হরিয়ানার টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদব হত্যাকাণ্ডের রহস্য এখনও উন্মোচিত হয়নি, তার মধ্যেই তাঁর প্রশিক্ষকের একটি হোয়াট্সঅ্যাপ কথোপকথন প্রকাশ্যে এল। রাধিকা নাকি তাঁর প্রশিক্ষককে জানিয়েছিলেন, এখানে পদে পদে বাধা, সব কিছুতে বড্ড কড়াকড়ি (রেস্ট্রিকশন)। তাঁর ভাল লাগছে না।
তিনি জীবন উপভোগ করতে চান। টেনিস কোচকে হোয়াট্সঅ্যাপে এ কথা জানিয়েছিলেন রাধিকা। শুধু তা-ই নয়, পরিবার ছেড়ে বিদেশেও চলে যাবার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। রাধিকাকে কেন খুন হতে হল, এই কারণ নিয়ে যখন রহস্য বাড়ছে, সেই সময়ে রাধিকা এবং তাঁর কোচের পুরনো সেই কথোপকথন প্রকাশ্যে আসায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ইন্ডিয়া টুডে-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাধিকা এবং তাঁর কোচের মধ্যে একটি পুরনো কথোপকথন প্রকাশ্যে এসেছে। টেনিস কোচকে রাধিকা জানিয়েছিলেন, ‘‘ইধার কাফি রেস্ট্রিকশন হ্যায়, ওয়ান্ট টু এনজয়।’’
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাধিকা শুধু জীবন উপভোগ করার কথাই বলতে চাননি, পরিবার ছেড়ে বিদেশে চলে যাওয়ার কথাও কোচকে জানিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। তাঁর পছন্দের দু’টি জায়গার কথাও বলেছিলেন। একটি হল দুবাই, অন্যটি অস্ট্রেলিয়া। চিনও তাঁর পছন্দের তালিকায় ছিল। কিন্তু সেখানে খাবারদাবারের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবেন না বলেই তালিকা থেকে চিনকে বাদ রেখেছিলেন।
আরও পড়ুন:
রাধিকা খুনে একাধিক তত্ত্ব উঠে আসছে। কিন্তু কোন তত্ত্বটি সঠিক, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ইনস্টাগ্রাম রিল বানানোয় আপত্তি ছিল তাঁর বাবা দীপকের? তার জন্যই খুন? আবার দীপক নিজে দাবি করেছেন, ‘মেয়ের টাকায় খাচ্ছেন’— এই কথা বলে আত্মীয় এবং পড়শিরা প্রতিনিয়ত কটাক্ষ করতেন। আত্মসম্মানে আঘাত লাগায় কন্যাকে খুন করেছেন। কিন্তু সেই তত্ত্বও পরিচিত এবং আত্মীয়েরা খারিজ করে দিয়েছেন। তা হলে মিউজ়িক ভিডিয়োই তাঁর খুনের কারণ? এ বিষয়টিও স্পষ্ট করতে পারেনি পুলিশ। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জানিয়েছে, রাধিকার টেনিস অ্যাকাডেমি নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিলেন দীপক। তা নিয়ে বাবা-মেয়ের মধ্যে মতানৈক্য ছিল। তার জেরেই খুন। তবে এটিই যে আসল কারণ, তা মানতে চাইছেন না রাধিকার আত্মীয়, পরিচিত এবং পড়শিরা।
তার মধ্যে টেনিস কোচের সঙ্গে রাধিকার হোয়াট্সঅ্যাপ কথোপকথন প্রকাশ্যে আসায় এই ঘটনা নয়া মোড় নিচ্ছে। ‘এখানে বড্ড কড়াকড়ি’ বলতে রাধিকা কি পরিবারের সদস্য এবং বাবার কথাই বলতে চেয়েছিলেন? বাড়িতে কঠোর অনুশাসন থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিলেন তিনি? সে কারণেই কি বিদেশে চলে যাওয়ার কথা বলেছিলেন কোচকে? কারণ, হোয়াট্সঅ্যাপে রাধিকা কোচকে বলেন, ‘‘জীবন উপভোগ করতে চাই।’’ তা হলে কি বাড়ির সঙ্গে তাঁর একটা টানাপড়েন চলছিল? এখন এই প্রশ্নগুলিই তদন্তকারীদের কাছে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
বৃহস্পতিবার রাধিকাকে গুলি করে খুন করা হয়। খুনের অভিযোগ ওঠে তাঁর বাবা দীপকের বিরুদ্ধে। তাঁকে এক দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এফআইআরে লেখা হয়েছিল,পিছন থেকে তিনটি গুলি করা হয়েছে। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, রাধিকার বুকে চারটি গুলি করা হয়েছে।