ছবি: এএফপি।
নাগরিকত্ব আইন-বিরোধী সংগঠনগুলি আগেই সতর্ক করেছিল, ‘শহিদদের’ নিয়ে রাজনীতি চলবে না। তাই বিজেপি এবং আরএসএসের নিন্দা করার পাশাপাশি রাহুল গাঁধী আজ গুয়াহাটির সমাবেশে বারবার জানালেন, রাজনীতি নয়, বিপদে অসমবাসীর পাশে দাঁড়াতেই এসেছেন তিনি। খানাপাড়ার সমাবেশ থেকে রাহুল বলেন, “আগেই সতর্ক করেছিলাম, বিজেপি ক্ষমতায় এলে বিঘ্নিত হবে রাজ্যের শান্তি-সম্প্রীতি, আসবে বিভাজন, হিংসা। বলতে খারাপ লাগছে, আজ সেটাই হয়েছে।”
রাহুলের কথায়, ‘‘আমি অসমের থেকেই বিভিন্নতার মধ্যে ঐক্য, সকলকে নিয়ে একসঙ্গে চলার শিক্ষা পেয়েছি। সকলকে বলি, অসম চুক্তির পরে এক সময়ের হিংসা জর্জরিত এই রাজ্য শান্তি, মৈত্রী ও উন্নতির পথে চলেছে। কিন্তু বিজেপির হাত ধরে সেই অসমেই ফের হিংসা ও বিভাজনের রাজনীতি ফিরে এসেছে। তারা অসম চুক্তি নস্যাৎ করতে চাইছে।’’ সকলকে ফের এক হয়ে বিজেপির রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দেন রাহুল। তাঁর অভিযোগ, ‘‘যেখানেই বিজেপি, সেখানেই হিংসা। দেশের যুব প্রজন্ম গণতান্ত্রিক পথে প্রতিবাদ করছে। কিন্তু বিজেপি তাদের হত্যা করে কণ্ঠরোধ করতে চাইছে।” রাহুলের বক্তব্যের পাল্টা তাঁকে আক্রমণ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিররাজ সিংহ এ দিন রাঁচীতে বলেন, ‘‘সিএএ নিয়ে মিথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দেশকে ভাগ করতে চাইছে কংগ্রেস। রাহুল গাঁধী যদি অনুপ্রবেশকারীদের এতই ভালবাসেন, তবে তাঁদের নিয়ে ইটালি চলে যেতে পারেন।’’
‘অরাজনৈতিক ভাষণ’ বলা হলেও, রাহুলের কথায় ঘুরেফিরে এসেছে নোট-বাতিল থেকে জিএসটি, বেকারি থেকে জিডিপি। তিনি বলেন, বিজেপির আমলে ভারতের অর্থনীতি ধ্বংসের পথে। বেকারির জ্বালায় যুব প্রজন্ম দিক্ভ্রষ্ট। আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাহুল মনে করিয়ে দেন, হিংসার মাধ্যমে সমাধান আসবে না। সকলকে একজোট হয়ে, গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে অসমের ইতিহাস, সংস্কৃতি দমন করে নাগপুরের শাসন চাপানো চলবে না। তাঁর কথায়, ‘‘অসম কো নাগপুর আরএসএস কে চাড্ডিওয়ালে নেহি, জনতা চালায়েগি৷’’ রাহুল ফিরে যেতেই বিজেপি, আরএসএস সমালোচনায় সরব হয়ে উঠেছে তাঁর ওই মন্তব্য নিয়ে। প্রশ্ন তুলছে তার ভাষা, সংস্কৃতি নিয়েও৷
আরও পড়ুন: জন্মদিনে বিজেপিই চ্যালেঞ্জ কংগ্রেসের
গুয়াহাটিতে জনসভার পরে রাহুল হাতিগাঁও এলাকায় পুলিশের গুলিতে হত দশম শ্রেণির ছাত্র স্যাম স্ট্যাফর্ড ও গুলিতে মারা যাওয়া ছয়গাঁওয়ের তরুণ দীপাঞ্জলের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। পুলিশের গুলিতে নিহত পরিবারগুলির জন্য রাহুল গাঁধীর তরফে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন হরিশ রাওয়াত, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বরা। ছয়গাঁওতে দীপাঞ্জলের মায়ের হাতে এ দিনই ২ লক্ষ টাকা তুলে দেন তাঁরা।
রাহুলের পরে এ বার অসমে আসছেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি৷ আগামী ৩ জানুয়ারি তিনি গুয়াহাটিতে বক্তৃতা করবেন৷ আসছেন দলীয় কর্মসূচিতে। তবে সন্দেহ নেই, তাঁর বক্তৃতায় সিএএ এবং একে ঘিরে গড়ে ওঠা আন্দোলনেই বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy