কানাড়া ব্যাঙ্কের নেতৃত্বাধীন কনসর্টিয়ামের ৫৫ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা ঋণ প্রতারণার মামলায় এ বার পলাতক হিরে ব্যবসায়ী মেহুল চোকসীর বিরুদ্ধে নতুন করে জামিন-অযোগ্য পরোয়ানা জারি করল মুম্বইয়ের এক আদালত। সম্প্রতি মুম্বইয়ের এসপ্ল্যানেড ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বিচারক আরবি ঠাকুর এই পরোয়ানা জারি করেছেন। ২ জুন ওই মামলার পরবর্তী শুনানি। সে দিনই ওই পরোয়ানা সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হবে।
গত ২৫ এপ্রিল পলাতক হিরে ব্যবসায়ী মেহুলের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছে মুম্বইয়ের ওই আদালত। এই মামলাটি আগে মুম্বই সেশন কোর্টে বিচারাধীন ছিল, যেখানে চোকসীর জামিনের আবেদন করেছিল সিবিআইয়ের ব্যাঙ্ক নিরাপত্তা ও জালিয়াতি শাখা। তবে, আর্থিক দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ধারা প্রয়োগ করা হলেও কোনও সরকারি কর্মচারীর নাম মামলায় জড়িত না হওয়ায় আদালত মামলাটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্থানান্তরিত করে। গত ১৭ এপ্রিল এসপ্ল্যানেড ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পলাতক মেহুলের বিরুদ্ধে নতুন করে পরোয়ানা জারির আবেদন করে সরকারপক্ষ। মামলার শুনানিতে সংস্থার পক্ষে আইনজীবী সঞ্জয় রানা যুক্তি দেন যে, বর্তমানে বেলজিয়ামে আটক থাকা মেহুল ইচ্ছাকৃত ভাবে মামলা এড়িয়ে যাচ্ছেন। শেষমেশ দীর্ঘ শুনানির পর মেহুলের বিরুদ্ধে ‘স্থায়ী জামিন-অযোগ্য পরোয়ানা’ জারি করে আদালত।
আরও পড়ুন:
২০২২ সালের ১২ জুলাই মুম্বইয়ের কানাড়া ব্যাঙ্কের সার্কল অফিসের প্রধান জিএম পি সন্তোষের অভিযোগের ভিত্তিতে চোকসী, তাঁর সংস্থা এবং কয়েক জন সরকারি কর্মচারী-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ক্যানাড়া ব্যাঙ্ক এবং মহারাষ্ট্র ব্যাঙ্কের ৫৫.২৭ কোটি টাকার জালিয়াতির অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। অভিযোগ, সোনা ও হিরের গহনা তৈরির নাম করে মেহুলের সংস্থা বেজেল জুয়েলারি (ইন্ডিয়া) প্রাইভেট লিমিটেডকে যথাক্রমে ৩০ কোটি এবং ২৫ কোটি টাকার ঋণ প্রদান করেছিল কানাড়া এবং মহারাষ্ট্র ব্যাঙ্ক। কিন্তু অভিযোগ, এই ঋণের টাকা আদৌ সোনা বা হিরের গহনা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়নি, ঋণ শোধও করা হয়নি। ফলে ঋণদাতা কনসর্টিয়াম ব্যাঙ্কগুলির মোট ৫৫.২৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এ বার সেই মামলাতেই মেহুলের বিরুদ্ধে জারি হল পরোয়ানা।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে নাম জড়ায় চোকসীর। তার পর থেকেই ভারত-ছাড়া তিনি। চোকসী এবং তাঁর স্ত্রী ২০২৩ সাল থেকে বেলজিয়ামে বসবাস করছিলেন। ভারতের অনুরোধে গত ১২ এপ্রিল সেখান থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর গ্রেফতারির পর থেকে ভারত চাইছে চোকসীকে দেশে ফিরিয়ে আনতে। এ বিষয়ে বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।