Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
National News

গোল্ডেন বে রিসর্ট ঘিরে রহস্য, বিধায়করা নিখোঁজ কেন? প্রশ্ন হাইকোর্টের

দু’পক্ষই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের সুযোগ চেয়েছে রাজ্যপালের কাছে। বিধায়কদের সই করা সমর্থন পত্র জমা দিয়ে সরকার গড়ার সুযোগ চেয়েছেন শশিকলা। পনীরসেলভম কোনও সমর্থন পত্র রাজ্যপালকে দেখাতে পারেননি। কিন্তু পাঁচ দিন সময় পেলে গরিষ্ঠতার প্রমাণ দেবেন বলে রাজ্যপালকে তিনি জানিয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ১৫:৪২
Share: Save:

দু’পক্ষই সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের সুযোগ চেয়েছে রাজ্যপালের কাছে। বিধায়কদের সই করা সমর্থন পত্র জমা দিয়ে সরকার গড়ার সুযোগ চেয়েছেন শশিকলা। পনীরসেলভম কোনও সমর্থন পত্র রাজ্যপালকে দেখাতে পারেননি। কিন্তু পাঁচ দিন সময় পেলে গরিষ্ঠতার প্রমাণ দেবেন বলে রাজ্যপালকে তিনি জানিয়েছেন। শশিকলাকেই আগে সুযোগ দেওয়া হবে, রাজ্যপাল নাকি এমন আশ্বাসই দিয়েছেন। তবে শশিকলার পথের কাঁটা কিন্তু এতেই সরছে না। দু’দিন ধরে ১২০ জনের বেশি বিধায়ক নিখোঁজ কেন? পুলিশের কাছ থেকে সে বিষয়ে রিপোর্ট তলব করেছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। রাজ্যপালও একই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

১৩৪ জন বিধায়ক এআইএডিএমকে-র। শশিকলা প্রথমে দাবি করছিলেন ১৩১ জনের সমর্থনই তাঁর দিকে। কিন্তু চোরাস্রোত যে বইতে শুরু করেছে, তা বুঝতে তাঁর অসুবিধা হয়নি। তাই বুধবার ১২০ জনেরও বেশি বিধায়ককে বাসে চড়িয়ে বিভিন্ন হোটেলে ও রিসর্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দু’দিন ধরে তাঁদের কোনও দেখা মেলেনি। এই পরিস্থিতি নিয়েই শুক্রবার হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়়েছে পুলিশ। চেন্নাইয়ের পুলিশ কমিশনারকে তলব করে বিধায়ক বন্দির অভিযোগ সম্পর্কে রিপোর্ট চেয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। যে ভাবে বিধায়কদের বন্দি করে রাখা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে, তাতে চেন্নাই পুলিশের রিপোর্ট শশিকলা শিবিরের পক্ষে অস্বস্তিকর হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবারের বৈঠকে রাজ্যপালকে পনীরসেলভম জানিয়েছেন, শশিকলা অনেক বিধায়কের সই জাল করেছেন। এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছেন রাজ্যপাল। ছবি: পিটিআই।

বুধবার যখন বাসে চড়িয়ে বিধায়কদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন এসপি ষণ্মুগানাথন নামে এক বিধায়ক শৌচাগারে যাওয়ার জন্য মাঝপথে বাস থেকে নামেন। তিনি আর বাসে ফেরেননি। পরে তাঁকে পনীরসেলভমের বাড়িতে দেখা গিয়েছে। তিনি যে শশিকলার শিবির ছেড়ে পরীনরসেলভমের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন, তা নিয়ে আর কোনও সংশয় নেই। আর এক মহিলা বিধায়কের স্বামীও তাঁর স্ত্রীয়ের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। অর্থাৎ সেখানেও বিদ্রোহের সুর। অন্তত পাঁচ জন বিধায়ক শশিকলা শিবির ছেড়ে পনীরসেলভমের পাশে দাঁড়িয়েছেন বলে খবর। তাতে অবশ্য গরিষ্ঠতা প্রমাণে শশিকলার কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু পনীরসেলভম অন্য বিধায়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে কি না, তা নিয়ে শশিকলা নিশ্চিত নন। তাই রাজ্যপাল শশিকলাকে শপথ গ্রহণের আমন্ত্রণ জানানোর আগে পর্যন্ত ‘বন্দি’ বিধায়কদের বেরতে দেওয়া হবে না বলেই শোনা যাচ্ছে।

সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের সুযোগ আগে তিনিই পাবেন, শশিকলাকে নাকি এমনই আশ্বাস দিয়েছেন রাজ্যপাল। দাবি শশিকলা শিবিরের। ছবি: পিটিআই।

গোল্ডেন বে নামে একটি রিসর্টে ১০০-রও বেশি বিধায়ককে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ পনীরসেলভম শিবিরের। সেখানে দু’টি জ্যামার বসিয়ে ফোন পরিষেবাও স্তব্ধ করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে রামা জয়লিঙ্গম নামে এক বিধায়ক ওই রিসর্ট থেকেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কোনও বিধায়ককে আটকে রাখা হয়নি। সবাই স্বেচ্ছায় ওই রিসর্টে রয়েছেন।

আরও পড়ুন: মোদীকে ক্ষমা চাইতে হবে, ক্রমে সুর চড়াচ্ছে বিরোধীরা

ডাকেও সাড়া দেন না, লিখছেন কবিতা

এআইএডিএমকে-র কিছু নেতা এবং ভাড়া করা বাউন্সাররা সংবাদমাদ্যমকে রিসর্টে ঢুকতে দিচ্ছেন না বলে খবর। কাউকে রিসর্টে ঘরও ভাড়া নিতে দেওয়া হচ্ছে না। রাজ্যপাল সি বিদ্যাসাগর রাও পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। শুক্রবার সকালে তিনি মুখ্য সচিব গিরিজা বৈদ্যনাথন এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি টিজে রাজেন্দ্রনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ডিজি নিজে গোল্ডেন বে রিসর্টে যেতে পারেন পুলিশ সূত্রের খবর।

বৃহস্পতিবার পনীরসেলভম ও শশিকলা দু’জনেই রাজ্যপাল সি বিদ্যাসাগর রাওয়ের সঙ্গে দেখা করেন। পনীরসেলভমের সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক হয়েছিল ১৫ মিনিট। শশিকলা পরে রাজ্যপালের কাছে গিয়ে প্রায় দু’ঘণ্টা বৈঠক করেন। রাজ্যপাল শশিকলাকেই আগে সুযোগ দওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলে শশিকলা শিবিরের দাবি। তবে রাজ্যপাল কবে শশিকলাকে ডাকবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ফলে বিধায়কদের হোটেলে-রিসর্টে ঢুকিয়ে দেওয়ার কৌশলের শেষ রক্ষা হবে কি না, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE