Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
National News

নিশানা অর্থ কমিশন, মমতা দক্ষিণের পাশে

অর্থ কমিশনের এই নতুন সূত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে কেরল সরকারের উদ্যোগে গত মাসে একটি বৈঠক হয়। কর্নাটক-অন্ধ্র-পুদুচেরি তাতে সামিল হলেও যোগ দেয়নি তেলঙ্গানা ও তামিলনাড়ু। কিন্তু সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে একই কারণে প্রতিবাদ জানানোয় কেন্দ্র আরও সমস্যায় পড়েছে।

মমতা বন্দোপাধ্যায়

মমতা বন্দোপাধ্যায়

জয়ন্ত ঘোষাল
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ০৪:২৩
Share: Save:

দক্ষিণ ভারতের চার অর্থমন্ত্রীর কেন্দ্র-বিরোধী বৈঠকে মমতা বন্দোপাধ্যায়ও সামিল হয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন নরেন্দ্র মোদী।

কী নিয়ে বিরোধিতা? পঞ্চদশ অর্থ কমিশন জানিয়েছে, রাজ্যগুলির মধ্যে আর্থিক অনুদান বণ্টন করা হবে ১৯৭১-এর বদলে ২০১১ সালের জনসুমারি রিপোর্টের ভিত্তিতে। এর ফলে যা দাঁড়াচ্ছে, তাতে যে সব রাজ্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে বেশি সফল হয়েছে তারা পাবে কম অর্থ। আবার বিহার, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান উত্তরপ্রদেশের মতো ‘বিমারু’ রাজ্য, যারা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে পিছিয়ে, তারা তুলনায় বেশি অর্থ পাবে। সাধারণ ভাবে, হিন্দি বলয়ের এই রাজ্যগুলিতে ক্ষমতায় আছে বিজেপি। এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই বিরোধ ঘনিয়েছে।

অর্থ কমিশনের এই নতুন সূত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে কেরল সরকারের উদ্যোগে গত মাসে একটি বৈঠক হয়। কর্নাটক-অন্ধ্র-পুদুচেরি তাতে সামিল হলেও যোগ দেয়নি তেলঙ্গানা ও তামিলনাড়ু। কিন্তু সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে একই কারণে প্রতিবাদ জানানোয় কেন্দ্র আরও সমস্যায় পড়েছে। পাশাপাশি পঞ্জাব এবং ওডিশাও বিরোধিতায় যোগ দেওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। কাল, সোমবার অমরাবতীতে বসছে প্রতিবাদী অর্থমন্ত্রীদের পরের বৈঠক। এই আয়োজনের পিছনে বড় ভূমিকা নিচ্ছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু। পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রেরও তাতে থাকার কথা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এখন বিক্ষুব্ধ অর্থমন্ত্রীদের বোঝাচ্ছেন, অর্থ কমিশনের নতুন নিয়মে কোনও রাজ্যই বঞ্চিত হবে না। কমিশনের চেয়ারম্যান এন কে সিংহের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। ঠিক হয়েছে, ২০১১ এবং ১৯৭১ দু’টি জনসুমারি রিপোর্টই বিচার করে দেখা হবে। যে রাজ্যগুলিতে জনসংখ্যা তুলনায় বেশি, তারা জনসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন অনুসারে অতিরিক্ত অর্থ পাবে। আবার যারা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করেছে, তারাও সেই কৃতিত্বের জন্য অতিরিক্ত অর্থ পাবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, আসলে জেটলি এই ভাবে চাপের মুখে অর্থ কমিশনের আলোচ্য বিষয়সূচি বা ‘টার্মস অব রেফারেন্স’ই বদলে দিলেন। যদিও তা প্রকাশ্যে স্বীকার করলেন না, বলা হল এটা ব্যাখ্যা (ক্ল্যারিফিকেশন)। আজ অরুণ নিজে অবশ্য দাবি করেন, টার্মস অব রেফারেন্স সংক্রান্ত বিতর্কটা অর্থহীন।

প্রসঙ্গত গত কাল জিএসটি পর্ষদের বৈঠকে অরুণ পৌরোহিত্য করেন, তবে বৈঠক হয় ভিডিয়ো কনফারেন্স করে। অমিত মিত্র দিল্লিতে ছিলেন, অরুণের সঙ্গে তাঁরও ভিডিয়ো কনফারেন্সেই কথা হয়। অরুণ অর্থ বণ্টনের ব্যাপারে তাঁদের যুক্তি অমিতকে বুঝিয়ে বলেন।

তবে এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, কাল অমরাবতীর বৈঠকে অমিত যাবেন। এর আগে চতুর্দশ অর্থ কমিশন রাজ্যকে নানা ভাবে বঞ্চিত করেছে এবং এ বারও করতে চলেছে— এই অভিযোগ থেকে মমতা সরতে চাইছেন না। গত কাল অমিতবাবু বলেছেন, তিনি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন।

এই পরিপ্রেক্ষিতে এন কে সিংহ ফোন করে অমিতের সঙ্গে কথা বলেছেন। অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান কলকাতা যাচ্ছেন মমতার সঙ্গে বৈঠক করতে। মে মাসের শেষে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE