নমস্কার করলে না কি দূরে থাকবে রোগ! ছবি শাটারস্টকের সৌজন্যে।
‘দিনে একটি করে আপেল ডাক্তার থেকে দূরে রাখে।’ এই কথাটি সারা বিশ্বেই বহুল প্রচলিত। কিন্তু করজোড়ে ‘নমস্তে’ বা নমস্কারও নাকি সমস্ত রোগ থেকে মানুষকে দূরে রাখে! এ কথা শুনেছেন কখনও? মধ্যপ্রদেশের ভোপালের অনুষ্ঠিত একটি বিজ্ঞান সম্মেলনে সম্প্রতি এরকমই উদ্ভট দাবি করলেন এক গবেষক। কোনও বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রমাণ ছাড়া এই ধরনের ‘বক্তব্য’ বিজ্ঞান সম্মেলনে পেশ হওয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা।
ভোপালের রিজিওনাল ইনস্টিটিউট এডুকেশন বা ‘আরআইই’ তে বসেছিল ‘ইমার্জিং ট্রেন্ডস্ অ্যান্ড ইনোভেশন ইন স্কুল সায়েন্সেস’ শীর্ষক বিজ্ঞান সম্মেলনের আসর। সেখানেই রোগ দূরে রাখতে ‘নমস্তে’র উপযোগিতার কথা বলা হয়েছে।সেখানে বলা হয়েছে নমস্কার করলে দূরে থাকে ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়া! শুধু তাই নয়। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সিঁদুরের ভূমিকা ও তুলসী গাছের ‘কুলিং এফেক্ট’-এর কথাও বলা হয়েছে সেখানে।
বুধবার এই সম্মেলনে ‘এন্সিয়েন্ট সায়ন্টিফিক নলেজ ইন রিসেন্ট পারস্পেকটিভ’ সেশনে এই অবান্তর দাবিগুলি করাহয়েছে। এই সকল বক্তব্য পরিবেশিত হওয়ার পরই প্রতিবাদ জানিয়েছেন সম্মেলনে উপস্থিত বিজ্ঞানীরা।
কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর সৌমিত্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আরআইই প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল এন প্রধানকে ইমেল করেছি। তাঁকে জানিয়েছি বৈজ্ঞানিক ভিত্তিহীন এই সমস্ত পেপারকে সম্মেলনে অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।’’ হোমি ভাবা সেন্টার ফর সায়েন্স এডুকেশন (মুম্বই)-এর গবেষক ড. অঙ্কিত সুলেও এই ধরনের পেপারকে ‘সিউডো-সায়েন্স’ বা বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞান বলেও অভিহিত করেছেন।
ড. অঙ্কিত সুলের সহকর্মী ড. রোহিণী করণদিকর জানিয়েছেন, ‘‘তুলসীর শীতল প্রভাব বা সিঁদুরের সাহায্যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোনও বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা দিতে পারেননি ওই গবেষক।’’
কেন এই ধরনের পেপার সম্মেলনে প্রকাশের সুযোগ পায়, সে প্রশ্নের উত্তরে ভোপালের এই প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল এন প্রধান কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘‘আমি বিজ্ঞানী নয়। তাই সম্মেলনে টেকনিকাল পেপারের ব্যাপারে আমি জানি না।’’ বিশেষজ্ঞের একটি দল এই পেপার নির্বাচন করে বলেও নিজের দায় এড়াতে চেয়েছেন তিনি।
এ বছর জানুয়ারি মাসে ইন্ডিয়ান সায়েন্স কংগ্রেসে অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দাবি করেছিলেন, ‘হাজার বছর আগেও ভারতে স্টেম সেল রিসার্চ ও টেস্ট টিউব বেবির প্রযুক্তি ছিল।’
আরও পড়ুন: কৌরবরা টেস্ট টিউব বেবি, রাবণের ছিল বিমান! এ বার দাবি অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy