Advertisement
০৪ মে ২০২৪
parliament

Parliament: রাজ্যসভা ‘রণক্ষেত্র’, ফাইল ছুড়লেন সাংসদ

টেবিলের ওপর আপ নেতা সঞ্জয় সিংহ ও পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদ প্রতাপ সিংহ বাজওয়া

টেবিলের ওপর আপ নেতা সঞ্জয় সিংহ ও পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদ প্রতাপ সিংহ বাজওয়া ছবি পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২১ ০৭:০৪
Share: Save:

সাম্প্রতিক অতীতে এমন দৃশ্য দেখেনি রাজ্যসভা।

কেন্দ্রের আনা তিনটি কৃষি আইন খারিজ করার দাবিতে, বিরোধীরা মঙ্গলবার বসে পড়লেন চেয়ারম্যানের সামনে ‘রিপোর্টারস’টেবিল’-এ! শুধু তাই নয়, স্লোগান দিতে দিতে এক সাংসদকে বিধিনিয়মের ফাইল ছুড়ে মারতেও দেখা গেল চেয়ারে থাকা ডেপুটি চেয়ারম্যান ভুবনেশ্বর কলিতার দিকে। দ্রুত অধিবেশন মুলতুবি করে দিলেও টেবিলের উপর লাফালাফি চলেছে আরও কিছুক্ষণ। সঙ্গে স্লোগান—‘জয় জওয়ান, জয় কিসান।’ সূত্রের খবর, এই ঘটনায় জড়িত সাংসদদের ‘স্থায়ী এবং কড়া’ শাস্তি দেওয়া হতে পারে।

কেন্দ্র আগামিকাল বিমা বিল পাশ করানোর জন্য রাজ্যসভায় আনছে। বিরোধী রাজনৈতিক সূত্রের খবর, সে ক্ষেত্রে হাঙ্গামা প্রবলতর হতে পারে। আজ রাজ্যসভার অধিবেশন চলে ৫২ মিনিট, মুলতুবি হয় ছ’বার। এই পরিস্থিতিতে সংসদের অধিবেশন আগামিকালই শেষ করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা চলছে।

এ দিন স্থির করা হয়েছিল, কৃষি বিল নিয়ে আলোচনা করা হবে। একাধিক কারণে তাতে আপত্তি ছিল বিরোধীদের। প্রথমত, তৃণমূল কংগ্রেস এবং কংগ্রেসের দাবি, আগে ফোনে আড়ি পাতার বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অধিবেশন কক্ষে এসে ব্যাখ্যা দেবেন, বিষয়টি নিয়ে পূর্ণাঙ্গ আলোচনা হবে, তারপর অন্য কিছু। দ্বিতীয়ত, বিরোধীদের বক্তব্য, কৃষি আইন নিয়ে আলোচনা নিরর্থক। এই তিনটি আইনকে সরাসরি বাতিল করা হোক।

কৃষি আইন নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পরই আজ রাজ্যসভা বদলে যায় রণক্ষেত্রে। গোড়া থেকেই ওয়েলে নেমে স্লোগান দিয়েছে তৃণমূল। কিন্তু আপ নেতা সঞ্জয় সিংহ চেয়ারম্যানের সামনে সংসদের রিপোর্টারদের টেবিলে উঠে পড়েন। এরপরই পঞ্জাবের কংগ্রেস সাংসদ প্রতাপ সিংহ বাজওয়া টেবিলের উপর কার্যত লাফাতে থাকেন। তখন অবশ্য অধিবেশন মুলতুবি হয়ে গিয়েছে। বাজওয়াকে চেয়ারের দিকে বিধিনিয়মের ফাইল ছুড়তেও দেখা গিয়েছে। কংগ্রেসের দীপেন্দ্র হুডা, রাজমণি পটেল, সিপিআইয়ের বিনয় বিশ্বম, সিপিএমের ভি শিবদাসন ওই টেবিলে বসে স্লোগান দিতে থাকেন পা দুলিয়ে। এর পর দু’বার অধিবেশন চালানোর চেষ্টা হলেও তা সফল হয়নি।

ঘটনাটিকে ‘গণতন্ত্রে বিরাট আঘাত’ হিসাবেই তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যসভায় আলোচনার সময় কংগ্রেস এবং তৃণমূলের আচরণ গণতন্ত্রকে বিরাট ধাক্কা দিয়েছে। এটা প্রমাণিত, এই আইনে কালো দিক নেই। যে টুকু কালো রয়েছে, তা বিরোধী নেতাদের পোশাকে। চলতি বাদল অধিবেশনের শুরু থেকেই আমরা বলে আসছি, কেন্দ্রীয় সরকার কৃষি-সহ সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনায় প্রস্তুত।’’ বাজওয়ার দাবি, ‘‘কৃষকেরা ন’মাস ধরে বসে রয়েছেন, সরকার কিছু করেনি। আর সরকার কৃষি নিয়ে আলোচনা করতে চাইছে, কৃষি আইন নিয়ে নয়। আমি অনেক বার নোটিস দিয়েছি, তাতে কর্ণপাত করা হয়নি। হ্যাঁ, আমি রুলের (বিধিনিয়ম) ফাইল ছুড়েছি, কারণ ডেপুটি চেয়ারম্যানের রুল মেনে চলা উচিত।’’

আজ সকালে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘরে বৈঠক হয় বিরোধীদের। বৈঠকে যোগ দেন তৃণমূলের সুখেন্দুশেখর রায় এবং প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দলীয় কৌশল নিয়ে বৈঠক করেন দলের লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদেরা। লোকসভায় তৃণমূলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা যায় ওবিসি বিল নিয়ে আলোচনার সময় নাম না করে, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রকে রাজনৈতিকভাবে খোঁচা দিতে। তিনি বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের রাজ্যে সমস্যা হচ্ছে। রাজ্যের যিনি সাংবিধানিক প্রধান, তাঁর উপরেও কেন্দ্রীয় সরকারের নজরদারি রাখা উচিত!’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Congress Monsoon Session parliament AAP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE