Advertisement
০২ এপ্রিল ২০২৩

চিন নিয়ে রণকৌশল বদল করলেন মোদী

চিন-বিরোধিতার প্রশ্নে অবস্থান পরিবর্তন করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সার্বিক ভাবে চিনের মহাযোগাযোগ প্রকল্প ‘ওবর’-এর সমালোচনা ও বিরোধিতা করা হবে না। শুধু প্রস্তাবিত চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (যা ওবর-এরই অন্তর্গত) প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্বর চড়ানো হবে। 

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০৪:০৫
Share: Save:

চিন-বিরোধিতার প্রশ্নে অবস্থান পরিবর্তন করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সার্বিক ভাবে চিনের মহাযোগাযোগ প্রকল্প ‘ওবর’-এর সমালোচনা ও বিরোধিতা করা হবে না। শুধু প্রস্তাবিত চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (যা ওবর-এরই অন্তর্গত) প্রকল্পের বিরুদ্ধে স্বর চড়ানো হবে।

Advertisement

কূটনীতিকদের মতে, ডোকলাম পরবর্তী পর্বে ভারত যে বেজিং সম্পর্কে নরম মনোভাব নিতে বাধ্য হচ্ছে, এই সিদ্ধান্ত তারই ইঙ্গিতবাহী। সাউথ ব্লকের ঘোষিত সিদ্ধান্ত, চিনের সঙ্গে সম্পর্কের তার নতুন করে বাঁধতে হবে। মতবিরোধ সরিয়ে রেখে সীমান্ত, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। চিনের সঙ্গে যুদ্ধং দেহি মনোভাব নিলে তার পরিণতি কী হয়, সেটা ডোকলাম পর্বে টের পেয়েছে সাউথ ব্লক। পাকিস্তান-সহ প্রায় সমস্ত প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের যখন ক্রমাবনতি ঘটছে, তখন আমেরিকার বলে বলীয়ান হয়ে বেজিং-এর সঙ্গে তিক্ততা বাড়ানো বুদ্ধিমানের কাজ নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। আর তাই একের পর এক ভারতীয় শীর্ষ কর্তা এবং মন্ত্রীকে পাঠানো হচ্ছে বেজিং-এ। জুন মাসে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে সে দেশে যাচ্ছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। সেখানে চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করে নতুন পথচলা শুরু করতে চাইছেন মোদী। চিনের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘর্ষের ক্ষেত্রগুলিকে লঘু করার চেষ্টাও শুরু হয়েছে। সেই লক্ষ্যে সম্প্রতি ভারত বেজিং-কে জানিয়েছে যে, অশান্ত মলদ্বীপে তারা নাক গলাতে চায় না।

কূটনৈতিক সূত্রের মতে, দিল্লির লক্ষ্য, ভারত-চিন দ্বন্দ্বের কারণে ইসলামাবাদ যেন বেজিং-এর কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা না পায়। তাতে বিপদ দ্বিগুণ হবে। এমনিতেই গত একবছরে বাড়তি ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়েছে চিন-পাকিস্তানের মধ্যে। এত দিন ধরে ভারত ওবর প্রসঙ্গে বলে এসেছে, বিভিন্ন মহাদেশগুলির মধ্যে বাণিজ্যিক যোগাযোগের ভিত হওয়া উচিত স্বীকৃত আন্তর্জাতিক আইন, সুশাসন, স্বচ্ছতা, এবং সাম্য। ওবর প্রকল্পে চিন এর কোনওটাই মানেনি। পরিবেশহানির অভিযোগও রয়েছে। সূত্রের খবর, এই সব সমালোচনা বন্ধ করা হবে। ইতিমধ্যেই এশিয়ার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে (এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক-এর অধীনে) চিনের সঙ্গে সহযোগিতা শুরু করেছে ভারত। সূত্রের বক্তব্য, দিবারাত্র ওবরকে নিন্দা করলে শুধু চিন নয়, এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আরও অন্তত ৫০টি দেশেরও গায়ে লাগবে। একটি বৃহৎ আন্তর্জাতিক মঞ্চের বিরাগভাজন হওয়া কাজের কথা নয় বলেই মনে করছে কেন্দ্র।

তবে চিন-পাকিস্তান করিডর নিয়ে চিনের সঙ্গে আসন্ন বৈঠকগুলিতে সরব হবে ভারত। বলা হবে, এই করিডর ভারতের অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিপদজনক। কারণ, পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের উপর দিয়ে যাবে এই অর্থনৈতিক করিডর।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE
Popup Close
Something isn't right! Please refresh.