ঠিক যেন উত্তরপ্রদেশের মেরঠকাণ্ড! প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে স্বামীকে খুনের পর ঘরের ভিতরেই মেঝে খুঁড়ে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্ত্রীর বিরুদ্ধে। শুধু তা-ই নয়, কেউ যাতে সন্দেহ করতে না পারেন, তার জন্য আবার নতুন করে মেঝেও তৈরি করা হয়। তবে এত কিছু করেও শেষরক্ষা হয়নি। ওই মহিলা এবং তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। এ বার ঘটনাস্থল মুম্বইয়ের নালাসোপারা এলাকা।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম বিজয় চহ্বণ (৩৫)। মুম্বইয়ের নালাসোপারারা গার্গাপাড়ায় স্ত্রী কোমলকে নিয়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন বিজয়। গত ১৫ দিন ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। প্রতিবেশীরা বিজয়কে দেখতে না পেয়ে কোমলকে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি তখন তাঁদের কাছে দাবি করেন, কর্মসূত্রে কিছু দিনের জন্য বাইরে গিয়েছেন তাঁর স্বামী। বিজয়ের সঙ্গে গত কয়েক দিন ধরে যোগাযোগ করতে পারছিল না তাঁর পরিবার। ফোনও বন্ধ পাচ্ছিল তারা। কিছু একটা ঘটেছে সন্দেহ করে বিজয়ের ভাড়াবাড়িতে যান তাঁর ভাইয়েরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার বিজয়ের ভাইয়েরা নালাসোপারার ওই ভাড়াবাড়িতে গিয়ে দেখেন সেটি তালা দেওয়া। তখন তাঁরা প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসা করেন। প্রতিবেশীরা জানান, বিজয়ের স্ত্রী কোমল তাঁদের জানিয়েছেন যে, বিজয় কর্মসূত্রে বাইরে গিয়েছেন কয়েক দিনের জন্য। তখন তাঁদের সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়। অন্য দিকে, কোমলেরও খোঁজ মিলছিল না। প্রতিবেশীরা জানান, গত দু’দিন ধরে বাড়িতে দেখা মেলেনি কোমলের। দু’দিন ধরে বেপাত্তা প্রতিবেশী যুবক মনুও। তাঁদের দাবি, মাঝেমধ্যেই বিজয়ের বাড়িতে আসাযাওয়া করতে দেখা গিয়েছিল মনুকে। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে এ কথা জানতে পেরে বিজয়ের পরিবারের সদস্যেরা কিছু একটা আঁচ করেন। প্রতিবেশীদের সাহায্যে বিজয়ের ঘরের তালা ভাঙেন তাঁর ভাইয়েরা। ঘরে ঢুকতেই একটি কটু গন্ধ নাকে যায় বলে জানিয়েছেন বিজয়ের এক ভাই। বিজয়দের ওই ঘরের মেঝেতে টাইলস বসানো ছিল। সব টাইলস একই রকম, কিন্তু ঘরের কোনা দিয়ে বেশ কয়েকটি টাইলস অন্য রঙের ছিল।
ঘরের কোনায় বিজয়ের একটি টিশার্ট পড়ে ছিল। বিজয়ের ভাইয়েরা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে মেঝে খোঁড়ার ব্যবস্থা করে। মেঝে খুঁড়তেই একটি গলাপচা দেহ বেরিয়ে আসে। দেহটিকে শনাক্ত করেন বিজয়ের ভাইয়েরা। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, কোমল এবং প্রতিবেশী যুবক মনুর মধ্যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। পুলিশের সন্দেহ, তাঁদের এই সম্পর্কের কথা জানতে পেরেছিলেন বিজয়। আর সে কারণেই তাঁকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কেউ যাতে টের না পান, তার জন্য বিজয়ের দেহ ঘরের মধ্যে পুঁতে রাখেন কোমল এবং তাঁর প্রেমিক। এমনই সন্দেহ করছে পুলিশ। এই দু’জনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।