Advertisement
E-Paper

শান্তি চুক্তির শর্ত জানালেন মুইভা

ভৌগোলিক সীমানার বাধায় যে সব নাগা এলাকাকে বৃহত্তর নাগালিমের আওতায় আনা সম্ভব হবে না, সেখানে স্বশাসিত ও ক্ষমতাশালী অখিল নাগা হো হো স্বাধীন ভাবে নাগাদের উন্নতি নিয়ে কাজ চালাবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৫ ০৩:০৫

ভৌগোলিক সীমানার বাধায় যে সব নাগা এলাকাকে বৃহত্তর নাগালিমের আওতায় আনা সম্ভব হবে না, সেখানে স্বশাসিত ও ক্ষমতাশালী অখিল নাগা হো হো স্বাধীন ভাবে নাগাদের উন্নতি নিয়ে কাজ চালাবে। কেন্দ্র ও এনএসসিএন আইজ্যাক-মুইভা গোষ্ঠীর মধ্যে নাগা সার্বভৌমত্ব ও বৃহত্তর নাগালিম নিয়ে এই সমাধান সূত্র বের হয়েছে।

কেন্দ্র এ বিষয়ে এখনও মুখ না খুললেও, এনএসসিএন (আইএম) সমান্তরাল সরকারের প্রধানমন্ত্রী খুইংগালেং মুইভা আজ রাজ্যের সব সংগঠন, নেতা, বর্তমান ও প্রাক্তন সাংসদ, বুদ্ধিজীবী, মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন।

বৃহত্তর নাগালিমের আওতায় মণিপুর, অরুণাচল ও অসমের অনেকটা অংশ দাবি করেছিল আই-এম। চুক্তি স্বাক্ষরের পর মুইভাও জানান, তাঁরা এই দাবিতে অনড়। এতে তিন রাজ্যেই বিক্ষোভ শুরু হয়। তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রের জবাব চান। এর পর কেন্দ্রের সঙ্গে মুইভার ফের কথা হয়। গত কাল ও এ দিন মুইভা কয়েক দফায় রাজ্যের বিভিন্ন সংগঠন, রাজনৈতিক দল, নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।

শেষ পর্যন্ত আগের দাবি থেকে অনেকটা সরে মুইভা মেনে নেন— পড়শি রাজ্যগুলির ভৌগোলিক সীমানা অক্ষুণ্ণ রাখার স্বার্থে হয়তো সব নাগা অধ্যূষিত এলাকাকে বৃহত্তর নাগালিমে সরাসরি যোগ করা যাবে না। তাঁর সমাধান সূত্র হল, ‘প্যন নাগা হো হো’ নামে যে ক্ষমতাশালী প্রশাসনিক কাঠামো গড়া হবে, তাদের হাতে প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ক্ষমতা থাকবে। নিজস্ব বাজেটও থাকবে। পড়শি রাজ্যের নাগা অধ্যূষিত এলাকায় নাগাদের কল্যাণের অনেকটা দায়িত্বও তারা পাবে। মুইভার দাবি, কেন্দ্র ইতিমধ্যে এই সূত্র মেনে নিয়েছে। তিনি আরও জানান, নাগাল্যান্ডের জমি ও সম্পদের উপরে ভূমিপুত্রদের অধিকার স্বীকার করে নিয়েছে কেন্দ্র। সেখানে কোনও বাইরের প্রভাব বা চাপ থাকবে না। নাগাল্যান্ডের খনিজ সম্পদ সন্ধান ও আহরণের কাজ যৌথ ভাবে ভারত সরকার ও নাগালিম সরকার করবে। মুইভা বলেন, ‘‘চূড়ান্ত চুক্তিতে ১০০ শতাংশ দাবি পূরণ সম্ভব হয়নি। কিছু দিয়েই কিছু অর্জন করতে হয়। তবে লাভের পাল্লা নাগাদের দিকে বেশি।’’

অভিযোগ উঠছিল, টাংখুল নেতা মুইভা একা চুক্তি করলে নাগারা তা মানবে না বলেই, মৃত্যুপথযাত্রী আইজ্যাক সু-কে দিয়ে তড়িঘড়ি অসম্পূর্ণ চুক্তি সই করিয়ে রাখা হয়েছে। এ দিন মুইভাও মেনে নেন, চুক্তির শর্তাবলী চূড়ান্ত না করেই জরুরি ভিত্তিতে শান্তি চুক্তি সই করা হয়েছিল। কারণ, আইজ্যাক সু-র শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক।

শান্তি চুক্তির অন্য কোনও শর্ত খোলসা না করে মুইভা বলেন, ‘‘কয়েক জন শান্তি প্রক্রিয়া ভেস্তে দিতে চাইছে। কংগ্রেস বারবার নাগাদের ভুল বুঝিয়ে অশান্তি জিইয়ে রেখেছিল। এখনও অনেকে স্বতন্ত্র, সার্বভৌম শব্দ ব্যবহার করে পরিস্থিতি জটিল করতে চাইছে।

এ দিন মুইভার পাশাপাশি বক্তৃতা দেন নাগাল্যান্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান সাংসদ নেফিয়ু রিও। তিনি বলেন, ‘‘নাগারা চিরকাল নিজেদের অধিকার রক্ষার সংগ্রামে মুইভা ও সুয়ের অবদান মনে রাখবেন।’’ তিনি ও মুইভা অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলিকে পুরনো রেষারেষি ভুলে শান্তি চুক্তির অংশ হওয়ার আবেদন জানান। রিওর মতে, বর্তমানে নাগাল্যান্ডে যে বিরোধীশূন্য সর্বদলীয় সরকার চলছে তার ফলেই দ্রুত সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত পৌঁছনো সম্ভব হয়েছে। রাজ্যসভার সাংসদ খেকিহো জিমোমি বলেন, ‘‘এখন বাস্তবমুখী সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়। আগের মতো ভুল করা চলবে না।’’

আলোচনায় যোগ দেয়, নাগা হো হো, নাগা মাদার্স অ্যাসোসিয়েশন, অরুণাচল নাগা ছাত্র সংগঠন, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র কমিশনার টি এন মান্নেন, প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ইমকং ইমচেন, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কে এল চিসি, প্রাক্তন সাংসদ চিংওয়াং কন্যাক। সকলেই জানান, ৯ দফা চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার পর ১৬ দফা চুক্তির মাধ্যমে নাগাল্যান্ডের জন্ম হয়। এরপর হয় শিলং চুক্তি। কিন্তু, কোনও চুক্তিই নাগাল্যান্ডে স্থায়ী শান্তি আনতে পারেনি। এ বার সব দল ও সংগঠন এক জোট হলে তবেই চতুর্থ শান্তি চুক্তি নাগাল্যান্ডে রক্তপাত ও অশান্তি বন্ধ করতে পারে।

আগামী কাল রাজ্যের সব বিধায়কদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি নিয়ে বৈঠকে মিলিত হবে এনএসসিএন (আইএম) নেতৃত্ব।

expanded nagalim nagalim nagaland treaty disclosed nagaland treaty muivah issac chi su neifu rio nagaland pact
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy