Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

হরিয়ানায় গণধর্ষণ ও জোড়াখুন, কাঠগড়ায় গোরক্ষক

ফের কাঠগড়ায় গোরক্ষকরা। মারধর এবং খুনের পর এ বার গণধর্ষণের অভিযোগে। রবিবার এক মহিলা মানবাধিকার সংস্থার সাহায্যে সংবাদমাধ্যমের কাছে তেমনটাই দাবি করে বছর কুড়ির এক ধর্ষিতা মহিলা জানান, সপ্তাহ দুয়েক আগে হরিয়ানার মেওয়াতে ভর দুপুরে তাঁদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে চার যুবক।

সংবাদ সংস্থা
মেওয়াত শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০৫
Share: Save:

ফের কাঠগড়ায় গোরক্ষকরা। মারধর এবং খুনের পর এ বার গণধর্ষণের অভিযোগে।

রবিবার এক মহিলা মানবাধিকার সংস্থার সাহায্যে সংবাদমাধ্যমের কাছে তেমনটাই দাবি করে বছর কুড়ির এক ধর্ষিতা মহিলা জানান, সপ্তাহ দুয়েক আগে হরিয়ানার মেওয়াতে ভর দুপুরে তাঁদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে চার যুবক। কাকু-কাকিমার হাত পা বেঁধে দিয়ে তাঁদের সামনেই গণধর্ষণ করে ওই মহিলা ও তাঁর ১৪ বছরের বোনকে। প্রতিবাদ, অনুরোধ কিছুতেই কান দেয়নি হামলাকারীরা। পরে মেয়েদের চোখের সামনে পিটিয়ে খুন করে ওই প্রৌঢ় দম্পতিকে। নির্যাতিতার দাবি, সে দিন অভিযুক্তেরা বার বার নিজে থেকেই গোমাংস খাওয়ার প্রসঙ্গ তুলছিল। বলেছিল, তাদের কাছে খবর আছে ওই পরিবার নিয়মিতই গোমাংস খায়। আর সেই অপরাধেরই শাস্তি দিচ্ছে তারা। নির্যাতিতার দাবি, তিনি ও তাঁর বোন বার বার অনুরোধ করেন তাঁদের ছেড়ে দিতে। এ-ও বলেন, তাঁরা গোমাংস খান না। কিন্তু ওই চার জন কোনও কথাতেই কান দেয়নি বলে অভিযোগ তোলেন ওই মহিলা।

হরিয়ানায় সম্প্রতি একাধিক জুলুম নির্যাতনের ঘটনায় কাঠগড়ায় উঠেছে স্বঘোষিত গোরক্ষকেরা। গো-মাংস বোঝাই লরি আটকে তার চালককে পিটিয়ে খুন করা থেকে শুরু করে লরিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, এমনকী গরু পাচারকারী সন্দেহে মারধর, অত্যাচার করার অভিযোগ সামনে এসেছে এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। কিন্তু এর আগে কখনও গণধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে তাদের নাম জড়ায়নি। ফলে ওই ধর্ষিতা মহিলার এই সাক্ষাৎকার প্রকাশ পাওয়ার পরেই স্বাভাবিক ভাবে বিক্ষুব্ধ মেওয়াতবাসী।

তবে পুলিশ এর কোনওটাকেই সত্যি বলে গ্রহণ করছে না। পুলিশের দাবি, ওই মহিলা বা তাঁর বোন তাদের এ সব কিছুই জানাননি। শুধু তা-ই নয়, প্রাথমিক ভাবে তারা এ-ও দাবি করেছে যে ধৃতদের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্ষণ করা। গো-রক্ষকদের সঙ্গে যুক্ত থাকার কোনও প্রমাণ আপাতত পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছে পুলিশ। তবে এই পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলে ওই নির্যাতিতা জানান, ঘটনাটি প্রকাশ হওয়ার পর এলাকা থেকেই ওই চার জন গ্রেফতার হলেও প্রথমে তাদের বিরুদ্ধে শুধুই ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ। পরে এলাকাবাসীর প্রতিবাদ বিক্ষোভের মুখে পড়ে খুনের অভিযোগও দায়ের করা হয়।

উনা থেকে মেওয়াত, গরু রক্ষার নামে ওই স্বঘোষিত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একের পর এক যে নৃশংস ঘটনার অভিযোগ উঠছে, তা দেখে সরব হন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। গত মাসের শুরুতেই এক অনুষ্ঠানে তিনি এই সব ঘটনার তীব্র নিন্দা করে গোরক্ষকদের সমাজবিরোধী বলেন। এই বেআইনি কাজ রুখতে গো-রক্ষকদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারকে কড়া পদক্ষেপও করতে বলেছেন তিনি। মেওয়াতে যে ঘটনা ঘটেছে, তার বিচার চেয়ে এ দিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে চিঠি লিখে একই কথা জানিয়েছেন সিপিএমের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cow vigilantes Gangrape Murders
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE