মাসের ছেলেকে নিয়ে অহমদাবাদের বিজে মেডিক্যাল কলেজের আবাসিক কোয়ার্টারের ঘরে ছিলেন মনীষা কাছাড়িয়া। আচমকা বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়ার সেই ‘অভিশপ্ত’ বিমান। বিস্ফোরণ ও তৎপরবর্তী আগুনে ঝলসে যায় মনীষা ও তাঁর ছেলে ধ্যানেশের দেহ। কিন্তু প্রাণে বেঁচে যান দু’জনেই। সেই ধ্যানেশই এখন অহমদাবাদ বিমান দুর্ঘটনার কনিষ্ঠতম জীবিত সাক্ষী।

মনীষা অহমদাবাদের মেঘানিনগরের বিজে মেডিক্যাল কলেজের ইউরোলজি সুপার-স্পেশালিটি বিভাগের চিকিৎসক কপিল কাছাড়িয়ার স্ত্রী। তাঁদেরই আট মাসের পুত্র ধ্যানেশ। মেডিক্যাল কলেজের কোয়ার্টারেই থাকত ওই পরিবার, ঠিক যেখানে মাসখানেক আগে ভেঙে পড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান। ৩৬ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল ধ্যানশের ছোট্ট দেহ। ২৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিলেন মনীষাও। দীর্ঘ চিকিৎসার পর গত সপ্তাহে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়েছে মা-ছেলেকে। মায়ের শরীরের চামড়া দিয়েই ক্ষত মেরামত করা হয়েছে পুত্রের!

কী ভাবে ছেলেকে বাঁচিয়েছিলেন মা? মনীষার কথায়, ১২ জুন যখন বিমানটি হস্টেলের উপর ভেঙে পড়ে, সে সময় কপিল হাসপাতালে কর্তব্যরত ছিলেন। কপিল সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, বিমান ভেঙে পড়ার পর পরই গোটা এলাকা কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ! আগুনে মনীষা নিজেও দগ্ধ হন, কিন্তু তাঁর প্রথম চিন্তা ছিল তাঁদের ছেলেকে বাঁচানো। সে দিনের কথা মনে পড়লেও শিউরে উঠছেন মনীষা। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘এক সেকেন্ডের মধ্যে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। তার পরেই আমাদের বাড়ি যেন প্রবল তাপে ঝলসে গেল।’’ ঘন ধোঁয়ায় কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। তার মধ্যেই ছেলেকে কোনও মতে আগলে ছুটতে শুরু করেন যুবতী।

মনীষার মুখ ও হাতের ২৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। ধ্যানেশেরও মুখ, দুই বাহু, বুক এবং পেটের ৩৬ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। দু’জনকেই দ্রুত কেডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ধ্যানেশকে ভর্তি করানো হয় নিবিড় পরিচর্যা বিভাগে (পিআইসিইউ)। ত্বকের ক্ষত সারাতে মায়ের চামড়া দিয়ে গ্রাফ্‌টিংও করা হয়।

এই ঘটনাকে ‘গভীর ভাবে মর্মস্পর্শী’ বলে উল্লেখ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের এক চিকিৎসক আদিত দেশাইয়ের কথায়, ‘‘মা যে ভাবে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও সন্তানকে বাঁচিয়েছেন, সে কারণেই এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি ঘটনা। তা ছাড়া, চিকিৎসার দৃষ্টিকোণ থেকে মা-শিশুকে সুস্থ করে তুলতে হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগ একত্রিত হয়েছিল।’’ অবশেষে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন মনীষা ও তাঁর পুত্র। এ ছাড়াও, এআই১৭১ বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ছ’জন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাও প্রদান করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁরাও ক্রমে সুস্থ হয়ে উঠছেন।

Gujarat Plane Crash Air India Grafting Method Ahmedabad Ahmedabad Plane Crash
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy